৬১ মুক্তিযোদ্ধার ভাতা বন্ধের প্রতিবাদে বিক্ষোভ

প্রকাশ | ০৯ মার্চ ২০২০, ২২:৩৫

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগরে ৬১ জন মুক্তিযোদ্ধার ভাতা বন্ধের প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছেন স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা। সোমবার পুলিশি বাধার কারণে মুক্তিযোদ্ধারা বিক্ষোভ মিছিল বের করার চেষ্টা চালায়। পরে সেখানে দাঁড়িয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন মুক্তিযোদ্ধারা।

সকাল সাড়ে ১০টায় উপজেলা পরিষদের সামনে আয়োজিত মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেন সাবেক উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার হাবিলদার তারা মিয়া।

কর্মসূচিতে বক্তব্য দেন- খ্যাতনামা নারী মুক্তিযোদ্ধা সায়রা বেগম, মুক্তিযোদ্ধা কাজী হারিসুর রহমান, উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও মুক্তিযোদ্ধা সন্তান জহিরুল ইসলাম ভূঞা, বুধন্তি ইউপি চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা জিতু মিয়া, ইছাপুরা ইউপি চেয়ারম্যান ও মুক্তিযোদ্ধা সন্তান জিয়াউল হক বকুল, সিঙ্গারবিল ইউপি চেয়ারম্যান মনিরুল ইসলাম ভূঞা, পাহাড়পুর ইউপি চেয়ারম্যান ও মুক্তিযোদ্ধা সন্তান আবুল কালাম আজাদ, বিজয়নগর প্রেসক্লাব সভাপতি মৃনাল চৌধুরী লিটন, চান্দুরা ইউপি চেয়ারম্যান এমএ সামিউল হক চৌধুরী প্রমুখ।

বক্তারা বলেন, ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে হেলাল মোর্শেদ, মেজর জেনারেল সাঈদ, মেজর জেনারেল নাসিম, সেনা প্রধান কেএম সফিউল্লাহর নেতৃত্বে ছায়েরা বেগমসহ মুক্তিযোদ্ধারা যুদ্ধে অংশ নেন। তাদের সার্টিফিকেটেরভিত্তিতেই মুক্তিযোদ্ধাদের সব সুযোগ-সুবিধা ও ভাতা ২০০১ সালের জুন মাস থেকে পর্যায়ক্রমে সব মুক্তিযোদ্ধা ভাতা পেয়ে আসছিলেন। হঠাৎ ১৮ ফেব্রুয়ারি মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় ও মন্ত্রীর উদ্ধৃতি দিয়ে বিজয়নগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এক লিখিত নির্দেশে ৬১ জন মুক্তিযোদ্ধার ভাতা স্থগিত করেন। সেখানে বলা হয়, এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রীর টেলিফোনিক নির্দেশনা রয়েছে। পাশাপাশি মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের বাজেট শাখারও নির্দেশনা রয়েছে। ভাতা বন্ধ এবং ভাতার টাকা ফেরতের ঘটনায় নিন্দা জানিয়ে বিষয়টি সমাধানে দ্রুত প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন ভাতা থেকে বঞ্চিত মুক্তিযোদ্ধারা।

উল্লেখ্য, মুক্তিযুদ্ধের সময় যে কয়জন নারী মুক্তিযোদ্ধা অস্ত্র হাতে দুঃসাহসী ভূমিকা রেখেছিলেন এর মধ্যে সায়রা বেগম অন্যতম। ‘মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশ’ শীর্ষক জেনারেল শফিউল্লাহ লেখা গ্রন্থ এবং একাত্তরের ‘কন্যা জায়া জননী’ শীর্ষক মেজর কামরুল হাসান ভূইয়া’র লেখা গ্রন্থে ঐতিহাসিক মুকুন্দপুরযুদ্ধে সায়রা বেগমের ভূমিকা ও অবদানের বর্ণনা লিপিবদ্ধ রয়েছে। সায়রা বেগম জীবনের সর্বস্ব হারিয়ে সংগ্রহ করা সামরিক গোয়েন্দা তথ্যে মুকন্দপুরে মুক্তি ও মিত্রবাহিনীর যৌথ আক্রমণে শতাধিক পাকিস্তানি সেনা নিহত, আহত ও বন্দি হয় এবং প্রচুর সমরাস্ত্র হস্তগত হয়। ৯ মাসের মুক্তিযুদ্ধের এটাই একমাত্র যুদ্ধ যেখানে মুক্তি ও মিত্রবাহিনীর পক্ষে একজনও হতাহত হয়নি।

বিজয়নগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মেহের নিগার বলেন, মুক্তিযোদ্ধা হওয়ার জন্য কিছু তথ্য প্রমাণের নির্দেশনা দেয়া হয়। যাদের কাগজ নেই কিংবা কাগজ জমা দিতে পারেননি তাদের তালিকা থেকে বাদ দিয়ে ভাতা ফেরত দিতে বলা হয়েছে।

(ঢাকাটাইমস/৯মার্চ/কেএম/এলএ)