‘নারী অধিকারের বীজ বপন করেছেন শেখ হাসিনা’

প্রকাশ | ১০ মার্চ ২০২০, ২১:০৯

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

নারীর অধিকার আদায়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে বীজ বপন করেছেন সেটার প্রভাব আগামী দিনগুলোতে ভালোভাবেই পড়বে বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম। একইসঙ্গে দেশে গত পঞ্চাশ বছরে নারীর ক্ষমতায়নে শেখ হাসিনার অবদান সরিয়ে নিলে ভয়াবহ চিত্র ফুটে উঠে বলেও মন্তব্য করেন প্রতিমন্ত্রী।

মঙ্গলবার জাতীয় প্রেসক্লাবে আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে ‘উইমেন লিডারশিপ ইন মিডিয়া’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় প্রতিমন্ত্রী এমন মন্তব্য করেন। ডিপ্লোম্যাটিক করেসপনডেন্ট অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ডিকাব) ওই সেমিনারের আয়োজন করে।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশে গত পঞ্চাশ বছরে যা ঘটেছে পণ্য , অর্থণীতি , শিক্ষা, টিকাদান, এসডিজি এগুলো বাদ দিয়ে যদি শুধুমাত্র নারীর ক্ষমতায়নে বাংলাদেশ যেখানে দাঁড়িয়ে আছে, সে জায়গাতে শেখ হাসিনার অবদান সরিয়ে নিলে ভয়াবহ চিত্র ফুটে উঠে।’

নারীর অধিকার আদায়ে প্রধানমন্ত্রীর অবদান তুলে ধরতে গিয়ে বর্তমান আফগাস্তিানের উদাহরণ টেনে আনেন শাহরিয়ার। বলেন, ‘নারীর অধিকার আদায়ের জন্য তিনি যে জায়গায় নিয়ে এসেছে,  আমরা যদি তালেবান শাসিত আফগানিস্তানকে উদাহরণ হিসেবে নিই বাংলাদেশ ন্যূনতম সেই অবস্থানেই থাকত।’

গত কয়েক বছরে প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকে প্রায় প্রত্যেক বছরই দেখা যায় ফলাফলের দিক বিবেচনায় ছেলেদের চেয়ে মেয়েরাই এগিয়ে থাকে। এই প্রসঙ্গ টেনে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘গত কয়েক বছরে মেয়েরা শিক্ষাক্ষেত্রে যে ভালো ফলাফল করছে এটার প্রভাব সামনে পড়বে। এখনো বিভিন্ন সেক্টরে যে পরিমাণ পুরুষ দেখা যাচ্ছে, একসময় সেখানে নারী এবং যোগ্য নারীদের দেখা যাবে। বীজ বপন হয়ে গেছে। প্রধানমন্ত্রী বীজ বপন করে দিছেন।’

প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের এখনো অনেক দূর যেতে হবে। নারীদের দায়িত্ব দিতে হবে। আমরা নারী-পুরুষের মধ্যে ভেদাভেদ রাখতে চাই না। এটাতে পুরুষদেরও সহযোগিতা লাগবে।’

শেখ হাসিনা সরকার নারীদের সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেন বলে জানান প্রতিমন্ত্রী। শাহরিয়ার বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী প্রথমে নারীদের মূল্যায়ন করেন। আমরা সংগ্রাম করছি এটাকে আরও ভালো অবস্থানে নিয়ে যেতে।’

আওয়ামী লীগ অতীতের চেয়ে দলীয় পদে বহুসংখ্যক নারীর ক্ষমতায়ন করেছে বলেও জানান প্রতিমন্ত্রী।

মিডিয়াতে নারীদের ক্ষমতায়ন নিয়ে কথা বলতে গিয়ে শাহরিয়ার আলম প্রেসক্লাবের সাধারন সম্পাদক ফরিদা ইয়াসমিন ও ইত্তেফাক সম্পাদক তাসমীমা হোসেনের উদাহরণ টেনে বলেন, ‘ওনারা যখন সাংবাদিকতায় নতুন ছিলেন সেই সময়ের সঙ্গে বর্তমান প্রেক্ষাপট টেনে আনলে দেখা যাবে এত অভাব অভিযোগের পরও সেই সংখ্যাটা অত্যন্ত দ্বিগুণ হয়েছে।’

মিডিয়া কর্ণধারদের নারীকর্মীদের আলাদাভবে না দেখে সবকর্মীদের সমানভাবে ট্রিট করার আহ্বান জানান প্রতিমন্ত্রী।

ডিকাব সভাপতি আঙ্গুর নাহারের সভাপতিত্বে জাতীয় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ফরিদা ইয়াসমিন তার বক্তব্যে বলেন, ‘নারীশক্তি একটা বড় শক্তি। এটা তার নিজেকেই বুঝতে হবে। নিজেকেই নিজের জন্য তৈরি হতে হবে। তাহলে তাকে আর কেউ দাবিয়ে রাখতে পারবে না। এক্ষেত্রে পুরুষদেরও দায়িত্ব নিতে হবে। অত্যন্ত এ বিষয়ে তাদের বলব, সহযোগিতা না করেন টেনে ধরবেন না।’

ইত্তেফাক সম্পাদক তাসমীমা হোসেন বলেন, ‘নারীর ক্ষমতায়নের জন্য আমাদের চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে। বেইজিং ঘোষণাপত্র অনুযায়ী, কর্মক্ষেত্রে ৫০ ভাগ নারীর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার যে বিষয়টি বলা হয়েছে সেটি প্রতিষ্ঠায় আমাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখার পাশাপাশি রাষ্ট্রকে আরও আন্তরিক হতে হবে।’

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন ঢাকায় নিযুক্ত সুইডিশ রাষ্ট্রদূত সার্লোটা স্লাইটার ও ইউএন উইম্যানে আবাসিক প্রতিনিধি সকো ইসিকাওয়া।

(ঢাকাটাইমস/১০মার্চ/এনআই/জেবি)