বিয়েতে রাজি না হওয়ায় অপহরণের চেষ্টা, বাড়িঘর ভাঙচুর

ঝালকাঠি প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ২০:৪৪

ঝালকাঠির কাঠালিয়ায় মালয়েশিয়া প্রবাসীর পাত্রের বিয়ের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় এক কলেজছাত্রীকে অপহরণের চেষ্টা অভিযোগ পাওয়া গেছে। অপহরণে ব্যর্থ হয়ে ওই ছাত্রীর বাবাকে কয়েক ঘণ্টা অবরুদ্ধ রাখা হয় এবং তার ছোট মেয়েকে (দশম শ্রেণির ছাত্রী) তুলে নেয়ার এবং সপ্তম শ্রেণি পড়ুয়া একমাত্র পুত্রকে হত্যার হুমকি দেয়া হয়। এছাড়া ওই ছাত্রীর বাড়ি ও নানা বাড়িতে তিন দফা হামলা-ভাঙচুর করে নগদ টাকা ও স্বর্ণালঙ্কার লুট করারও অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ সময় মা-বাবা ও মামাকেও বেধড়ক মারধর করা হয়।

ওই ছাত্রী স্থানীয় শফিউদ্দীন টেকনিক্যাল কলেজের এইচএসসি পরীক্ষার্থী এবং পশ্চিম চেঁচরি গ্রামের মাদ্রাসার শিক্ষক শামীম হোসেনের মেয়ে।

গত বৃহস্পতিবার উপজেলা পশ্চিম চেঁচরী কেখালী বাজার এলাকায় সকাল ১০টা থেকে দুপুর দুইটা পর্যন্ত এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ছাত্রীর মামা উত্তর তালগাছিয়া গ্রামের জাকির হোসেন খান বাদী হয়ে ওই রাতেই কাঁঠালিয়া থানায় অপহরণের মূলহোতা মিরাজ খান, পলাশ, সাইফুল ইসলাম, মারুফ হোসেন, তুষার, মহিউদ্দীন ও রিয়া মনি আক্তারসহ আরো ৫/৬ জন অজ্ঞতনামা আসামি করে মামলা করেন।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার পশ্চিম চেঁচরী গ্রামের বাসিন্দা শামীম হোসেন খানের মেয়ের সাথে একই বংশের মালয়েশিয়া প্রবাসী মোশারফ হোসেনের পুত্র মহিউদ্দিনের জন্য মহিষকান্দি গ্রামের স্পেন প্রবাসী মিরাজ ও তার ভাই মালয়েশিয়া প্রবাসী পলাশ, সাইফুল, মারুফ, তুষার ও রিয়া মনিসহ এদের পরিবারের লোকজন বিয়ের প্রস্তাব দিয়ে আসছিল। অশিক্ষিত প্রবাসী ছেলের সাথে বিয়ের এ প্রস্তাবে মেয়ে ও তার মা-বাবা রাজি না হওয়ায় প্রবাসী পাত্র মহিউদ্দীন ও সহযোগী প্রবাসী দুই চাচাতো ভাই গত ১০/১৫ দিন পূর্বে মালয়েশিয়া ও স্পেন থেকে দেশে আসেন এবং মেয়ে ও তার মা-বাবাসহ পরিবারের লোকজনকে বিভিন্নভাবে হুমকি দেন। শামীম হোসেন খান নিরুপায় হয়ে নিরাপত্তার জন্য তার মেয়েকে নানা বাড়িতে রাখেন। গত বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে মিরাজ ও পাত্র মহিউদ্দীনের নেতৃত্বে ১৫/২০ জন রামদা, লোহার রড, হাতুরি ও লাটিসোটা নিয়ে ওই মেয়েকে জোরপূর্বক তুলে দেয়ার জন্য শামীম হোসেন খানের বাসার লোহার গেটের তালা ভেঙে ভেতরে ঢুকে। মেয়েকে না পেয়ে উত্তেজিত হয়ে ঘরে টিভি ও আসবাবপত্র এবং বাসার পাকা বৈঠক ভাঙচুর চালায়। এ সময় মেয়ের মা মাহামুদা ছবি, পিতা শামীমকে বেধড়ক মারধর করে ঘরে নগদ এক লাখ টাকা ও দুই ভরি স্বর্ণালঙ্কার নিয়ে যায়। পরে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সংঘবদ্ধ এ দলটি দ্বিতীয় দফায় উপজেলা উত্তর তালগাছিয়া গ্রামের মেয়ের মামা জাকির হোসেনের ঘরে হামলা চালায় এবং পাত্রীকে অপহরণের চেষ্টা করে। এ সময় ওই বাড়ির লোকজন এবং এলাকাবাসী এগিয়ে এলে তাদের প্রতিরোধে অপহরণ করতে ব্যর্থ হয় চক্রটি। এ সময় বাড়ির মালিক জাকির হোসেনকেও মারধর করা হয়। পরে তৃতীয় দফায় হামলা ও ভাঙচুর চালানো হয় মেয়ের বাবার বাড়িতে। এরপর অপহরণ চক্রটি মেয়ের বাবা শামীম খানকে চার ঘণ্টা বাসায় অবরুদ্ধ করে নিজের মোবাইল ফোন দিয়ে জোরপূর্বক জাকিরকে নানা বাড়ি থেকে তার মেয়ে নিয়ে বাসায় আসতে বলেন, যদি ওকে নিয়ে না আসা হয়- তাহলে তার ছোট মেয়েকে তুলে নিয়ে যাবে এবং ওই পাত্র মহিউদ্দীনের কাছে তার বিয়ে দেবে এবং ১২ বছর বয়সী একমাত্র ছেলেকেও হত্যার হুমকি দেয় আসামিরা। পরে মামা জাকির হোসেন পুলিশ ও স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের সহযোগিতায় অবরুদ্ধ শামীম হোসেন খান ও তার ছোট ছেলে এবং মেয়েকে উদ্ধার করে।

সাবেক ইউপি সদস্য সেন্টু বলেন, আমি ভাঙচুর করতে দেখেছি। আমি এর সাথে জড়িত নই। কোন সাংবাদিককে বাধা দেইনি। তারা উভয়েই আত্মীয়।

মামলার বাদী জাকির হোসেন জানান, আমার ভাগ্নির উপযুক্ত বয়স না হওয়ায় এবং অপাত্রে মেয়েকে বিবাহ দিতে অস্বীকৃতি জানানোর কারণে আসামিরা সঙ্গবদ্ধভাবে আমার ভাগ্নিকে অপহরণের চেষ্টা করে।

কাঠালিয়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) কাজী সাখাওয়াত হোসেন জানান, বিয়ের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় ছাত্রীর বাসা-বাড়ি ভাঙচুর ও পরিবারকে জিম্মি করার ঘটনায় ওই ছাত্রীর মামা জাকির হোসেন গত বৃহস্পতিবার রাতে সাতজনের নাম উল্লেখ করে একটি মামলা করেছেন। আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

(ঢাকাটাইমস/২৮ফেব্রুয়ারি/এলএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :