নিউইয়র্কে জাতিসংঘ দপ্তরের সামনে ভাষাশহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা

ইউরোপ ব্যুরো
ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ১২:২৫ | প্রকাশিত : ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ১২:১৫

বাংলাদেশের একুশের প্রথম প্রহরের সঙ্গে মিল রেখে নিউইয়র্ক সময় বৃহস্পতিবার দুপুর ১টা ১ মিনিটে জাতিসংঘ সদর দপ্তরের সামনে স্থাপিত অস্থায়ী শহীদ মিনারে বায়ান্নোর ভাষাশহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা। শহীদ বেদীতে ফুল দিয়ে নিউইয়র্কের বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনীতিক সংগঠনের প্রতিনিধিরা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন। মহান একুশে ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপন উপলক্ষে মুক্তধারা ফাউন্ডেশন ও বাঙালির চেতনা মঞ্চের উদ্যোগে যথাযোগ্য মর্যাদায় দিবসটি উদযাপিত হয়।

এদিন বৈরী আবহাওয়াকে উপেক্ষা করে বিপুল সংখ্যক প্রবাসী শহীদদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জানান। এর মধ্য দিয়ে মুক্তধারা ফাউন্ডেশন ও বাঙ্গালীর চেতনা মঞ্চের আয়োজনে জাতিসংঘ সদর দপ্তরের সামনে স্থাপিত অস্থায়ী শহীদ মিনারে শহীদদের শ্রদ্ধা জানানোর ২৯ বছর পূর্তি হলো।

বিগত ২৮ বছরের মত এবছরও উপস্থিত সর্বকনিষ্ঠের পুস্পস্তবক অর্পণের মধ্য দিয়ে দিবসটির সূচনা হয়। এরপর একে একে শহীদদের পুষ্পার্ঘ্য অর্পণের মধ্য দিয়ে শ্রদ্ধা জানায় বাঙালির চেতনা মঞ্চ, মুক্তধারা ফাউন্ডেশন, যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ, যুক্তরাষ্ট্র জাতীয় পার্টি, যুক্তরাষ্ট্র জাসদ, বাংলাদেশ স্পোর্টস ফাউন্ডেশন, আবহানী ক্রীড়া চক্র, বাংলাদেশ ক্রীড়া সংস্থা, শেখ রাসেল স্মৃতি পরিষদ, যুক্তরাষ্ট্র যুবলীগ, যুক্তরাষ্ট্র শ্রমিক লীগ, সম্মিলিত বঙ্গবন্ধু শত বর্ষ উদযাপন পরিষদ যুক্তরাষ্ট্র, সুচিত্রা সেন মেমোরিয়াল, বেঙ্গল সোসাইটি অব নিউইয়র্ক, যুক্তরাষ্ট্র গোলাপগঞ্জ সোসাইটি সহ বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠন। এছাড়াও নিউইয়র্কের উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিও প্রতিষ্ঠান ফুল দিয়ে শহীদদের শ্রদ্ধা জানান।

বাঙালির চেতনা মঞ্চের চেয়ারম্যান আব্দুর রহিম বাদশার পরিচালনায় এ অনুষ্ঠানটি শুরু হয় সম্মিলিত কণ্ঠে ভাষার গান পরিবেশনের মধ্য দিয়ে। এরপর এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।

অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সংস্কৃতি কর্মী গোপাল স্যানাল, জাতীয় পার্টি যুক্তরাষ্ট্র শাখার সভাপতি হাজী আবদুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক আবু তালিব চৌধুরী চান্দু, আওয়ামী লীগ নেতা আবদুল হামিদ, শেখ আতিকুল ইসলাম, যুক্তরাষ্ট্র জাসদের সাধারণ সম্পাদক নূরে আলম জিকু, বেঙ্গল সোসাইটি অব নিউইয়র্ক এর সভাপতি মাহমুদুল হক চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক মো. আলী সবুজ, কোষাধ্যক্ষ বুরহান খান, উপদেষ্টা জিয়াউল ফাত্তা রিয়াদ, শ্রমিক নেতা সালেহ আহমেদ, যুক্তরাষ্ট্র শ্রমিক লীগের মঈজুর লস্কর জুয়েল, যুবলীগ নেতা জামাল আহেমেদ, শ্যামল কান্তি চন্দ প্রমুখ। মুক্তধারা ফাউন্ডেশনের কর্ণধার বিশ্বজিৎ সাহা একুশে বইমেলায় অংশগ্রহণের জন্য ঢাকায় অবস্থান করায় এ অনুষ্ঠানে অনুপস্থিত ছিলেন।

