মেলায় এল কমল কর্নেলের দুই উপন্যাস
শীতের সকাল। খুব একটা শীত ছিল না এই শহরে। কেউ ভাবেওনি এবছরটা এমন হবে। শীত ছাড়াই হয়তো কেটে যাবে বছরটা। কিন্তু হঠাৎ যেনো পালটে যায় সবকিছু। আবহাওয়াও বিদ্রুপ করতে শুরু করে, রূপ পালটাতে থাকে। ঘন কুয়াশায় চারিদিকে ঘুটঘুটে অন্ধকার। আশপাশের কিছু দেখা যায় না। রাস্তার নিয়ন আলোয় সোডিয়াম লাইটগুলো তখনো জ্বলজ্বল করছে। খেটে-খাওয়া মানুষজনদের ভিড়ে লোকারণ্য রাজপথ। শীতে জবুথবু হয়ে সবাই কর্মক্ষেত্রে যাচ্ছে। গাড়ির হেড লাইটগুলো তখনো জ্বালানো অবস্থায়। সূর্যের উঁকিবুকি মারার বিন্দুমাত্র ইচ্ছাটা নেই তা দেখেই বোঝা যাচ্ছে।
তিতলি খুব সকালেই বেরিয়েছে। আজ যে পরীক্ষা ছিল। অপেক্ষায় ছিল একটু সূর্যের প্রত্যাশায়। কাঁপতে কাঁপতে পরীক্ষার হলে ঢুকেছে। আজ সকালবেলা কাজের মেয়েটা এক বালতি গরম পানি করে দেয়। তাই দিয়ে কোনোমতে গোসল সেরে রেডি হয়েছে। শীতকালে গোসল করাটাও এক ধরনের পরীক্ষা বটে। সচরাচর যে কেউ এই পরীক্ষায় পাস করতে পারে না! যদিওবা সকালের গোসলটা তিতলির অভ্যাস। এরপরেও শীত আসলে যেন একটু বিরক্তবোধ করে। এমন হাড়কাঁপানো শীতে সকালে গোসল করে পরীক্ষা দেওয়া রীতিমতো যুদ্ধই বলা যায়। তিতলি সেই কাজটাই করেছে।
তাড়াহুড়ো পরীক্ষা শেষ করে বের হয়ে পড়ে। আর তখনই অর্ক এসে বায়না ধরে- 'আজ খাওয়াতে হবে। চল সবাই মিলে আজ মজা করি। দূরে কোথাও গিয়ে আড্ডা মারি।'
তিতলি দ্বিমত করে করে। অর্কও নাছোড়বান্দা। তাকে যেতেই হবে। তিতলির মনটা যে পড়ে আছে অন্য কোথাও। অর্ক তিতলির ক্লাশ-ফ্রেন্ড হলেও তিতলিকে ভালোবাসতে চায়। ভালোবাসার কথা বলে, স্বপ্ন দেখায়। তবে তিতলি খুব একটা পাত্তা দেয় না। অর্ক বোঝানোর চেষ্টা করে। তিতলি খুব একটা গুরুত্ব দেয় না। জানান দেয় তার পক্ষে সম্ভব না। তার অন্য আর একটা কাজ আছে। অর্ক টিপ্পনি কাটে।
মাঝখানে অর্ক খুব একটা বাজে কাজ করে বসে। তিতলি কোনো এক সময়ে তার বান্ধবীদের সাথে নিয়ে সমুদ্রভ্রমণে যায়। তার পরের দিনেই অর্ক সেখানে গিয়ে হাজির। নাদিমের সাথে সম্পর্কটা তখনো এতো গভীরে ছিল না। যতটা না এখনো আছে। তিতলি অবাক হয়।
প্রতিশ্রুতিশীল তরুণ লেখক কমল কর্নেলের 'স্বপ্নের মায়াজাল' উপন্যাসে এভাবেই উঠে এসেছে মানুষের জীবনের নানা রঙ, ভালোবাসা, বেঁচে থাকার গল্প।
কমল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রাবস্থায় সাহিত্যে জড়ান। এরইমধ্যে তার ১২টি উপন্যাস প্রকাশিত হয়েছে। পাঠকমহলে সমাদৃত হওয়ার পাশাপাশি বোদ্ধামহলেও আলোচনা আছে তার সাহিত্যসৃজন নিয়ে।
লেখালেখির ধারাবাহিকতায় এবারের বইমেলায় প্রকাশ হয়েছে তার 'স্বপ্ন ছোঁয়া ভালোবাসা' ও 'স্বপ্নের মায়াজাল' নামের দুই উপন্যাস। বই দুটি মেলায় এনেছে ভাষাচিত্র প্রকাশন। দুটি বইয়েরই প্রচ্ছদ করেছেন খোন্দকার সোহেল। উপন্যাস দুটি বইমেলায় ভাষাচিত্রের ১৬৭/১৬৮/১৬৯/১৭০ নম্বর স্টলে পাওয়া যাচ্ছে।
ঢাকাটাইমস/২১ফেব্রুয়ারি/ডিএম