সালথায় আ.লীগের দুই পক্ষে সংঘর্ষ, আহত ১০

প্রকাশ | ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ২১:৪৯

ফরিদপুর প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস

ফরিদপুরের সালথায় একটি গ্রামে আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের  সমর্থকদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষে ১০ জন আহত হয়েছেন। বুধবার সকাল ৬টা থেকে সাড়ে ৯টা পর্যন্ত উপজেলার ভাওয়াল ইউনিয়নের ইউসুফদিয়া গ্রামের বিভিন্ন ফসলি ক্ষেতে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। পরে সালথা থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

ফসলি জমিতে সাড়ে তিন ঘণ্টাব্যাপী এ ধাওয়া ও পাল্টা ধাওয়ার কারণে বেশ কয়েক একর জমিতে রোপন করা পেয়াজের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।

প্রসঙ্গত, ২০১৪ সালের উপজেলা নির্বাচনে বিএনপির সমর্থন নিয়ে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন ওয়াহিদুজ্জামান। পরবর্তীতে ২০১৬ সালে তিনি আওয়ামী লীগে যোগ দেন। তিনি আওয়ামী লীগের একটি অংশকে নেতৃত্ব দেন। অন্যদিকে মো. এনায়েতের শ্বশুর ভাওয়াল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ওহাব মাতুব্বর। এলাকায় ওহাব মাতুব্বরের দলকে নিয়ন্ত্রণ করেন এনায়েত।

এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, স্থানীয় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ইউসুফদিয়া গ্রামের বাসিন্দা উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মো. ওহিদুজ্জামানের সঙ্গে মো. এনায়েতের সমর্থকদের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল।

এ বিরোধের সূত্র ধরে গত মঙ্গলবার রাত ৮টার দিকে এনায়েত সমর্থক মো. নুর আলম ও মো. লিটনের সঙ্গে উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ওহিদুজ্জামানের চাচাতো ভাই শাহিন মোল্লার ইউসুফদিয়া বাজারে কথা কাটাকাটি ও হাতাহাতি হয়। এ হাতাহাতির খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে দুই দলের সমর্থকদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। রাতেই দুই পক্ষ বিভিন্ন ধরনের দেশীয় অস্ত্র নিয়ে মহড়া দেয়া শুরু করে। পরে খবর পেয়ে পুলিশ এসে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। ফলে গত মঙ্গলবার রাতে কোনো সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেনি।

তবে ওই উত্তেজনার জের ধরে বুধবার সকাল ৬টার দিকে উভয় পক্ষ দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র, ঢাল, সরকি, রামদা, ছেনদা, ইট, পাটকেল ইত্যাদি নিয়ে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টাব্যাপী এই সংঘর্ষে দুই পক্ষের কমপক্ষে ১০ জন আহত হন। আহতদের ফরিদপুর মেডিকেল কলেজসহ বিভিন্ন  হাসপাতাল ও ক্লিনিকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

এ ব্যাপারে মো. এনায়েত হোসেন বলেন, ইউসুফদিয়া গ্রামের মো. বিলায়েত টুকু আমার দলে মিশায় তাকে ইউসুফদিয়া বাজারে ওহিদ চেয়ারম্যানের চাচতো ভাই শাহিন মোল্লা কটূক্তি করে কথা বললে, প্রতিবাদ করেন তারই ছেলে লিটন। এর প্রতিবাদ করাতে ওহিদুজ্জামানের সমর্থকরা আমার সমর্থকদের উপর হামলা চালালে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

 

এ বক্তব্য নাকচ করে দিয়ে সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ওহিদুজ্জামান বলেন, বিএনপির ও জামায়াতের ঘরোয়া লোক এনায়েত ও তার ভাই হেমায়েত হোসেন এখন আওয়ামী লীগের ছত্রছায়ায় এলাকায় ত্রাস সৃষ্টি করছে। তাদের লোকজন সবসময়ই উগ্র। আমার লোকদের দেখলেই বিভিন্ন আজেবাজে কথা বলেন। মঙ্গলবার ইউসুফদিয়া বাজারে আমার চাচাতো ভাই শাহিন বসা ছিল হঠাৎ এনায়েতের লোকজন শাহিনের ওপর হামলা করে। খবর পেয়ে আমার লোকজন জমায়েত হয়।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে সালথা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এলাকা এখন শান্ত রয়েছে, ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। তিনি বলেন, এ সংঘর্ষের ঘটনায় বুধবার বিকাল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত কোনো পক্ষ থানায় অভিযোগ করেনি।

(ঢাকাটাইমস/১৯ফেব্রুয়ারি/কেএম/এলএ)