ঠাকুরগাঁওয়ে ‘ইউএনওর আচরণে’ ক্ষুব্ধ মুক্তিযোদ্ধারা

প্রকাশ | ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ১৯:০৪

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস

ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গীতে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে শহীদ মিনারে ফুলেল শ্রদ্ধা জানাতে এসে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার আচরণে ক্ষুদ্ধ হয়ে ফিরে গেছেন মুক্তিযোদ্ধারা। সেই সঙ্গে তারা বর্জন করেছেন আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের শহীদ মিনারে ফুল দেয়াসহ সব কর্মসূচি।

একুশের প্রথম প্রহরে বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এ ঘটনা ঘটে। মুহূর্তের মধ্যেই বিষয়টি টপ অব দ্যা টাউনে পরিণত হয়। 

উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমান্ডের মুক্তিযোদ্ধারা অভিযোগ করে বলেন, স্বাধীনতার পর থেকে উপজেলা প্রশাসনের পর মুক্তিযোদ্ধারা প্রতিটি জাতীয় দিবসে শহীদ মিনার এবং স্মৃতিসৌধে ফুলেল শ্রদ্ধা জানানোর সুযোগ হয়। কিন্তু এবারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা খায়রুল আলম সুমন উপজেলা প্রশাসনের পর বালিয়াডাঙ্গী থানা পুলিশকে দ্বিতীয় ধাপে এবং মুক্তিযোদ্ধাদের তৃতীয় ধাপে শ্রদ্ধা জানানোর কথা বলেন। এমন ঘোষণার পর মুক্তিযোদ্ধারা শহীদ মিনার ত্যাগ করে ফুল দেয়া বর্জন ঘোষণা দিয়ে মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ডার কার্যালয়ে চলে আসেন। 

মুক্তিযোদ্ধা সফিকুল ইসলাম, সলেমান আলীসহ কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধা বলেন, ইউএনও সাহেবের নতুন নিয়ম আমরা মানি না। এ নিয়ম আমাদের মুক্তিযোদ্ধাদের অপমান করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী কোনোদিন মুক্তিযোদ্ধাদের ছোট করে দেখেননি। আমরা শহীদ মিনারে ফুলের শ্রদ্ধা বর্জন করলাম। আগামী রবিবার আমরা ইউএনওর বিরুদ্ধে কর্মসূচি গ্রহণের জন্য সভা আহ্বান করেছি। 

মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করে মুক্তিযোদ্ধা সন্তানেরাও শ্রদ্ধা নিবেদন করেননি শহীদ মিনারে।

রাত সাড়ে ১২টায় সময় ইউএনও খায়রুল আলম সুমন মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ডের কার্যালয়ে এসে মুক্তিযোদ্ধাদের পুনরায় ফুলেল শ্রদ্ধা জানাতে অনুরোধ জানান। এক পর্যায়ে ইউএনওকে মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ডের কার্যালয়ে রেখে বাড়িতে চলে যান মুক্তিযোদ্ধারা। পরে স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাদের মধ্যস্থতায় মুক্তিযোদ্ধার গুটি কয়েক সন্তান রাত ১টায় শহীদ মিনারে ফুলেল শ্রদ্ধা জানান। 

উপস্থিত সুধীজনেরা জানান, মুক্তিযোদ্ধারা দেশের বীর সন্তান। তাদের অগ্রাধিকার সবার আগে। এমনটা করা ইউএনও'র উচিত হয়নি।

বালিয়াডাঙ্গী প্রেসক্লাবের সভাপতি এনএম নুরুল ইসলাম বলেন, মুজিববর্ষে মুক্তিযোদ্ধাদের গুরুত্ব না দেয়া খুবই নিন্দনীয় কাজ। আশা করছি, বিষয়টি তদন্ত করবে জেলা প্রশাসন।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার খায়রুল আলম সুমন তাৎক্ষণিক সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে রাজি হননি। পরে শুক্রবার তার মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করলেও তিনি সাড়া দেননি।

(ঢাকাটাইমস/২১ফেব্রুয়ারি/কেএম/এলএ)