পুলিশ হেফাজতে জনি হত্যা মামলায় বাদীপক্ষের যুক্তি শেষ

প্রকাশ | ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ১৬:৩১

আদালত প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

পুলিশ হেফাজতে জনি নামে এক যুবককে হত্যার আলোচিত মামলায় বাদীপক্ষ যুক্তি উপস্থাপনে আসামি এসআই জাহিদুর রহমান জাহিদসহ পাঁচজনের সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করেছে।

বুধবার ঢাকা মহানগর দায়রা জজ কে এম ইমরুল কায়েশের আদালতে বাদীপক্ষে অ্যাডভোকেট মশিউর রহমান এবং আবু তৈয়ব শুনানিতে এই দাবি করেন।

বাদীপক্ষের শুনানির পর এদিন আসামিপক্ষে আইনজীবী ফারুক আহমেদ যুক্তি উপস্থাপন শুরু করেন। তিনি আংশিক যুক্তিতর্ক শুনানির পর বিচারক বৃহস্পতিবার আসামিপক্ষের অবশিষ্ট যুক্তি উপস্থাপনের দিন ঠিক করেন।

এর আগে এই মামলায় ২১ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করে আদালত। এরপর গত ৯ ফেব্রুয়ারি আত্মপক্ষ শুনানিতে এসআই জাহিদসহ আসামিরা নির্দোষ দাবি করেন।

মামলার অপর আসামিরা হলেন, পল্লবী থানার এসআই রাশেদুল ইসলাম ও এসআই কামরুজ্জামান মিন্টু এবং পুলিশের সোর্স রাশেদ ও সুমন। আসামিদের মধ্যে এসআই জাহিদ ও সুমন কারাগারে এবং অপর আসামিরা জামিনে আছেন।

মামলাটিতে ২০১৬ সালের ১৭ এপ্রিল আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জগঠন করেছে আদালত। পরে হাইকোর্টে আসামিদের আবেদনে দীর্ঘদিন মামলাটি বিচার বন্ধ ছিল।

পুলিশ হেফাজতে নির্যাতন করে মারার অভিযোগে ২০১৪ সালের ৭ আগস্ট নিহতের ভাই ইমতিয়াজ হোসেন রকি এই মামলা দায়ের করেন।

মামলার অভিযোগে বলা, ২০১৪ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি দিবাগত রাতে পল¬বী থানার ইরানি ক্যাম্পে জনৈক বিল্লালের গায়ে হলুদের অনুষ্ঠান ছিল। নিহত জনি, তার ভাই মামলার বাদী রকিসহ অন্যান্য সাক্ষীরা সে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। রাত ২টার দিকে পুলিশের সোর্স এ মামলার ৭ নম্বর আসামি সুমন মদ খেয়ে স্টেজে উঠে মেয়েদের উত্ত্যক্ত করছিলেন। জনি তাকে প্রথমে স্টেজ থেকে নামিয়ে দেন। কিন্তু দ্বিতীয়বার সুমন একই কাজ করলে সুমনের সঙ্গে তার কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে জনি সুমনকে থাপ্পড় দিলে তিনি আধা ঘণ্টা পর এসআই জাহিদসহ ২৫/২৬ জন পুলিশ নিয়ে বিয়ে বাড়িতে এসে ভাঙচুর করে নিহত জনি, রকিসহ বেশ কয়েকজনকে ধরে নিয়ে যান। এরপর এসআই জাহিদসহ অপর আসামিরা তাদের পল¬বী থানাহাজতে হকিস্টিক ও ক্রিকেটের স্ট্যাম্প দিয়ে বেদম প্রহার করেন। জাহিদ জনির বুকের ওপর চড়ে লাফালাফি করেন। জনি এ সময় একটু পানি খেতে চাইলে জাহিদ তার মুখে থুথু ছুড়ে মারে। নির্যাতনে মামলার বাদী রকি জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। তার বড় ভাই জনিকে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় ঢাকা ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরহ ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

পুলিশি নির্যাতনে মৃত্যুর ঘটনা ধামাচাপা দিতে ইরানি ক্যাম্প ও রহমত ক্যাম্পের মধ্যে মারামারির মিথ্যা কাহিনি দেখিয়ে জনি নিহত হয় বলে দেখানো হয়।

প্রসঙ্গত, ঝুট ব্যবসায়ী সুজনকে পুলিশ হেফাজতে একইভাবে মৃত্যুর ঘটনার আরেক মামলায়ও আসামি এসআই জাহিদুর রহমান জাহিদ।

(ঢাকাটাইমস/১৯ফেব্রুয়ারি/আরজেড/জেবি)