কাশ্মিরি আপেল কুলে মফিজুরের বাজিমাত

সাজ্জাদ হুসাইন, ফরিদপুর থেকে
 | প্রকাশিত : ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ০৮:১৯

ফরিদপুর সদর উপজেলার কৃষ্ণনগর ইউনিয়নের হাট গোবিন্দপুর গ্রামের মফিজুর রহমান পড়ালেখা শেষে চাকরি না পেয়ে পৈতৃক সম্পত্তি বিক্রি করে বিদেশে পাড়ি জমিয়েছিলেন। পাঁচ বছর বিদেশে হাঁড়ভাঙা পরিশ্রম করেও তেমন সুবিধা করতে না পেরে ফিরে আসেন দেশে।

দেশে এসে কোনো কাজ না পেয়ে হতাশ হয়ে ঘুরে বেড়ান মফিজুর রহমান। তখন পরিচয় ঘটে ফরিদপুর সদর উপজেলার কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার মো. আনোয়ার হোসেনের সঙ্গে। তার পরামর্শ নিয়ে চুয়াডাঙ্গা থেকে ১৮৬০টি কাশ্মিরি আপেল কুলের চারা এনে পৈতৃক জমিতে রোপণ করেন বৈশাখ মাসের প্রথম সপ্তাহে। চারা রোপণের ৭ মাস পরেই ফুল আসে প্রতিটি গাছে।

কাশ্মিরি আপেল কুল। দেখতে অনেকটা ছোট সাইজের আপেলের মতো। আপেলের মতো সবুজ ও হালকা হলুদের ওপর লাল রং। অধিক পুষ্টিগুণ ও সুস্বাধু। বাজারে এর ব্যাপক চাহিদা আছে। আর নিরাপদ ও বিষমুক্ত কাশ্মিরি আপেল বড়ই চাষ করে প্রথম বছরেই ব্যাপক সাফল্য পেয়েছেন হাট গোবিন্দপুর গ্রামের আক্কাস আলী সরদারের শিক্ষিত বেকার ছেলে মফিজুর রহমান।

বর্তমানে বাগানের প্রতিটি গাছে কাশ্মিরি বরই ঝুলছে। বরইয়ের গায়ে রং আসতে শুরু হরেছে। দৃষ্টিনন্দন হয়ে উঠেছে পুরো বাগানটি। বিভিন্ন অঞ্চল থেকে দর্শনার্থীরা কাশ্মিরি আপেল কুলের বাগান দেখতে আসছে। অনেকেই নতুন নতুন বাগান করতে আগ্রহ প্রকাশ করছেন।

আপেল কুল চাষি মফিজুর রহমান বলেন, বিদেশ থেকে ফিরে যখন দিশেহারা, তখন ফরিদপুর সদর উপজেলার কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার মো. আনোয়ার হোসেন স্যারের সঙ্গে দেখা। তার পরামর্শে নেমে পড়ি এই কুল চাষে। সব মিলিয়ে কুল বাজারে তোলা পর্যন্ত আমার খরচ হবে চার লাখ থেকে সাড়ে চার লাখ টাকা। বাগানে ফলন খুব ভাল হয়েছে। কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ না এলে আশা করছি ১৮ থেকে ২০ লাখ টাকার কুল বিক্রি করতে পারব।’

আর সরকারি সহযোগিতা পেলে আগামীতে আর বেশি জমিতে ফলের চাষ করতে চান তিনি।

এদিকে মফিজুর রহমানের বাগান পরিদর্শন করেছেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের পরিচালক ফিল্ড সার্ভিস ইউং কৃষিবিদ চন্ডি দাস কুন্ডু। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন ফরিদপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কৃষিবিদ কার্তিক চন্দ্র চক্রবর্তীসহ ফরিদপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা।

ফরিদপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কৃষিবিদ কার্তিক চন্দ্র চক্রবর্তী বলেন, ‘মফিজুর রহমানের পাশে আমরা সব সময় আছি। তিনি কাশ্মিরি আপেল কুল চাষ করে ব্যাপক সাড়া ফেলে দিয়েছেন। তিনি সরকারি সহযোগিতা পেলে আরও ভালো করতে পারবেন। আমরা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে প্রশিক্ষণসহ বিভিন্ন ধরনের সহযোগিতা করছি।’

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের পরিচালক ফিল্ড সার্ভিস ইউং কৃষিবিদ চন্ডি দাস কুন্ডু বলেন, ‘মফিজুর রহমান বিদেশ থেকে ফিরে এসেই আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে কুলের চাষ করেছে। আমরা সব সময় তার পাশে থেকে বিভিন্ন পরামর্শ প্রশিক্ষণ দিয়ে যাচ্ছি।’

(ঢাকাটাইমস/২৩ফেব্রুয়ারি/ইএস/মোআ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :