করোনাভাইরাসের ঝুঁকিতে টঙ্গীর ২১ বস্তি

টঙ্গী (গাজীপুর) প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ২৩ মার্চ ২০২০, ২০:৫১

বিশ্বব্যাপী মহামারি আকার ধারণ করা করোনাভাইরাসের কারণে উচ্চমাত্রার ঝুঁকিতে রয়েছে টঙ্গীর ছোট-বড় ২১টি বস্তি। এসব বস্তিতে থাকা মানুষের মাঝে এখনও পৌঁছায়নি হ্যান্ড সেনিটাইজার কিংবা সুরক্ষার কোনো জিনিস। বিশেষজ্ঞরা জানান, বস্তির অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ ও বহুলোক একত্রে বাস করায় তাদের এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার তীব্র ঝুঁকি রয়েছে।

সরেজমিনে বস্তিগুলোতে দেখা যায়, সচেতনতার কোনো কার্যক্রম নেই। বস্তির পরিবারগুলো এ ব্যাপারে সচেতন নয়। শিশুরা অবাধে খেলাধুলা করছে। জীবাণুমুক্ত থাকার জন্য সাবান ব্যবহার করছে না। বস্তির বাসিন্দাদের স্বাস্থ্যসেবায় নেই কোনো পৃথক স্বাস্থ্যকেন্দ্র।

গাজীপুর জেলা প্রশাসকের তথ্য মতে, টঙ্গীর ২১টি বস্তিতে প্রায় তিন লাখ মানুষ বসবাস করে। যদি কোনো বস্তির একজন ব্যক্তিও এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়, তাহলে সংক্রমণের ঝুঁকিতে পড়বে পুরো বস্তি। সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে থাকবে বৃদ্ধ ও শিশুরা। বস্তির অধিকাংশ বাসিন্দাই দরিদ্র। কেউ সিএনজি অটোরিকশাচালক, কেউ রিকশাচালক, কেউ বা সিকিউরিটি গার্ড, দিনমজুর বা পোশাক শ্রমিক। অন্যদিকে বেশিরভাগ নারীই বিভিন্ন বাসাবাড়িতে গৃহপরিচারিকার কাজ করেন।

টঙ্গীর এরশাদ নগর বস্তিতে বসবাস করেন মরিয়ম বেগম। তিনি গৃহকর্মী হিসেবে কাজ করেন। তিনি বলেন, যে বাসায় গৃহকর্মী হিসেবে কাজ করেন সেখানে বাধ্যতামূলকভাবে হ্যান্ড স্যানিটাইজার দিয়ে হাত ধুয়ে কাজ করতে হয়। কাপড় ধোয়া থেকে মেঝে সব কিছুতেই জীবাণুনাশক ব্যবহার করা হয়। কিন্তু আমরা এখানে ভাইরাস থেকে বাঁচতে কিছুই ব্যবহার করি না। এখানকার ঘরগুলোতে একসঙ্গে অনেক মানুষের বসবাস। ফলে কেউ আক্রান্ত হলে আলাদা করে রাখার কোনো সুযোগ নেই। সরকারিভাবেও আমাদের কোনো সুবিধা দেয়া হচ্ছে না।

বস্তিগুলোর আশপাশের ওষুধের ফার্মেসিগুলোতে কোনো হ্যান্ড স্যানিটাইজার নেই। তবে ফার্মেসি মালিকরা বলছেন, তাদের কাছে থাকা হ্যান্ড স্যানিটাইজার সব বিক্রি হয়ে গেছে।

আইন পেশায় কর্মরত ব্যাংক মাঠ বস্তির স্থায়ী বাসিন্দা নাসির উদ্দিন বলেন, করোনার প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে সবাইকে সচেতন থাকার জন্য বলে আসছি। কিন্তু কাউকেই এ ব্যাপারে সচেতন মনে হচ্ছে না। তিনি অভিযোগ করে বলেন, এখন পর্যন্ত সিটি করপোরেশনের কোনো সহযোগিতা আসেনি। কোনো পরিচ্ছন্নতাকর্মীও আমরা লক্ষ্য করিনি।

গাজীপুর সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম বলেন, সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে প্রতিটি ওয়ার্ডের কাউন্সিলরদের নিয়ে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। তবে আলাদা করে বস্তিবাসীদের জন্য কোনো সিন্ধান্ত আসেনি। নির্দেশনা পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

গাজীপুর সিভিল সার্জন ডা. খাইরুজ্জামান এসব বস্তিতে বিশেষ নজর দেওয়ার ওপর গুরুত্ব আরোপ করে বলেন, যদি এসব জনবহুল জায়গায় ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ে- তাহলে ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি হবে। যারা বিভিন্ন গণপরিবহনে ও বাসাবাড়িতে কাজ করে তাদের সবার মাস্ক ও হ্যান্ডগ্লাভস (হাতমোজা) ব্যবহার করা উচিত। এরই মধ্যে বস্তিগুলোতে সচেতনতা বৃদ্ধিতে কাজ করতে বিশেষ টিম গঠন করা হয়েছে।

(ঢাকাটাইমস/২৩মার্চ/কেএম/এলএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :