অ্যাম্বুলেন্সে এসএসসি পরীক্ষা!

প্রকাশ | ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ১৭:৫৮

নোয়াখালী প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস

চলছে এসএসসি পরীক্ষা। নিজের সহপাঠীদের সঙ্গে পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে মঞ্জুরুল ইসলাম আরমান। এর মধ্যে সহপাঠীর সঙ্গে পূর্ববিরোধের জের ধরে কয়েকজন দুর্বৃত্তের হামলার শিকার হয়ে বর্তমানে হাসপাতালের বিছানায় সে।

এদিকে এখনো শেষ হয়নি আরমানের পরীক্ষা। তাই আবেদনের প্রেক্ষিতে শ্রুতিলেখক দিয়ে পরীক্ষা দেয়ার সুযোগ দেয়া হয় আরমানকে।

রবিবার সাধারণ বিজ্ঞান পরীক্ষা চলাকালে বেগমগঞ্জ সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে গিয়ে দেখা গেছে- অ্যাম্বুলেন্সের বিছানায় শুয়ে ব্যান্ডেজ লাগানো হাতে কোনোভাবে প্রশ্ন ধরে শ্রুতিলেখক দিয়ে পরীক্ষা দিচ্ছে বেগমগঞ্জ সরকারি কারিগরি উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মঞ্জুরুল ইসলাম আরমান। আহত আরমান বেগমগঞ্জ উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের বালিবাড়ির মোস্তফা কামালের ছেলে।

আরমানের চাচা নূর নবী জানান, প্রায় ছয় মাস আগে আরমানের এক সহপাঠীর সঙ্গে বড়ভাই-ছোটভাই ডাকা নিয়ে গনিপুরের বহিরাগত কয়েকজনের সঙ্গে বাকবিতণ্ডা ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। পরে স্থানীয়ভাবে তা মীমাংসা করা হয়। গত বুধবার ১৯ ফেব্রুয়ারি দুপুর ১টার দিকে সহপাঠীদের সঙ্গে প্রাইভেট শেষ করে সাজেশন নিয়ে বাসায় ফিরছিল আরমান। এ সময় চৌমুহনী মোরশেদ আলম কমপ্লেক্স ও হকার্সের মাঝামাঝি এলাকায় গনিপুরের ওই ছেলেগুলো তার সহপাঠীসহ সবাইকে অস্ত্র নিয়ে ধাওয়া করে। এ সময় সহপাঠীরা পালিয়ে গেলেও পালাতে পারেনি আরমান। হামলাকারীরা তাকে ধরে হাত-পা ও শরীরের কয়েকটি অংশে কুপিয়ে জখম করে। পরে তাকে দ্রুত উদ্ধার করে প্রথমে চৌমুহনী রাবেয়া হাসপাতালে ও পরে অবস্থার অবনতি হলে নোয়াখালী প্রাইভেট হাসপাতালে তাকে ভর্তি করা হয়।

নূর নবী জানান, ধারালো অস্ত্রের কোপে আরমানের ডান পায়ের রগ কেটে গেছে। এছাড়াও তারা হাত ও শরীরের বিভিন্ন অংশে ক্ষত হয়েছে। হামলকারীরা রিপন, আব্দুল্যাহ ও জিহানের নেতৃত্বে এ হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। তিনি এ ঘটনার বিচার দাবি করেন।

পরীক্ষা কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রেশমা আক্তার জানান, একজন পরীক্ষার্থী হামলার শিকার হয়ে হাত-পা ব্যবহারে অক্ষম হয়েছে বলে তার পরিবারের পক্ষ থেকে কেন্দ্র সচিব বরাবর আবেদন করা হয়। পরে বিষয়টি বিবেচনা করে সত্যতা পেয়ে বিশেষ পদ্ধতিতে একজন শ্রুতিলেখক দিয়ে পরীক্ষায় অংশ নেয় আরমান।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহবুব আলম বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, পরীক্ষার্থীর পরিবারের আবেদনে অ্যাম্বুলেন্সে বসে শ্রুতিলেখক দিয়ে তাকে পরীক্ষা দেয়ার সুযোগ দেয়া হয়েছে।

বেগমগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হারুন উর রশিদ চৌধুরী বলেন, একজন আহত পরীক্ষার্থী অ্যাম্বুলেন্সে শুয়ে পরীক্ষা দিচ্ছে বলে তিনি শুনেছেন। কিন্তু হামলার বিষয়ে তার পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি।

(ঢাকাটাইমস/২৩ফেব্রুয়ারি/কেএম/এলএ)