মুজিববর্ষের উদ্যোগ

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় প্রথম সূর্যমুখী ফুলের চাষে সফলতার আশা

প্রকাশ | ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ০৮:২২

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস

মুজিববর্ষ উপলক্ষে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় প্রথমবারের মতো সূর্যমুখী ফুলের চাষে আশার হলুদ ফুলের সৌরভ ছড়াচ্ছে। গাছে গাছে ফুটেছে ফুল। প্রতিদিন বিকেলে শহরসহ আশপাশ এলাকা থেকে সৌন্দর্যপিয়াসুরা দল বেঁধে আসেন সূর্যমুখী ফুলের বাগান দেখতে।

কৃষি অফিসের তথ্যমতে, এবার প্রথম বছর পৌর এলাকাসহ সদর উপজেলার বুধল, মজলিশপুর ও মাছিহাতা ইউনিয়নের ৮০ বিঘা জমিতে কৃষকরা সূর্যমুখী ফুলের চাষ করেছেন।

সরেজমিনে বুধল ইউনিয়নের সুতিয়ারা ও চান্দিয়ারা গ্রামে এবং মজলিশপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে ঘুরে দেখা গেছে সূর্যমুখী ফুলের বাগান এলাকায় হলুদের রাজ্য। চারদিকে হলুদ ফুলের মনমাতানো রূপ। প্রতিটি বাগানে মৌমাছির দল গুনগুন শব্দে ঘুরে বেড়াচ্ছে।

সদর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর এলাকাসহ সদর উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে প্রথমবারের মতো হাইসান-৩৩ জাতের সূর্যমুখী ফুলের চাষ করা হয়। উপজেলা কৃষি অফিস থেকে কৃষকদের বিনা মূল্যে বীজ ও সার দেয়া হয়।

বুধল ইউনিয়নের সুতিয়ারা গ্রামের সূর্যমুখী ফুলের চাষি আহসান উল্লাহ জানান, আগে তার জমিতে বিভিন্ন ধরনের সবজির চাষ করতেন তিনি। মুজিববর্ষ উপলক্ষে এবার প্রথমবারের মতো ৫ বিঘা জমিতে হাইসান-৩৩ জাতের সূর্যমুখী ফুলের চাষ করেন। ইতিমধ্যে প্রতিটি গাছে ফুল ধরেছে। তিনি আশা করেন, সূর্যমুখী চাষে সফলতা আসবে। লাভবান হবেন তিনি।

একই ইউনিয়নের চান্দিয়ারা গ্রামের কৃষক নূরু মিয়া জানান, প্রতিদিনই শহর ও শহরতলীর বিভিন্ন গ্রাম থেকে লোকজন আসে তার সূর্যমুখী ফুলের বাগান দেখতে। তিনি বলেন, আগে এই জমিতে আলু, ধনিয়া, টমেটো, ঢেড়শ চাষ করতাম। এবার প্রথমবারের মতো ৫ বিঘা জমিতে সূর্যমুখী ফুলের চাষ করেছি।  আশা করি লাভবান হব।‘

চাষিদের তথ্যমতে, বুধল ও মজলিশপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে ৩০ বিঘা জমিতে সূর্যমুখীর চাষ হয়েছে।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলা কৃষি অফিসার মুনসী তোফায়েল হোসেন বলেন, ‘আগে কখনো সদর উপজেলার কোনো কৃষক সূর্যমুখী ফুলের চাষ করেননি। এ বছর মুজিববর্ষ উপলক্ষে প্রথমবারের মতো সরকারের রাজস্ব খাতের অর্থায়নে পৌর এলাকাসহ সদর উপজেলার ১১টি ইউনিয়নের ৮০ বিঘা জমিতে হাইসান-৩৩ জাতের সূর্যমুখী চাষ করা হয়েছে।

সূর্যমুখী চাষের ৯০ থেকে ১০৫ দিনের মধ্যে কৃষকরা ফুল থেকে বীজ ঘরে তুলতে পারবেন বলে জানান তোফায়েল হোসেন। প্রতি বিঘা জমিতে ছয় থেকে সাড়ে ছয় মণ সূর্যমুখী বীজ পাওয়া যাবে, যার মূল্য ১০-১১ হাজার টাকা। কৃষকদের স্বাবলম্বী করতে সূর্যমুখী ফুল চাষে উৎসাহিত করা হয়েছে বলে জানান তিনি।

সূর্যমুখীর উপকারিতা নিয়ে এই কৃষি কর্মকর্তা বলেন, বাজার থেকে যে সাধারণ সয়াবিন তেল কিনি তাতে ক্ষতিকর কলেস্টেরল থাকে, যা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। সূর্যমুখী ফুলের বীজ থেকে যে সয়াবিন তেল পাওয়া যায় তাতে কোনো ক্ষতিকর কলেস্টেরল নেই।

সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার পঙ্কজ বড়–য়া বলেন, ‘প্রথমবারের মতো ব্রাহ্মণবাড়িয়ার চাষিরা সূর্যমুখী ফুলের চাষ করেছেন। সূর্যমুখী চাষে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করতে বিনামূল্যে সূর্যমুখীর বীজ ও সার দেয়া হয়েছে। আশা করি ফলন খুব ভালো হবে।’ আগামীতে আরও বেশি জমিতে সূর্যমুখীর চাষ হবে বলে আশা করেন তিনি।

(ঢাকাটাইমস/২৩ফেব্রুয়ারি/মোআ)