‘ল্যাম্পপোস্ট নষ্ট থাকায় ঢাকায় ছিনতাই-অপরাধ বাড়ছে’

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ২৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ১৪:০৩ | প্রকাশিত : ২৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ১৩:৫৫

ঢাকা মহানগরীর বেশকিছু এলাকায় রাস্তার ল্যাম্পপোস্ট নষ্ট এবং অলিগলি অন্ধকারাচ্ছন্ন থাকায় ছিনতাইয়ের মতো অপরাধ বাড়ছে বলে জানিয়েছেন ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) আব্দুল বাতেন। দায়িত্বশীলদের নজর দেয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, এ বিষয়ে নজর না দিলে অপরাধ বন্ধ করা সম্ভব হচ্ছে না।

শনিবার রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে ৪২ জন চিহ্নিত ছিনতাইকারীদের গ্রেপ্তার নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন আব্দুল বাতেন।

গত শুক্রবার থেকে শনিবার ভোর পর্যন্ত ডিবির সব বিভাগ একসঙ্গে অভিযান চালিয়ে এসব ছিনতাইকারীদের গ্রেপ্তার করে। এরা সকলেই পেশাদার ছিনতাইকারী এবং অনেকের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় মামলা আছে। তাদের কাছ থেকে ৮৫টি ছিনতাই হওয়া মোবাইল, চাপাতি ও ধারালো অস্ত্র উদ্ধার করা হয়।

ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে আব্দুল বাতেন বলেন, ‘ঢাকা মহানগর এলাকার রাস্তায় ল্যাম্পপোস্ট আছে সেগুলো বেশিরভাগ নষ্ট এবং গলিগুলো অন্ধকারাচ্ছন্ন থাকে। এতে ওসব এলাকায় ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। যেসব এলাকায় এমন অবস্থা আমাদের দায়িত্বশীলদের নজর দেওয়া দরকার।’ এক্ষেত্রে নগরবাসিকেও ওইসব এলাকা দিয়ে চলাচলের সময় সতকর্তা অবলম্বন করতে হবে।

অভিযান অব্যাহত থাকবে জানিয়ে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) জানান, ‘ছিনতাইকারীরা সুযোগ পেলেই ছিনতাই কাজটি করে। তাদের আইনের আওতায় এনে পূর্ণাঙ্গ সাজার ব্যবস্থা না করা হলে অপরাধ কমানো সম্ভব হবে না। বেশির ভাগ সময় বাস-লঞ্চ টার্মিনাল এবং অন্ধকার গলিতে ছিনতাই হয়ে থাকে। আর সেটা গভীর রাত থেকে ভোর পর্যন্ত।’

বসুন্ধরা, মোতালেব প্লাজায় বিক্রি হয় ছিনতাই করা মোবাইলের পার্স

আব্দুল বাতেন বলেন, ছিনতাই মোবাইল কোথায় যায় এটা নিয়ে তদন্ত করতে গিয়ে আমরা দেখেছি ছোটখাটো যে মোবাইল পার্সের দোকান আছে তারা এসব চোরাই মোবাইল কিনে থাকে। বসুন্ধরা, মোতালেব প্লাজার অনেক দোকানদার আছে যারা এসব চোরাই মোবাইল কিনে থাকে। এসব মোবাইল সরাসরি মানুষের কাছে বিক্রি করে না। বিশেষ করে কারও মোবাইল নষ্ট হয়ে গেলে চোরাই মোবাইলের পার্স খুলে বিক্রি করা হয়। এসব পার্স বিক্রি করলে যে লাভ হয় তা মোবাইল বিক্রি করলেও হয় না। চোরাই মোবাইলের বিক্রি ও কেনার সঙ্গে কারা জড়িত তাদেরকে আমরা চিহ্নিত করেছি। অচিরেই সেসব জায়গায় অভিযান চালানো হবে।’

‘বড় বড় মার্কেটের যেসব ব্যবসায়ীরা এসব মোবাইল বেচাকেনার সঙ্গে জড়িত তাদেরকে বলতে চাই এটা অপরাধ। এসব কাজে অবশ্যই আপনারা (ব্যবসায়ী) সতর্ক হন। কারণ আমাদের এই অভিযান চলবে। ফলে ছিনতাইকারী বা টানা পাটি আছে তাদের আধিপত্য হ্রাস পাবে।’

মধ্যরাত থেকে ভোর পর্যন্ত ছিনতাই বেশি হয়, এজন্য পুলিশের পক্ষ থেকে কি ধরণের ব্যবস্থা নেওয়া হবে জানতে চাইলে আব্দুল বাতেন বলেন, ‘যেসময় গুলোতে এ ধরণের কর্মকাণ্ড ঘটে তা বন্ধ করতে আমরা বাস-লঞ্চ টার্মিনালগুলোতে টহল জোরদার করব সঙ্গে গোয়েন্দানজরদারিও বাড়ানো হবে। বিশেষ করে ওই সব এলাকায় চিহ্নিত ছিনতাইকারী যারা তাদেরকে আইনের আওতায় আনা হবে।’

শনিবার ভোরে কমলাপুরে রেলওয়ে স্টেশনের কাছে ব্যাগ ছিনিয়ে নেওয়ার সময় রিকশা থেকে পরে তারিনা বেগমের মৃত্যু বিষয়ে সাংবাদিকরা করা এক প্রশ্নের জবাবে আব্দুল বাতেন বলেন, ‘আমরা বিষয়টি অনুসন্ধান করছি। এই ব্যাপারে মামলা হবে। যারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে তারা অবশ্যই আইনের আওতায় আসবে।’

ছিনতাই হলেই থানায় অভিযোগ করুন

ছিনতাইয়ের ঘটনায় নগরবাসী মামলা করতে নিরুসাহিত হয় এর কারণ কী পুলিশের কোন দায়? এমন প্রশ্নে বাতেন বলেন, ‘দায় বললে হবে না, এটা দায়িত্বশীলতা।

নাগরিক হিসেবে আপনার দায়িত্ব- কোথাও কোন অপরাধ হলে তা থানায় গিয়ে অভিযোগ দেওয়া। তাছাড়া পুলিশের পক্ষে সম্ভব হয় না অপরাধ সম্পর্কে জানা কিংবা অপরাধীকে সনাক্ত করা। নগরবাসীকে বলতে চাই, আপনারা থানায় যাবেন অভিযোগ দেবেন। থানা যদি মামলা বা অভিযোগ নিতে অপরাগতা প্রকাশ করে তাহলে তা আমাদের উর্ধ্বতনদের জানাবেন। তাহলে আমরা ব্যবস্থা নেবো।’

বহিষ্কৃত যুবলীগ নেত্রী পাপিয়াকে রিমান্ডে এনে কী জানতে চাওয়া হচ্ছে এমন প্রশ্নের জাবাবে তিনি বলেন, ‘তার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ উঠেছে আমরা তা তদন্ত করছি। তার বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা এবং ক্রিমিনাল অপরাধ সেগুলো চিহ্নিত করছি।’ আমরা জানাবো বিষয়টি আপনাদের।

ঢাকাটাইমস/২৯ফেব্রুয়ারি/এসএস/এমআর

সংবাদটি শেয়ার করুন

জাতীয় বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :