ওয়াহিদুল হক মিলনায়তনের দাবিতে শেষ হলো কণ্ঠশীলনের উৎসব

প্রকাশ | ০৮ মার্চ ২০২০, ২০:২৩ | আপডেট: ০৮ মার্চ ২০২০, ২১:০৪

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

সাহিত্যের বাচিক চর্চা ও প্রসার প্রতিষ্ঠান কণ্ঠশীলনের আয়োজনে শেষ হলো ওয়াহিদুল হক স্মারণিক মিলনোৎসব-২০২০।

ঢাকা কেন্দ্রীয় গণগ্রন্থাগারের শওকত ওসমান স্মৃতি মিলনায়তনে শুক্র ও শনিবার দুই দিনব্যাপী এ উৎসব হয়। এবার উৎসবের প্রতিপাদ্য ছিল মানুষের চেয়ে বড় কিছু নাই, নহে কিছু মহীয়ান’। 

বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবর্ষে আয়োজিত এই মিলনোৎসবের দ্বিতীয় দিন ঐতিহাসিক ৭ই মার্চ উপলক্ষে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্মরণে উদ্যাপিত হয়। বিকাল তিনটায় সত্যেন সেন শিল্পীগোষ্ঠীর গানের মাধ্যমে দ্বিতীয় দিনের অনুষ্ঠানের শুরু হয়। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক রইস উল ইসলামের বক্তব্য ও কবিতা আবৃত্তি দর্শকের মধ্যে উদ্দীপনার সৃষ্টি করে। আরও আবৃত্তি করেন বিলকিস আহমেদ, নরোত্তম হালদার, সালাম খোকন ও অনন্যা গোস্বামী।

উৎসবে ষন্নবতি আবর্তনের শিক্ষার্থীরা।

ওয়াহিদুল হকের সঙ্গে দীর্ঘদিনের পথচলার বর্ণনা দিতে গিয়ে বক্তারা বলেন, ওয়াহিদ ভাই এর বন্ধু তালিকায় যেমন দেশসেরা বিজ্ঞানীদের দেখা যায় তেমনি তার বন্ধু তালিকায় কাজের মানুষও বাদ পরে না। সবার প্রাণের আপনজন ছিলেন ওয়াহিদুল হক। তার আদর্শ ও লক্ষ্য নিয়েই কণ্ঠশীলন এখনও পথ চলছে, ভবিষ্যতেও চলবে। আবর্তন উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের স্মৃতিচারণ পর্বে শিক্ষার্থীরাও কণ্ঠশীলন নিয়ে তাদের ভাবনা বিনিময় করেন। উৎসবে কণ্ঠশীলন পরিচালিত শুদ্ধ উচ্চারণ ও আবৃত্তি শিক্ষার চতুর্নবতি, পঞ্চনবতি ও ষন্নবতি আবর্তনের শিক্ষার্থীদের মাঝে সনদ বিতরণ করেন বীর মুক্তিযোদ্ধা ম. হামিদ।

শিশু সংগঠন কল্পরেখার দলীয় আবৃত্তি পরিবেশন শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশনের সেক্রেটারি জেনারেল কামাল বায়েজিদ।

অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, ‘ওয়াহিদুল হক ছিলেন বাংলাদেশের সংস্কৃতি, সংগীত জগতের পুরোধা ব্যক্তিত্ব। যিনি ব্যক্তিগত চাওয়া-পাওয়া ঊর্ধ্বে থেকে মানুষের জন্য কাজ করে গেছেন। তিনি আমাদের ছেড়ে গেছেন এক যুগেরও অধিক হয়ে গেছে। অথচ ওয়াহিদুল হককে স্মরণ করে রাষ্ট্রীয় কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয় নি। আমরা আবেদন জানাই ওয়াহিদুল হক মিলনায়তন নামে একটি প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা হোক রাষ্ট্রীয়ভাবে। যেখানে আবৃিত্তসহ সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড আবর্তিত হবে।’ 

শিক্ষক মীর বরকতের সঙ্গে ষন্নবতি আবর্তনের শিক্ষার্থীরা।

উৎসবে কণ্ঠশীলনের নতুন আবৃত্তি প্রযোজনা ‘বঙ্গবন্ধু: ভালোবেসে হৃদয়ে রেখেছি’-এর প্রথম মঞ্চায়ন অনুষ্ঠিত হয়। প্রযোজনাটির রচনা ও গ্রন্থনা করেছেন হাসান জাহাঙ্গীর এবং নির্দেশনা দিয়েছেন মীর বরকত। প্রযোজনাটির উদ্বোধন করেন মুক্তিযোদ্ধা, আবৃত্তিশিল্পী আশরাফুল আলম।

শিক্ষক গোলাম সারওয়ারের সঙ্গে শিক্ষার্থীরা।

একক আবৃিত্ত করেন দেশের প্রথিতযশা আবৃত্তিশিল্পীরা। তারা হলেন- আশরাফুল আলম, মাসকুর-এ-সাত্তার কল্লোল, কবি লিলি হক, পদ্মাবতী দেবী, কবি দিনার সুলতানা বিন্তী, আখতার হোসেন, নাজমুল আহসান, নায়লা তারান্নুম চৌধুরী কাকলি, তামান্না তিথি, অনিমেষ কর, নিমাই মণ্ডল, মিজানুর রহমান সজল, মীর মাশরুর জামান রনি, মনিরুল ইসলাম, সৈয়দ শহিদুল ইসলাম নাজু, মাশরুক টিটু, নাসিমা খান বকুল, অনন্যা সাহা, সাবিরা মাহবুব জনি, জালাল উদ্দিন হীরা, হাসান মাহদী লাল্টু ও নাজনীন নাজ। জনি বয়াতি ও তার দলের মনোমুগ্ধকর বাউল সংগীতের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিলো বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে জারিগান পরিবেশন। জাতীয় সংগীতের মধ্য দিয়ে দুই দিনের এই আনন্দযজ্ঞের সমাপ্তি ঘটে।

ঢাকাটাইমস/০৮মার্চ/ইএস