‘সাংবাদিকের বাড়িতে ৪০ জনের অভিযান কেন’

প্রকাশ | ১৫ মার্চ ২০২০, ২০:০০

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা টাইমস

কুড়িগ্রামে মধ্যরাতে একজন সাংবাদিকের বাড়িতে প্রশাসনের ৪০ জনের অভিযান কেন, বাড়িতে ঢুকে তাকে ডেকে নিয়ে নির্যাতন ও জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে কারাদণ্ড দেওয়ার ঘটনায় রাষ্ট্রপক্ষের কাছে কয়েকটি বিষয় জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট।

আজ রবিবার বিচারপতি মো. আশরাফুল কামাল ও বিচারপতি সরদার মো. রাশেদ জাহাঙ্গীরের হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেন। সোমবার এ বিষয়গুলো জানাবে রাষ্ট্রপক্ষ।

সাংবাদিক আরিফুল ইসলামকে দেওয়া সাজা ও দণ্ডের আদেশের অনুলিপি, অভিযান কারা পরিচালনা করেছে মোবাইল কোর্ট নাকি টাস্কফোর্স, রাতে অভিযান পরিচালনার বিষয়ে আইন অনুসারে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে কি না, অভিযান পরিচালনার কারণ এবং আইন অনুসারে ঘটনা কার সম্মুখে কখন সংঘটিত হলো তা জানাতে হবে।

কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসকের সঙ্গে যোগাযোগ করে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল দেবাশীষ ভট্টাচার্য্য সোমবার আদালতকে জানাবেন এসব বিষয়।  

আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী ইশরাত হাসান ও ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল দেবাশীষ ভট্টাচার্য্য।

বাংলা ট্রিবিউনের নির্বাহী সম্পাদক হারুন উর রশীদ জনস্বার্থে  হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় এ রিট আবেদন করেন।

আবেদনে টাস্কফোর্সের নামে আরিফুল ইসলামকে অবৈধ সাজা ও আটক করা কেন সংবিধান পরিপন্থী হবে না, আরিফুল ইসলামকে ৫০ লাখ টাকা কেন ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে না এ মর্মে রুল জারির আর্জি জানানো হয়েছে।

এ ছাড়া কুড়িগ্রামের ডিসি, সিনিয়র সহকারী কমিশনার, সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটকে তাদের ভূমিকার ব্যাখ্যা দেওয়ার জন্য তলবের নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে আরিফের বিরুদ্ধে করা ভ্রাম্যমাণ আদালতের মামলার নথি এবং টাস্কফোর্স পরিচালনার নথি তলব করা হয়েছে।

এদিকে দেশজুড়ে বিপুল সমালোচনার মুখে সাংবাদিক আরিফুল ইসলাম রিগ্যানকে ২৫ হাজার টাকায় অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. সুজাউদ্দৌলা রবিবার তাকে জামিন দেন।

কুড়িগ্রামে মধ্যরাতে সাংবাদিককে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে কারাদণ্ড দেওয়ার অভিযোগের তদন্ত করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। এরপর জেলা প্রশাসকসহ চার কর্মকর্তাকে কুড়িগ্রাম থেকে প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়।

সাংবাদিক আরিফুল ইসলামের পরিবারের অভিযোগ, শুক্রবার (১৩ মার্চ) মধ্যরাতে জেলা প্রশাসনের লোকজন তার বাড়িতে গিয়ে দরজা ভেঙে ঘরে ঢোকেন। পরে তাকে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে নিয়ে মারধর করা হয় এবং বাড়িতে ‘আধা বোতল মদ ও দেড়শ গ্রাম গাঁজা’ পাওয়ার অভিযোগ এনে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

সাংবাদিক আরিফের সহকর্মী ও পরিবারের দাবি, একটি পুকুর সংস্কার নিয়ে পত্রিকায় প্রতিবেদন করায় জেলা প্রশাসক মোছা. সুলতানা পারভীন ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে এভাবে শায়েস্তা করেছেন।

মধ্যরাতে সাংবাদিককে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে জেলে পাঠানোর ঘটনায় ব্যাপক সমালোচনার মধ্যে বিষয়টি আমলে নেয় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।

(ঢাকাটাইমস/১৫মার্চ/এআইএম/মোআ)