কোরিয়া প্রবাসীদের প্রতি করোনা ভাইরাস নিয়ে রাষ্ট্রদূতের বার্তা

মোহাম্মদ হানিফ, দক্ষিণ কোরিয়া
 | প্রকাশিত : ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ২৩:২২

দক্ষিণ কোরিয়াতে সংক্রামক রোগজনিত সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি করার একদিন পর আক্রান্তের সংখ্যা ৮৪৩ জনে দাঁড়িয়েছে। মৃত্যু হয়েছে আটজনের। মুহূর্তের মধ্যেই লাফিয়ে বিভিন্ন শহরে রোগ ছড়িয়ে মৃত্যুপুরীতে পরিণত হচ্ছে দক্ষিণ কোরিয়া। বর্তমানে কোরিয়াতে গৃহবন্দির মতো অবস্থান করতে হচ্ছে মানুষদের। অধিকাংশ দোকানপাট বন্ধ। রাস্তায় এবং কোরিয়ার বিভিন্ন বাজারগুলো মানুষশূন্য।

কোরিয়াস্থ বাংলাদেশিদের সর্বোচ্চ সতর্কতা মেনে চলার জন্য বাংলাদেশ দূতাবাসের ফেসবুক পেজ থেকে ভিডিও বার্তা প্রকাশ করেছেন দেশটিতে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত আবিদা ইসলাম।

আবিদা ইসলাম বলেন, করোনা ভাইরাসের প্রভাবের কারণে দক্ষিণ কোরিয়ায় এই রোগের সংক্রমিত রোগীর সংখ্যা আশংঙ্কাজনক হারে বাড়ছে। গত ২০ জানুয়ারি আমরা এই দেশে প্রথম এই রোগের কথা জানতে পারি। পরবর্তী এক মাসে অর্থাৎ ১৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত এই রোগের সংক্রমিত রোগীর সংখ্যা ছিল ৫১ জন। কিন্ত গত পাঁচ দিনে তা ৮০০ জন ছাড়িয়ে গেছে।’

তিনি বলেন, ‘প্রতি ঘণ্টায় এই ধরনের রোগীর সংখ্যা বেড়েই চলেছে। দুঃখজনকভাবে এ রোগে আক্রান্ত হয়ে এরই মধ্যে সাতজন দক্ষিণ কোরিয়ার নাগরিক মারা গেছেন। এ দেশের সরকার ভাইরাস সংক্রান্ত সর্বোচ্চ সতর্কতা সংকেত ‘রেড অ্যালার্ট’ জারি করেছেন। তারা এই রোগের কেন্দ্রস্থল হিসেবে দেগু ও চেওংদো শহরকে চিহ্নিত করেছেন। তাদের স্পেশাল কেয়ার অঞ্চল হিসেবে ঘোষণা করেছেন। তবে এই ভাইরাসের প্রকোপ বিভিন্ন শহরে ছড়িয়ে পড়েছে। সরকার এই সংকট থেকে উত্তরণের জন্য এদেশে বসবাসকারী সব দেশি এবং বিদেশি নাগরিকদের সক্রিয় সহযোগিতা কামনা করেছেন।’

রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘বাংলাদেশি ভাই-বোনেরা সুস্থ রয়েছেন। কোনো বাংলাদেশি নাগরিক এ রোগে আক্রান্ত হয়েছেন- এমন কোনো তথ্য এখন পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। তবে দূতাবাসের পক্ষ থেকে আপনাদের সবাইকে আবারো সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করার জন্য অনুরোধ জানাচ্ছি।’

তিনি বলেন, ‘কারো যদি এই রোগের কোনো লক্ষণ দেখা যায় তবে দেরি না করে কল সেন্টারে ১৩৩৯ নম্বরে এবং স্থানীয় হাসপাতালে যোগাযোগ করুন। আপনার ভিসা সংক্রান্ত যদি কোনো জটিলতা থাকলে ভয় পাবেন না, আতঙ্কিত হবেন না, এজন্য আপনাকে দেশে পাঠানো হবে না বা জেলেও পাঠানো হবে না। বিনামূল্যে এ দেশের সরকার আপনাকে চিকিৎসা সেবা দেবে।’

আরো কিছু পরামর্শ:

এছাড়াও অন্য কোনো ধরনের অসুস্থতা নিয়ে হাসপাতালে যেতে হলে অবশ্যই হাতমোজা বা গ্লাভস এবং মুখে মাস্ক পরে যাওয়ার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। সব সময়ের জন্য হাতমোজা ও মাস্ক ব্যবহার করতেও বলা হয়েছে। যেহেতু হাঁচি বা কাশি থেকে এ রোগটি ছড়ানোর আশঙ্কা রয়েছে সে জন্য সভা-সমাবেশ, গণপরিবহন এসব কিছু এড়িয়ে চলার চেষ্টা করবেন। অত্যন্ত জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বাড়ি বা কর্মস্থলের বাইরে না যাওয়াই ভালো। প্রবাসী বাংলাদেশিদের যে কোনো সহযোগিতার জন্য দূতাবাসের হটলাইন ২৪ ঘণ্টা খোলা রয়েছে। হটলাইন নম্বর: 01028814056।

কেউ চাইলে ডাকযোগেও এ সেবা নিতে পারবেন। এজন্য বাংলাদেশ দূতাবাসে স্বশরীরে সিউলে আসার কোনো প্রয়োজন নেই বলে জানান রাষ্ট্রদূত।

এ পরিস্থিতি রাষ্ট্রদূতের এমন বাণী কোরিয়ায় অবস্থারত বাংলাদেশির মনে কিছুটা সাহস যোগাবে বলে মনে করেন প্রবাসীরা। এই দূঃসময়ে দূতাবাসের এই ধরনের সহযোগিতার জন্য ধন্যবাদ দেন বাংলাদেশিরা।

এদিকে, ইতোমধ্যে সব ধরনের মিছিল, সভা-সমাবেশের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে কোরীয় সরকার। দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট মুন জে-ইন বলেছেন, এ ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের ক্ষেত্রে আগামী কয়েকদিন কী ঘটে তা হবে খু্বই গুরুত্বপূর্ণ। চীন-কোরিয়া ইতালিসহ গোটা বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাস সংক্রমণ দ্রুত বাড়তে থাকায় তা মহামারী আকার ধারণ করার শঙ্কা বেড়েই চলছে।

(ঢাকাটাইমস/২৪ফেব্রুয়ারি/কেএম/এলএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

প্রবাসের খবর বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

প্রবাসের খবর এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :