সরিষাবাড়ীতে দুই সাংবাদিককে প্রাণনাশের হুমকি

জামালপুরের সরিষাবাড়ী পৌরসভার মেয়র রুকুনুজ্জামান রোকনের বিরুদ্ধে টেণ্ডারবাজি, কমিশন বাণিজ্য, ক্ষমতার অপব্যবহারসহ বিভিন্ন দুর্নীতির সংবাদ পত্রিকায় প্রকাশিত হওয়ায় দুই সাংবাদিককে শর্টগানের গুলিতে হত্যার হুমকি দিলেন মেয়র।

হুমকির প্রেক্ষিতে নিরাপত্তা চেয়ে বুধবার দুপুরে মানবকন্ঠ প্রতিনিধি জাকারিয়া জাহাঙ্গীর এবং সমকাল প্রতিনিধি সোলায়মান হোসেন থানায় পৃথক দুটি অভিযোগ করেছেন।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, গত ৪ ফেব্রুয়ারি দৈনিক মানবকন্ঠ পত্রিকায় ‘সরিষাবাড়ীতে নিজের পুকুরে সরকারি অর্থে পার্ক নির্মাণ: উন্নয়নের চেয়ে সৌন্দর্যবর্ধনে ব্যস্ত মেয়র’ এবং ২৬ ফেব্রুয়ারি বুধবার দৈনিক সমকালে ‘পৌর মেয়রের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ’ শিরোনামে পৃথক দু’টি সংবাদ প্রকাশিত হয়। সংবাদ প্রকাশের পর পৌরসভার মেয়র রুকুনুজ্জামান রোকন সাংবাদিকদের ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। তিনিসহ তার কিছু অনুসারীদের দিয়ে মানবকন্ঠ প্রতিনিধি কবি ও প্রাবন্ধিক জাকারিয়া জাহাঙ্গীর এবং সমকাল প্রতিনিধি সোলায়মান হোসেন হরেকের বিরুদ্ধে ফেসবুকে অশালীন মন্তব্য, মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো ও প্রাণনাশের হুমকি দেন। ২৩ ফেব্রুয়ারি রাত ৯টা ১৫মিনিটের দিকে মেয়র রোকন আরামনগর বাজারস্থ সাংবাদিক জাকারিয়া জাহাঙ্গীরের চেম্বারের সামনে ও মহিলা কলেজ মোড়ে দলবল নিয়ে শর্টগান উচিয়ে দিয়ে মহড়া দেন এবং ‘ওরে পাইলে গুলি করে মাথার খুলি উড়িয়ে দেব, নয়তো যেকোনোভাবে সাইজ করে জীবনের তরে শিক্ষা দেব’Ñ বলে হুমকি দিয়ে চলে যান।

এদিকে বুধবার সকাল সাড়ে ১১টায় কয়েকজন সাংবাদিক শিল্পকলা একাডেমির সামনের মোড়ে চা পান করাকালীন মেয়রের দেহরক্ষী এনাম লাভেন্ডার সমকাল সাংবাদিক সোলায়মান হোসেন হরেককে হুমকি প্রদান করেন। এ সময় তিনি বলেন, ‘সিরাজগঞ্জে মেয়রের গুলিতে সমকালের এক সাংবাদিক মারা গেছে, সরিষাবাড়ীতেও কি এমন নজির ঘটাতে হবে’? বলেই তিনি স্থান ত্যাগ করে পৌরসভায় বসা মেয়রের কাছে চলে যান।

এ বিষয়ে সাংবাদিক জাকারিয়া জাহাঙ্গীর জানান, আওয়ামী লীগে অনুপ্রবেশকারী মেয়র রুকুনুজ্জামান তার আধিপত্য বিস্তার করতে নানারকম অনিয়ম দুর্নীতি করছে। এসব বিষয়ে সংবাদ প্রকাশ করায় সাংবাদিকদের উপর ক্ষিপ্ত হয়ে হত্যার হুমকি দিচ্ছেন। তাই তিনি দ্রুত মেয়রের বিচার দাবি করেন।

সরিষাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাজেদুর রহমান বলেন, ‘পৌর মেয়র কর্তৃক সাংবাদিককে হুমকির ঘটনায় দুটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। ঊর্র্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

(ঢাকাটাইমস/২৬ফেব্রুয়ারি/কেএম/এলএ)