স্কুল দাবা প্রতিযোগিতার স্পন্সর আবুল খায়ের গ্রুপ
দেশের দাবার জন্য আজ ঐতিহাসিক দিন: র্যাব ডিজি
স্কুলের শিক্ষার্থীদের মধ্যে দাবা খেলার ব্যবস্থা করে দিতে পারলে তারা অনেক খারাপ কাজ থেকে সরে আসবে বলে মনে করেন র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটেলিয়ন র্যাবের মহাপরিচালক ও বাংলাদেশ দাবা ফেডারেশনের সভাপতি বেনজীর আহমেদ।
বৃহস্পতিবার দুপুরে কারওয়ান বাজার র্যাব মিডিয়া সেন্টারে ‘বাংলাদেশ স্কুল দাবা টুর্নামেন্টের’ স্পন্সর আবুল খায়ের গ্রুপের সঙ্গে সমঝোতা স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
বেনজীর আহমেদ বলেন, ‘বাংলাদেশের দাবার জন্য আজকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও ঐতিহাসিকক্ষণ। আমরা বহুদিন ধরে চেষ্টা করছিলাম স্কুল দাবাকে প্রোমোট করার। স্কুল থেকে যদি দাবাড়ু তৈরি করা যায় তাহলে, দ্রুতই আমরা বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে দাবার পড়াশক্তি হতে পারব।’
স্কুলগুলো দাবার ক্ষেত্র তৈরির গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে জানিয়ে বেনজীর আহমেদ বলেন, ‘আমাদের স্কুল পর্যায়ে দাবার প্রতিযোগিতা করা দরকার। যা আমরা কয়েকবছর ধরে চেষ্টা করছিলাম। বর্তমানে তা করতে সক্ষম হচ্ছি।’
বাংলাদেশ দাবা ফেডারেশনের সভাপতি বেনজীর আহমেদ বলেন, ‘আমরা যখন খেলায় ভালো করি মুহুর্তের মধ্যে কোটি কোটি মানুষ জেনে যায়। আমাদের দেশের যেসব জনপ্রিয় খেলা তাদের পেছনে ‘স্পন্সররা’ দৌড়ায়। তাই দাবার মতো খেলায় কেউ স্পন্সর হতে চায় না। যদি আমরা তিন থেকে পাঁচবছর দাবাকে সাপোর্ট এবং স্পন্সর করতে পারি তাহলে বহুদুর যেতে পারব। এই বছরগুলো দাবার পেছনে সময় দিলে দশবছরের মধ্যে বিশ্বে আমাদের গ্রান্ডমাস্টাররা অবস্থান তৈরি করতে পারবে।’
গত বছরের ২৯ নভেম্বর দক্ষিণ এশীয় দাবা কাউন্সিলের প্রথম নির্বাচনে সভাপতি নির্বাচিত হন র্যাবের মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ। সার্ক অঞ্চলের এই আট দেশের দাবা কাউন্সিলরদের সর্বসম্মত ভোটে তিনি সভাপতি নির্বাচিত হন। এর পর থেকেই দাবার প্রসার ঘটাতে কাজ করছেন তিনি।
বেনজীর আহমেদ বলেন, ‘আমি আশ্চর্য হয়েছি দেশে দাবার অবস্থান তৈরি করতে আবুল খায়ের গ্রুপ নিজেরাই আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। এ জন্য কোম্পানির চেয়ারম্যানসহ সকলকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। আমরা দীর্ঘদিন ধরে আপনাদের সঙ্গে নিয়ে কাজ করতে চাই। আপনাদের হাত ধরে শতশত দাবাড়ু তৈরি করব। আপনারা যে সুদূর প্রসারী পরিকল্পনা করেছেন এর ফলাফল দেশবাসী পাবে। আমরা যদি কচি ছেলে-মেয়েদের খেলাধুলার ব্যবস্থা করে দিতে পারি তাহলে তারা অনেক খারাপ কাজ থেকে সরে আসবে।’
দাবায় খরচ কম ও চর্চার জন্য তেমন জায়গারও প্রয়োজন হয় না জানিয়ে র্যাব প্রধান বলেন, ‘ফুটবলের একটা বুট কিনতেই প্রচুর টাকা লাগে। সেই বুটের টাকা দিয়ে সম্ভবত বিশটা দাবার কোর্ট কেনা যায়। এই বিশটা বোর্ড দিয়ে আমরা চল্লিশজনকে খেলাধুলায় জড়িত করতে পারব। দাবার চর্চার জন্য কোনো ধরনের আবহাওয়ার দরকার হয় না। স্কুলের বারান্দায় বসে কিংবা বাসায় বসেও খেলতে পারবে। দাবার মাধ্যমে আমাদের জাতিকে আবারো বিশ্বের দরবারে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার সুযোগ হবে।’
‘দাবা চিন্তা শক্তির প্রসার ঘটায়; সেই সঙ্গে ক্রিটিক্যাল থিঙ্কিং, সাহস ও সক্ষমতা বাড়ায়। আমরা যদি দশ-বারো বছরের বাচ্চার মধ্যে ক্রিটিক্যাল থিঙ্কিংয়ের ক্ষমতা বলিষ্ঠ করতে পারি, তাহলে সে যখন সমাজের সিদ্ধান্ত দাতা হবে অবশ্যই ভালো কিছু করবে।’
অনুষ্ঠান শেষে উভয় পক্ষের মধ্যে সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। আগামী মার্চ অথবা এপ্রিল থেকে দেশের প্রতিটি স্কুলে দাবা প্রযোগিতার আয়োজন করবে দাবা ফেডারেশন।
ঢাকাটাইমস/২০ ফেব্রুয়ারি/এসএস/ইএস