ঢাকার জনবহুল এলাকায় করোনার ঝুঁকি বেশি

প্রকাশ | ২৪ মার্চ ২০২০, ১৫:১৬ | আপডেট: ২৪ মার্চ ২০২০, ১৫:৩০

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

ঢাকার জনবহুল এলাকাগুলোতে করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) সংক্রমণের ঝুঁকি বেশি। শহরের অনুন্নত এলাকাগুলোতে জনসংখ্যার ঘনত্ব বেশি। এসব এলাকায় বসবাসকারীরাও অতটা সচেতন নন। ফলে সড়কে, চায়ের দোকানে, রাস্তার মোড়ে মোড়ে আড্ডা ও জনসমাগম আগের মতোই। যা করোনাভাইরাস সংক্রমণের উপযোগী পরিবেশ হিসেবে বিবেচিত। 

ঢাকার জনবসতি ও জনসমাগমপূর্ণ এলাকার মধ্যে রয়েছে গাবতলী সুইপার কলোনি, দ্বীপনগর, আদাবর-১০ নম্বর, আদাবর-১৬ নম্বর, সুনিবিড় হাউজিং, মোহাম্মদপুরের নবোদয় হাউজিং, নবীনগর, ঢাকা উদ্যান, চাঁদ উদ্যান, সাত মসজিদ হাউজিং, কাটাসুর নামার বাজার, হাজারীবাগের গণকটুলি, মিরপুর বেড়িবাঁধ এলাকা, শাহ আলী মাজার এলাকা, বাউনিয়া বাঁধ, পল্লবী, পুরান ঢাকা। এসব এলাকায় ঘুরে দেখা গেছে, মানুষ আগের মতোই রাস্তা ঘুরছে-ফিরছে। চায়ের দোকানে আগের মতই সরব আড্ডা জমেছে। 
 

বিপনিবিতান ও বিভিন্ন অফিস বন্ধ করে দেয়ার পর থেকে স্থানীয়ভাবে জনসমাগম আগের তুলনায় আরও বেড়েছে। এসব এলাকার বাসিন্দাদের মতে, করোনাভাইরাস পরিস্থিতির কারণে ঢাকার অনেক প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। সেসব জায়গায় যারা কাজ করতেন তারা কাজের কারণে দিনের বেলা অন্যত্র থাকতেন। বর্তমানে তারাও নিজ নিজ এলাকায় অবস্থান করছেন। এতে স্থানীয়ভাবে জনসমাগম বেড়েছে। 

সরজমিনে দেখা যায়, এসব এলাকায় বসবাসকারীদের বেশিরভাগই খেটে খাওয়া মানুষ। যাদের মধ্যে শিক্ষার হার কম। ফলে বিশ্বব্যাপী মহামারি আকার ধারণ করা করোনাভাইরাসের ভয়াবহতা সম্পর্কে ধারণা নেই। নেই সচেতনতাও। 

ঢাকা সিটি করপোরেশনের ৫৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর স্থানীয়ভাবে করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি কমাতে চায়ের দোকানসহ সেসব স্থানে জনসমাগম হতে পারে তা বন্ধের উদ্যোগ নেন বলে জানান। কিন্তু তা ফলপ্রসূ  হয়নি। সড়ক ও দোকান থেকে লোকজন কমানোর চেষ্টা করতে গিয়ে বরং উৎসুক মানুষের ভিড় বেড়ে যায়। 

কাউন্সিলর হোসেন ঢাকা টাইমসকে জানান, কামরাঙ্গীরচরে এখনো পর্যন্ত কেউ আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া যায়নি। ফলে মানুষের মধ্যে সচেতনতা অনেকটাই কম। 

হোসেন বলেন, ‘চরে অল্প জায়গায় অনেক বেশি মানুষের বসবাস। আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি মানুষকে সচেতন করার। জমায়েত না হতে নানা ধরনের দিন নির্দেশনা দিয়ে যাচ্ছি। কিন্তু মানুষ ততটা সচেতন হচ্ছে না।‘

রাতে দোকানপাট বন্ধ করে দেয়া হলেও সকালের চিত্র আবার আগের মতো। দোকানপাট খোলা হয়েছে। সড়কে ভ্রাম্যমাণ দোকানপাট আগের মতোই ঘুরে বেড়াচ্ছে। সেখানে জড়ো হয়ে সবাই কেনাকাটা করছেন। সড়কে চলাচল করছেন বিপুল পরিমাণ মানুষ। আর রাস্তার মোড়ে মোড়ে সেই জমায়েতের পুরনো চিত্র মঙ্গলবার সকালেও দেখা গেছে।

দক্ষিণের ৫৭ নম্বর ওয়ার্ডে জনসমাগম কমাতে গণবিজ্ঞপ্তি জারি করেছিলেন ওয়ার্ড কাউন্সিলর সাইদুল ইসলাম মাতবর। 

রবিবার গণবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে ওয়ার্ডের রেস্টুরেন্ট, হোটেল, চায়ের দোকান, ফুচকা-চটপটির দোকান, বেকারি, কনফেকশনারিসহ সবধরনের খাবারের দোকান পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত বন্ধ রাখতে বলা হয়। তবে হাসপাতাল, ক্লিনিক, প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা, ওষুধের দোকান, ব্যাংক, এটিএম বুথ, ফলের দোকান, মুদি দোকান, কাঁচাবাজার যেমন শাক সবজি, কাঁচা তরিতরকারি, মাছ-মাংসের দোকান, স্টেশনারি, হার্ডওয়ারের দোকান এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দোকান এ নিষেধাজ্ঞার বাইরে থাকবে।

নির্দেশনা অমান্য করলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানিয়েছেন এই জনপ্রতিনিধি। কিন্তু এই গণবিজ্ঞপ্তিও ফলপ্রসূ হয়নি। 

ঢাকাটাইমস/২৪মার্চ/কারই/এজেহড