ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টারে টাকা দিলেই শিক্ষা সনদ!

প্রকাশ | ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ২০:২১

নাটোর প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস

জনগণের দোড়গোঁড়ায় সেবা পৌঁছে দেয়ার লক্ষ্যে ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টার স্থাপন করা হলেও নাটোরের একটি সেন্টারে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। শুকাস ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টারের সেবার বদলে চলছে ব্যবসা। এখানে অর্থের বিনিময়ে জন্ম নিবন্ধন সনদের বয়স কম-বেশি করাসহ মোটা অংকের অর্থ হলেই মিলে শিক্ষাগত যোগ্যতার জাল সনদপত্র ও বিভিন্ন বিষয়ের অভিজ্ঞতার সনদ।

সরেজমিনে বুধবার দুপুরে শুকাস ইউনিয়ন পরিষদের পুরাতন ভবনে গিয়ে দেখা গেছে, সেখানে মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে দেয়া হচ্ছে বিভিন্ন শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদপত্র। কম্পিউটারে স্থানীয় বেলোয়া দ্বি-মুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্যাড তৈরি করে প্রকাশ্যে নকল সিল ও স্বাক্ষর দিয়ে অষ্টম শ্রেণি পাসের সনদ বানিয়ে দিচ্ছেন।  এছাড়াও বিভিন্ন সেবাপ্রার্থীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত অর্থও হাতিয়ে নেয়া হচ্ছে। ঘটনাটি এই প্রতিবেদকের ক্যামেরা বন্দি হলে হতভম্ব হয়ে যান ডিজিটাল সেন্টারের উদ্যোক্তা রেজাউল করিম। সঙ্গে সঙ্গে সাংবাদিকদের হাতে-পায়ে ধরার চেষ্টাও করেন তিনি।

এ সময় উপস্থিত এলাকাবাসী অভিযোগ করে বলেন, দীর্ঘদিন ধরে অর্থের বিনিময়ে শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদপত্র বানিয়ে বিক্রি করছেন উদ্যোক্তা রেজাউল করিম। এছাড়াও বিভিন্ন ছোটখাটো কাজেও অতিরিক্ত অর্থ গুনতে হয় সেবাপ্রার্থীদের।

অভিযুক্ত শুকাস ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টারের উদ্যোক্তা রেজাউল করিম বলেন, তিনি কোনো কাজে অতিরিক্ত অর্থ নেন না।

তবে একজন স্থানীয় ইউপি সদস্যের অনুরোধে এই প্রথম তিনটি অষ্টম শ্রেণি পাসের সনদপত্র তৈরি করে দিয়েছেন স্বীকার করে বলেন, এই কাজটি অন্যায় করেছেন। এজন্য তিনি অনুতপ্ত।

শুকাস ইউনিয়ন পরিষদের সচিব আব্দুল লতিফ বলেন, এই বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না। ইউনিয়নের ডিজিটাল সেবা সেন্টারটি পুরাতন ভবনে অবস্থিত। আর তিনি নতুন ভবনে বসেন, তাই বিষয়টি তার জানা নেই। আর ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল মজিদেরও একই ভাষ্য।

এ বিষয়ে বেলোয়া দ্বি-মুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আনোয়ার হোসেন বলেন, তার স্কুলের সিল-প্যাড বানিয়ে শিক্ষাগত যোগতার সনদ বিক্রির বিষয়টি তিনি শুনেছেন। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

সিংড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাসরিন বানু এ বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।  

নাটোরের স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক (ডিডিএলজি) গোলাম রাব্বি বলেন, ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টারে শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদপত্র বানিয়ে বিক্রি করা নিঃসন্দেহে একটি অবৈধ কাজ। খোঁজ নিয়ে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেবেন বলেও জানান তিনি।

(ঢাকাটাইমস/২৬ফেব্রুয়ারি/কেএম/এলএ)