এছাড়া গণমাধ্যম কর্মীদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ইউএসএনিউজঅনলাই ডটকম এবং সাপ্তাহিক জনতার কন্ঠ’র সম্পাদক সাখাওয়াত হোসেন সেলিম, দৈনিক ইত্তেফাক ও সাপ্তাহিক বাঙালির বিশেষ প্রতিনিধি শহীদুল ইসলাম, সাপ্তাহিক ঠিকানার বার্তা সম্পাদক মিজানুর রহমান, এটিএন বাংলার যুক্তরাষ্ট্র ব্যুরো প্রধান কানু দত্ত, বাংলা চ্যানেলের চেয়ারম্যান ফজলুর রহমান ও সিইও শাহ জে চৌধুরী, সাংবাদিক সৈয়দ করীর প্রমুখ।

বক্তারা বলেন, মায়ের ভাষার দাবিতে বাঙালির আত্মত্যাগের মহিমায় ভাস্বর অমর একুশে ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। বাঙালির আত্মগৌরবের স্মারক অমর একুশের গৌরবময় এদিনে মহান ভাষা শহীদদের আত্মত্যাগে আমরা পেয়েছিলাম মায়ের ভাষায় কথা বলার অধিকার। যাদের ত্যাগে বাংলা বিশ্ব আসনে পেয়েছে গৌরবের অবস্থান। অমর একুশে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে বিশ্বের সব প্রান্তে উদযাপিত হচ্ছে। তারা বলেন, একুশে ফেব্রুয়ারির ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের’ স্বীকৃতি আদায়ে প্রবাসীদের ভূমিকা ছিল অবিস্মরণীয়। শহীদের আত্মার প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর মধ্য দিয়ে প্রবাসে বাঙালি সংস্কৃতিকে চিরজাগ্রত রাখার স্বপ্ন বাস্তবায়নে একযোগে কাজ করে যেতে হবে সকলকে।

এ সময় বাঙালির চেতনা মঞ্চের চেয়ারম্যান আব্দুর রহিম বাদশা জানান, জাতিসংঘ সদর দপ্তরের সামনে স্থাপিত অস্থায়ী শহীদ মিনারে শহীদদের শ্রদ্ধা জানানোর প্রতিটি অনৃুষ্ঠানেই জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ও স্থায়ী প্রতিনিধি এবং নিউইয়র্কে বাংলাদেশের কনসাল জেনারেলগণ উপস্থিত থাকতেন। ২৯ বছরের ইতিহাসে এবারই প্রথমবারের মতো তারা অনুষ্ঠানে অনুপস্থিত ছিলেন। তাদের কোনো প্রতিনিথিকেও এ বছর এ গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠানে পাঠানো হয়নি।

তিনি বলেন, অনুষ্ঠানে শুরুর কয়েক মিনিট আগে তাদের স্ব স্ব অফিস থেকে ফোনে জানান হয়, অফিসের গুরুত্বপূর্ণ কাজে ব্যস্ত থাকায় জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ও স্থায়ী প্রতিনিধি রাবাব ফাতেমা এবং নিউইয়র্কে বাংলাদেশের কনসাল জেনারেল সাদিয়া ফয়জুন্নেসা অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকতে পারবেন না।

বাঙালির রক্তস্নাত ভাষা আন্দোলনের স্বীকৃতি দিয়ে জাতিসংঘের সহযোগী সংস্থা ইউনেস্কো ১৯৯৯ সালের ১৭ই নভেম্বর ২১শে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ঘোষণা করে। এরপর থেকেই যথাযোগ্য মর্যাদায় সারা বিশ্বে একযোগে দিবসটি উদযাপিত হয়ে আসছে।

ঢাকাটাইমস/২১ফেব্রুয়ারি/ইএস

সংবাদটি শেয়ার করুন

প্রবাসের খবর বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

প্রবাসের খবর এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :