মুজিববর্ষে মোদি এলে রক্তবন্যা বইবে: ভিপি নুর

প্রকাশ | ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ২১:১৮

ঢাবি প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে সাম্প্রদায়িক আখ্যা দিয়ে মার্চে শুরু হতে যাওয়া মুজিববর্ষের অনুষ্ঠানে তাকে অংশগ্রহণ করতে দেয়া হবে না বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন ডাকসু ভিপি নুরুল হক নুর। তিনি বলেন, ‘মোদির মতো সাম্প্রদায়িক ব্যক্তিকে কখনোই বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীর মতো মহৎ অনুষ্ঠানে আমরা অংশগ্রহণ করতে দেব না। মোদি বাংলাদেশে এলে ছাত্রসমাজের রক্তের গঙ্গা বয়ে যাবে।’

বুধবার বিকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সন্ত্রাস বিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে এক প্রতিবাদ সমাবেশে এসব কথা বলেন তিনি।

মোদি সরকার কর্তৃক ধর্মীয় সম্প্রীতি বিনষ্ট ও সিএএ নিয়ে আন্দোলনরতদের ওপরে সহিংস হামলা ও হয়রানির প্রতিবাদে এ সমাবেশের আয়োজন করেন নূরের সংগঠন ছাত্র অধিকার পরিষদ।

সমাবেশে নুর বলেন, বঙ্গবন্ধু কোনো দলের নেতা নয়। তিনি বাংলার সমস্ত শ্রেণি-পেশার মানুষের নেতা। তিনি বিশ্বের মুক্তিকামী মানুষের নেতা। তার জন্মদিনে কখনোই মোদি আসতে পারে না। মোদির মতো স্বীকৃত সাম্প্রদায়িক একজন দাঙ্গাবাজ যদি জাতির জনক শেখ মুজিবের জন্মবার্ষিকীতে আসে তাহলে বাংলাদেশের মানুষকে অপমান করা হবে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি অসম্মান করা হবে বলে মন্তব্য করেন নুর। এ সময় তিনি সরকারের প্রতি মুজিববর্ষে মোদিকে না আনার আহ্বান জানান। মোদিকে বাংলাদেশে আনা হলে ছাত্র সমাজকে নিয়ে প্রতিহত করার ঘোষণা দেন ভিপি নুর।

নুর বলেন, ‘মুজিববর্ষের অনুষ্ঠান একটি পবিত্র অনুষ্ঠান। এটি বাঙালির আশা-আকাক্সক্ষার দিন। আমরা যে যে রাজনৈতিক দল করি না কেন মানুষের মুক্তি সংগ্রামে বঙ্গবন্ধুর অবদানকে আমরা অস্বীকার করতে পারি না। বঙ্গবন্ধুর প্রতি আমাদের হক রয়েছে। সে জায়গা থেকে বঙ্গবন্ধুর অনুষ্ঠানকে মোদিকে এনে আমরা কলঙ্কিত করতে দেব না।’

বিজেপি সরকার সন্ত্রাসী সংগঠন আরএসএসের মদদপুষ্ট দাবি করে তিনি বলেন, ভারতের রাজনৈতিক দল বিজেপি দীর্ঘদিন ধরে চেষ্টা করে যাচ্ছে ভারতকে একটি কট্টর হিন্দুত্ববাদী রাষ্ট্রে পরিণত করার জন্য। তাদের এই উগ্র চিন্তা থেকেই তারা মহাত্মা গান্ধীকে হত্যা করেছিল।

ছাত্রসমাজকে উদ্দেশ্য করে নুর বলেন, ভারতের যে সাম্প্রদায়িক বিভাজনের প্রভাব যেন বাংলাদেশের না পড়ে সে ব্যাপারে আমাদের সজাগ থাকতে হবে। একটি চক্র কিন্তু ঘোলাটে পরিস্থিতি তৈরি করে ফায়দা লুটার চেষ্টা করবে। আপনারা যখন কথা বলবেন, বক্তব্য দেবেন। যৌক্তিক ভাষায় সমালোচনা করবেন। ধর্মীয় বিদ্বেষমূলক কোনো কমেন্ট বা পোস্ট করবেন না।

সমাবেশ ডাকসুর সমাজসেবা সম্পাদক আখতার হোসেন, ছাত্র অধিকার পরিষদের আহবায়ক হাসান আল মামুন, যুগ্ম আহবায় রাশেদ খান, ফারুক হোসেনসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের শতাধিক শিক্ষার্থী অংশ নেন। সমাবেশ শেষে ভাষ্কর্যের পাদদেশ থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন সংগঠনটির নেতারা। মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক পদক্ষিণ করে আবার রাজু ভাষ্কর্যে এসে শেষ হয়। এ সময় শিক্ষার্থীরা ‘দিল্লিতে হামলা হলে, জবাব দেবে বাংলাদেশ’, ‘হিন্দু-মুসলিম হয়েছে এক, খুনি মোদি গো ব্যাক’, ‘টেররিস্ট মোদি, গো ব্যাক’সহ বিভিন্ন স্লোগান দেন।

ঢাকাটাইমস/২৬ফেব্রুয়ারি/ইএস