টিআইবিকে দুদক আইনজীবীর চ্যালেঞ্জ

প্রকাশ | ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ১৬:২৬ | আপডেট: ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ১৬:২৭

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

অনুসন্ধান, তদন্ত ও মামলা দায়েরের ক্ষেত্রে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দক্ষতার ঘাটতি রয়েছে বলে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) এর এক গবেষণা প্রতিবেদনকে প্রত্যাখ্যান করেছেন আইনজীবী খুরশীদ আলম খান। যিনি সুপ্রিম কোর্টে দুদকের বিভিন্ন মামলায় আইনি লড়াই করে থাকেন।

বুধবার ওই প্রতিবেদনের এক প্রতিক্রিয়ায় খুরশীদ আলম খান টিআইবিকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘বিচারকরা দেখবেন আমাদের (দুদকের) গলদ কোথায়। আপনি (টিআইবি) কে? আপনি কীভাবে ডাটা নিলেন? কয়টা কেসের ডাটা নিয়েছেন। আমার সঙ্গে বসুন। সামনাসামনি ডিবেট করি। ওপেন লাইভ ডিসকাশন হবে।’

গত ২৫ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার রাজধানীর ধানমন্ডিতে টিআইবির কার্যালয়ে ‘দুর্নীতিবিরোধী প্রতিষ্ঠান শক্তিশালীকরণ উদ্যোগ: বাংলাদেশ দুর্নীতি দমন কমিশনের ওপর একটি ফলো-আপ গবেষণা’শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, দুদকের কার্যক্রম মূল্যায়নের এই গবেষণার রেফারেন্স পিরিয়ড ছিল তিন বছর (২০১৬-২০১৮)। পরে ২০১৯ সালের এপ্রিল থেকে ডিসেম্বরের মধ্যে এই গবেষণার তথ্য সংগ্রহ করা হয়।

গবেষণা অনুযায়ী, স্বাধীনতা ও মর্যাদার প্রশ্নে দুদককে পর্যাপ্ত স্বাধীনতা দেওয়া হয়েছে এবং আইনে কার্যক্রম সম্পর্কে বিশদভাবে বলা হয়েছে। তবে কার্যক্রম ও ক্ষমতার ব্যবহারের ক্ষেত্রে এর স্বাধীনতা ও নিরপেক্ষতা প্রশ্নবিদ্ধ। দুদক বিরোধীদলের রাজনীতিকদের হয়রানি, ক্ষমতাসীন দল ও জোটের রাজনীতিকদের প্রতি নমনীয়তা প্রদর্শন, রাজনৈতিকভাবে নিরপেক্ষ আচরণ দেখাতে ব্যর্থ হওয়া, পক্ষপাতপূর্ণ ভূমিকা পালন করার অভিযোগ, বিরোধী রাজনৈতিক দলের সদস্যদের বিরুদ্ধেই বেশিরভাগ তদন্ত পরিচালনা করে আসছে বলে সাধারণের মধ্যে ধারণা রয়েছে। যদিও ক্ষমতাসীন দলের কয়েকজন সদস্যের বিরুদ্ধেও দুদকের তদন্ত চলছে। 

সংবাদ সম্মেলনে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, দুদকের মূল ম্যান্ডেট দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণে কার্যকর ভূমিকা রাখা। আইনের চোখে সবাই সমান এই বিষয়টি বিবেচনায় রেখে নিরপেক্ষভাবে প্রভাবমুক্ত হয়ে দায়িত্ব পালনের যে সৎ সাহস ও দৃঢ়তা তাতে ঘাটতি দৃশ্যমান। তবে কর্মী নিয়োগ ও প্রচার-প্রচারণার মতো কিছু ক্ষেত্রে লক্ষ্যণীয় অগ্রগতি হয়েছে। কিন্তু দুদকের অনুসন্ধান, তদন্ত ও মামলা দায়েরের মতো মৌলিক ক্ষেত্রে আশাবাদী হওয়ার সুযোগ নেই।

টিআইবির প্রতিবেদনের জবাবে খুরশীদ আলম খান বলেন, ‘বিভিন্ন মিডিয়ার মাধ্যমে আমি জানতে পেরেছি টিআইবি যে রিপোর্টটি দুর্নীতি দমন কমিশনের মামলা সংক্রান্ত, এটা অজ্ঞতার একটা বড় ইন্সট্যান্স (দৃষ্টান্ত)। এটা পক্ষপাতদুষ্ট, এটা প্রত্যাখ্যান করছি। কী বলবো ,আমার মুখের ভাষা নেই।’

‘সর্বোচ্চ আদালতে আমরা মামলা করি। আমরা লড়ছি। উনারা বলছেন আমরা পলিটিক্যাল পক্ষপাতদুষ্ট। কীভাবে বললেন?। আরও বললেন, আমাদের রেজাল্ট মধ্যমমানের। আপনার (টিআইবি) দৃষ্টিতে আমরা মধ্যমমান, ছোট মান হতে পারি। কিন্তু ২০২০ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত দুর্নীতির মামলার বিচারিক আদালতে দণ্ডের হার ৭০ শতাংশ। কিন্তু মধ্যম মানের হলে তো ৫০ শতাংশ হতো। উনারা ডাটা দেখিয়েছেন শতকরা ৬৭ হতে ১০০ পর্যন্ত এ গ্রেড। তাহলে আমি মধ্যমমান হলাম কী করে?’

খুরশীদ আলম বলেন, ‘টিআইবির একজন গবেষক আমার কাছে এসেছিলেন ইন্টারভিউয়ের জন্য। কথার ফাঁকে উনি বলছেন, স্যার যদি আপনি নাম দিতে না চান আমরা আপনার নাম দিবো না। আমি বললাম নাম দিতে চাই। এই যে প্রশ্নটা, নাম যদি দিতে না চান, তথ্যদাতার নাম নিতে না চান, তথ্য দাতার নাম প্রকাশ না করেন, তাহলে কী ধরনের স্বচ্ছতা! হোয়াট কাইন্ড অব ট্রান্সপারেন্সি। দিস অ্যাবসুলেটলি রাবিশ, ফলস।’

দুদক আইনজীবী বলেন, ‘এখন আমি কী করছি, কী পারফর্ম করছি, মধ্যমমান না নিম্নমান এটা বেস্ট বলতে পারবে যারা আমার অপজিশন ছিল তারা। যাদের বিরুদ্ধে আমরা মামলা করছি। তার চেয়ে বেশি জানবেন জাজ। ওনারা দেখবেন আমাদের গলদ কোথায়। আপনি কে?’

(ঢাকাটাইমস/২৬ফেব্রুয়ারি/এআইএম/জেবি)