প্রধানমন্ত্রী বরাবর ছাত্রলীগ নেতার অভিযোগ

সরিষাবাড়ীতে ‘রাজাকারের নাতি’ নৌকা প্রতীকের মেয়র!

সাইমুম সাব্বির শোভন, জামালপুর
 | প্রকাশিত : ০৩ মার্চ ২০২০, ২২:৩৬

সরিষাবাড়ী পৌরসভার মেয়র রুকুনুজ্জামান রোকনের বিরুদ্ধে ন্বাধীনতাবিরোধী পরিবারের সংশ্লিষ্টতা, দলের মধ্যে বিশৃঙ্খলা ও ক্ষমতার অপব্যবহার, কমিশন ও নিয়োগ বাণিজ্যসহ বিভিন্ন অভিযোগ এনে প্রধানমন্ত্রী বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন স্থানীয় এক ছাত্রলীগ নেতা।

অভিযোগ করা হয়, মেয়র রোকনের দাদা মৃত আব্দুল গফুর মাস্টার ৭১-এর স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় শান্তি কমিটির সংগঠক ছিলেন। দেশ স্বাধীন হলে একাত্তরের ১৬ ডিসেম্বর তিনি ঘাতক-দালাল আইনে গ্রেপ্তার হন এবং দীর্ঘদিন কারাবাস করেন।

রোকনের হাত থেকে নৌকা প্রতীক রক্ষা ও মেয়রের দুর্নীতির বিচার দাবিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বরাবর ওই লিখিত অভিযোগ করেন সরিষাবাড়ী শহর ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মাসুদুর রহমান।

তাতে সামনের পৌর নির্বাচনে রুকনুজ্জামান রোকনকে মেয়র পদে মনোনয়ন না দিতে দাবি করেন তিনি।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, রুকনুজ্জামান রোকন ২০১৫ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি বিএনপি থেকে আওয়ামী লীগে যোগ দেন। তারপর তাকে দেয়া হয় সরিষাবাড়ী পৌর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতির পদ। যোগদানের সাত মাসের মাথায় আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়ে নৌকা প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে মেয়র নির্বাচিত হন।

গত চার বছর ধরে মেয়রের দায়িত্ব পালন করছেন রোকন। আগামী বছর খানেকের মধ্যে পৌরসভা নির্বাচন। এই সময়ে রোকনের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ দেয়া হলো প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে।

তাতে বলা হয়, মেয়র রোকন বিএনপি-জামায়াতপন্থীদের সঙ্গে ওঠাবাসা করেন। বিএনপির নেতাকর্মীদের নিয়োগ, চিহ্নিত কিছু মাদকসেবীকে মাস্টার রোলে নিয়োগ দিয়ে মেয়রের ব্যক্তিগত মহড়ায় ব্যবহার, ঠিকাদারদের নামমাত্র কার্যাদেশ দিয়ে নিজেই নিম্নমানের উন্নয়ন কাজ বাস্তবায়ন করেন। বিভিন্ন সময় বিভিন্ন নেতার পক্ষে অবস্থায় নেয়ায় তার জন্য দলের মধ্যে বিশৃঙ্খলা বিরাজ করে বলে অভিযোগ তোলা হয়।

আরও অভিযোগ করা হয়, টেন্ডারবাজি, কমিশন ও নিয়োগ বাণিজ্য, প্রকাশ্য অস্ত্রের মহড়া ও সাংবাদিকদের হত্যার হুমকিসহ নানা কারণে চার বছরে তাকে নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা চলছে।

মেয়র রুকনুজ্জামান রোকনের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ করা হয়েছে প্রধানমন্ত্রী বরাবর, সেটি প্রধানমন্ত্রীর কার্যঅলয়ে গ্রহণ করা হয় গত ২৭ ফেব্রুয়ারি। এর অনুলিপি দেওয়া হয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসান, জামালপুর জেলা আওয়ামী লীগ, জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, সরিষাবাড়ী উপজেলা আওয়ামী লীগ, উপজেলা নির্বাহী অফিসার, জামালপুর প্রেসক্লাব ও সরিষাবাড়ী পৌরসভাকে ওই চিঠির অনুলিপি দেয়া হয়।

অভিযোগ সম্পর্কে জানতে মেয়র ও পৌর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি রুকুনুজ্জামান রোকনের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি।

সরিষাবাড়ী উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সদ্য সাবেক কমান্ডার মোফাজ্জল হোসেন জানান, ‘মেয়র রুকনের দাদা গফুর মাস্টার ট্রেনিংপ্রাপ্ত রাজাকার ছিলেন না; তবে রাজাকাররা তার কথা মেনে চলত।’

উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও মুক্তিযুদ্ধকালীন কমান্ডার মুক্তিযোদ্ধা এম এ লতিফ বলেন, ‘মেয়রের দাদা রাজাকার ছিল, এটা সকলেই জানে। তিনি (রোকন) আওয়ামী লীগের মনোনয়নে নির্বাচিত হওয়ায় দলের জন্য কতটুকু লাভ হয়েছে, তা তার নিয়োগ থেকেই বোঝা যায়।’

এম এ লতিফ আরেও বলেন, ‘পৌর কর্মচারী নিয়োগের সময় একজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তানকে নিয়োগের জন্য দলীয় নেতারা ও মুক্তিযোদ্ধারা মেয়রকে সুপারিশ করেছিলেন। কিন্তু তাকে নিয়োগ হয়নি। যাদের নিয়োগ দেয়া হয়েছে, তারা প্রত্যেকেই স্বাধীনতাবিরোধী পরিবারের সন্তান।’

(ঢাকাটাইমস/৩মার্চ/মোআ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

ফেসবুক আইডি ক্লোন করে প্রতারণার মাধ্যমে অর্থ আত্মসাৎ, যুবক গ্রেপ্তার

ফরিদপুর প্রেসক্লাবের নবনির্বাচিত নেতৃবৃন্দের সঙ্গে পুলিশ সুপারের মতবিনিময়

পতেঙ্গায় ফিশিং বোটের ইঞ্জিন বিস্ফোরণে ৪ জন দগ্ধ

চট্টগ্রামে ঈদকে সামনে রেখে জালনোট চক্রের ৩ সদস্য গ্রেপ্তার

বরিশালে নামাজের সময় মসজিদের এসি বিস্ফোরণ

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে দ্রুতগতির লেনে যাত্রী নামানোর অপরাধে ৩৩ যানবাহনকে মামলা 

বরগুনা প্রেসক্লাব দখলের মামলায় ৭ জন কারাগারে  

পর্যটকদের আকৃষ্ট করছে তাহিরপুরের শহীদ সিরাজ লেক

ঝিনাইদহে ভর্তুকি মূল্যে টিসিবির পণ্য বিক্রি শুরু

ঢাকা-ময়মনসিংহ সড়কে বেতন বৃদ্ধির দাবিতে শ্রমিকদের বিক্ষোভ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :