৩২ বছর পর হবিবুনের শিকল ছিঁড়ল

বড়লেখা (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ০৪ মার্চ ২০২০, ২১:৪৭

মৌলভীবাজারের বড়লেখায় ৩২ বছর ধরে শিকলবন্দি মানসিক ভারসাম্যহীন হবিবুন নেছাকে (৫৮) গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় উদ্ধার করেছেন থানার ওসি ইয়াছিনুল হক। পরে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বড়লেখা সদর ইউনিয়নের জফরপুর গ্রামের বাসিন্দা মুহিবুর রহমান। তার স্ত্রী হবিবুন নেছার মস্তিষ্কে সমস্যা দেখা দিলে দুই ছেলে ও এক মেয়েকে সঙ্গে নিয়ে অন্য নারীকে বিয়ে করে নতুন সংসার শুরু করেন। খোঁজ নেননি মানসিক রোগী স্ত্রীর। দুই ছেলে ও মেয়ে বড় হয়েও মানসিক রোগী মায়ের খোঁজ রাখেনি।

প্রায় ৩২ বছর ধরে হবিবুন নেছার বড়ভাই ইসলাম উদ্দিন বোনের দেখাশোনা করছেন। পাকা বসতঘরের উত্তর দিকের একটি ঝুপড়ি ঘরে শিকল ও রশি দিয়ে তাকে বেঁধে রাখা হয়। কঙ্কালসার হবিবুন নেছা শুধু ফেল ফেল করে তাকিয়েই থাকেন। কথা বলতে গিয়ে দুর্বল শরীরের কারণে কোনো কিছুই স্পষ্ট করতে পারেননি।

বড় ভাই ইসলাম উদ্দিন জানান, বিয়ের পাঁচ-ছয় বছরের মধ্যেই ছোট বোনের মাথায় সমস্যা দেখা দেয়। অনেক চিকিৎসাতে কাজ হয়নি। স্বামী ও ছেলে-মেয়েরা খোঁজ-খবর নেয় না। ভাগ্নে নাজিম উদ্দিন ও আলা উদ্দিন বিয়ে করেছে। উত্তর চৌমুহনায় তাদের ফার্নিচারের ব্যবসা রয়েছে। তারাও তাদের মায়ের খোঁজ রাখে না।

তিনি জানান, খুলে দিলে বিভিন্ন মানুষের বাড়িতে গিয়ে ক্ষতি করে। তাই হাবিবুনকে এভাবে বেঁধে রেখেছেন।

বড়লেখা থানার ওসি ইয়াছিনুল হক বলেন, স্ত্রী কিংবা মা পাগল হলেও স্বামী ও সন্তানদের নৈতিক দায়িত্ব তার চিকিৎসার ব্যবস্থা নেয়া, ভরনপোষণ দেয়া ও সেবা করা। ৩২ বছর ধরে একজন মানসিক রোগীকে নোংরাস্থানে এভাবে বেঁধে রাখা অত্যন্ত অমানবিক। মৌলিক অধিকারের চরম লঙ্ঘন। স্বামী ও সন্তানদের সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন।

(ঢাকাটাইমস/৪মার্চ/কেএম/এলএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :