মুক্তিযোদ্ধা সনদ দেয়ার নামে লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ

প্রকাশ | ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ২৩:০৪

তাড়াশ (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস

সিরাজগঞ্জের তাড়াশে সহযোগী মুক্তিযোদ্ধা সনদ দেয়ার নাম করে হাবিবুর রহমান নামের এক প্রতারক লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। অভিযুক্ত ওই হাবিবুর রহমান (হাবিব) তাড়াশ উপজেলার বারুহাস ইউনিয়নের বিনসাড়া গ্রামের মৃত বাবর আলীর ছেলে। প্রতারণার খপ্পরে পরেছে একই গ্রামের মৃত মাহমুদ সরকারের ছেলে বাহাদুর সরকার  ও মৃত তয়োব আলীর ছেলে গফুর মোল্লা।

প্রতারক হাবিবুর রহমানের নামে গ্রামের প্রধানদের কাছে মৌখিকভাবে বিচার চেয়েছেন ভুক্তভোগীরা। এ ছাড়াও অভিযুক্ত ওই হাবিবুর রহমানের বিরুদ্ধে আদালতে প্রতারণার মামলা চলমান রয়েছে। মামলাটি করেছেন একই উপজেলার তাড়াশ সদরের মাদ্রাসা পাড়ার আবুল বাসার নামের এক ব্যবসায়ী।

অভিযোগ উঠেছে, হাবিবুর রহমান সহযোগী মুক্তিযোদ্ধা সনদ পাইয়ে দেয়ার নাম করে ভুক্তভোগী বাহাদুর সরকারের কাছ থেকে ২ লাখ টাকা দাবি করে। প্রথম পর্যায়ে ৪০ হাজার টাকা নেন প্রতারক হাবিব। অন্যদিকে গফুর মোল্লার কাছ থেকে একইভাবে প্রতারণা করে মুক্তিযোদ্ধার সনদ পাইয়ে দেয়ার কথা বলে নগদ দুই লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়। পরে  দীর্ঘ সময় পেরিয়ে গেলেও সনদ না পেলে ভুক্তভোগীরা টাকা ফেরত চাইলে বিভিন্ন টালবাহানা করে। এক পর্যায়ে বাধ্য হয়েই হাবিবের বিরুদ্ধে গ্রামবাসীর কাছে বিচার চান তারা।

প্রতারণার শিকার হওয়া বাহাদুর সরকার বলেন, মুক্তিযুদ্ধের সময় আমরা মুক্তিযোদ্ধাদের সহযোগিতা করেছি। তবে মুক্তিযোদ্ধার কোনো সনদ পাইনি। সনদ পাইয়ে দেয়ার কথা বলে দুই লাখ টাকা দাবি করে ৪০ হাজার টাকা নেয়। আর বাকি টাকা সনদ দেয়ার পরে নেবে। হাবিব জানায় তার নিজের লোক মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়ে আছে। কিন্তু অনেকদিন পেরিয়ে গেলেও সনদ না দিয়ে তালবাহানা করতে থাকে। টাকা ফেরত চাইলে সে নানা ধরনের হুমকি ধামকি দেয়। বাধ্য হয়ে গ্রাম প্রধানদের নিকট বিচার চেয়েছি।

অন্যদিকে আবুল বাসার বলেন, হাবিবুর রহমান জমির মামলার ডিক্রি পাইয়ে দেয়ার নাম করে আমার কাছ থেকে তিনটি নন জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে সাক্ষর দিয়ে তিন লাখ ৮০ হাজার টাকা নেন। হাবিুবর রহমান আরো বলেন, ‘আমার ভায়রা জজ। এ কাজ করা আমার জন্য কোনো ব্যাপার নয়। আমি মামলাটির রায় পাইয়ে দিতে পারবো।’ টাকা দিয়েও কোনো কাজ না হলে টাকা ফেরৎ চাইলে তিনি তা ফেরত দিতে অস্বীকার করেন। বাধ্য হয়েই আমি আদালতে মামলা করেছি। পুলিশ তাকে গ্রেপ্তারও করেছিল। বর্তমানে জামিনে এসে আমাকেসহ মামলার সাক্ষীদের হুমকি দিচ্ছে।

বারুহাস ইউনিয়নের বিনসাড়া ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল হান্নান ও সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম বলেন, মুক্তিযোদ্ধার সনদ দেয়ার কথা বলে বাহাদুর সরকারের কাছ থেকে হাবিবুর রহমান ৪০ হাজার ও গফুর মোল্লার কাছ থেকে দুই লাখ টাকা নিয়েছে। বিষয়টি নিয়ে আমাদের কাছে মৌখিকভাবে বিচার চেয়েছেন।

অভিযুক্ত হাবিবের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি অভিযোগগুলো অস্বীকার করে বলেন, এগুলো আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র।

(ঢাকাটাইমস/২৫ফেব্রুয়ারি/কেএম)