করোনার চিকিৎসায় ম্যালেরিয়ার ওষুধ কার্যকরী!

প্রকাশ | ২৫ মার্চ ২০২০, ১০:১৬ | আপডেট: ২৫ মার্চ ২০২০, ১৪:১৭

স্বাস্থ্য ডেস্ক, ঢাকাটাইমস

চীনের উহান শহর থেকে করোনাভাইরাস বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়ে। সারাবিশ্বে প্রতিনিয়ত এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ক্রমেই মৃত্যুর মিছিল বেড়েই চলেছে। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের শরীরে প্রাথমিক লক্ষণ হিসেবে শ্বাসকষ্ট, জ্বর, সর্দি, কাশির মতো সমস্যা দেখা দেয়। করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের চিকিৎসায় সাফল্য পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।

ম্যালেরিয়া প্রতিরোধী ওষুধ ক্লোরোকুইন ফসফেট ব্যবহার করে করোনাভাইরাস চিকিৎসায় সাফল্য পাওয়া গেছে। করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের চিকিৎসায় ম্যালেরিয়া প্রতিরোধী ওষুধ বারবার ব্যবহারে সুস্থ হয়েছে।

১০ হাজারেরও বেশি ওষুধের মধ্য থেকে ৭০ বছরেরও বেশি সময় ধরে ব্যবহার হয়ে আসা এই ক্লোরোকুইন ফসফেটকে বেছে নেওয়া হয়েছে। বেইজিংয়ের ১০টিরও বেশি হাসপাতালে এটির পরীক্ষামূলক ব্যবহার করা হয়েছে। এ ছাড়া চীনের গুয়ানদং ও মধ্যচীনের হুনান প্রদেশে ভালো ফল পাওয়া গেছে।

অন্যান্য ওষুধের চেয়ে এটি অনেক বেশি কার্যকর ভূমিকা পালন করছে। ১০০ জনেরও বেশি করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগীকে এই ওষুধ দেওয়ার পর কোনো ধরনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও দেখা দেয়নি।

উহান শহরের একাধিক হাসপাতালে আক্রান্তদের চিকিৎসায় এইডসের ভ্যাকসিনও ব্যবহার করে ভালো ফল পাওয়া গেছে।
করোনায় আক্রান্তদের চিকিৎসায় ইবোলার ওষুধ রেমডেসিভির, ম্যালেরিয়ার প্রতিষেধক ক্লোরোকুইন, এইচআইভির ওষুধ লোপিনাভির ও রিটোনাভির সংমিশ্রণ এবং লোপিনাভির ও রিটোনাভির প্লাস ইন্টারফেরন বেটার সংমিশ্রণ- এই চারটি ওষুধকে বিশেষজ্ঞরা বেছে নিয়েছেন।

পরীক্ষামূলক প্রয়োগ করা ওষুধগুলোর মধ্যে রেমডেসিভির নিয়ে বড় পরিসরে পাঁচটি ল্যাবে ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল হচ্ছে। এর মধ্যে এপ্রিলের শুরুর দিকে দুটি ল্যাবের ফল পাওয়া যাবে।

করোনাভাইরাসের সুচিকিৎসায় বাংলাদেশ সোসাইটি অব মেডিসিনের বিশেষজ্ঞরাও এগিয়ে এসেছেন। তারা বলছেন, করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে সরকার সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে।

বাংলাদেশ সোসাইটি অব মেডিসিনের সভাপতি অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ বিল্লাল আলম জানান, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে করোনায় আক্রান্তদের চিকিৎসায় ম্যালেরিয়া জ্বরে ব্যবহৃত হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন ও ক্লোরোকুইনের সঙ্গে এজিথ্রোমাইসিন সাত দিন সেবনে অধিকাংশ রোগী সুস্থ হয়েছে বলে প্রমাণ মিলেছে। বাংলাদেশ সোসাইটি অব মেডিসিনের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা বিশ্বব্যাপী করোনা আক্রান্ত দেশগুলোর চিকিৎসা পদ্ধতি এবং নিজেদের অভিজ্ঞতা পর্যালোচনা করে দেশে করোনা আক্রান্তদের সুচিকিৎসা নিশ্চিতে ‘স্ট্যান্ডার্ড ট্রিটমেন্ট গাইডলাইন’ দিয়েছে। ওই সুপারিশে হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন ও ক্লোরোকুইনের সঙ্গে এজিথ্রোমাইসিন সেবনের পরামর্শ দেয়া হয়েছে। ওই গাইডলাইন অনুসরণ করে সারা দেশের চিকিৎসকরা করোনা আক্রান্তদের একই ধরনের চিকিৎসা সেবা দেবেন।

ওষুধ প্রশাসন অধিদফতর সূত্র জানায়, বর্তমানে দেশে ইনসেপ্টা, ডেল্টা, এসিআই, জেসন, রেডিয়েন্ট ও ডেল্টা ফার্মাসিউটিক্যাল ম্যালেরিয়া জ্বরের ওষুধ উৎপাদন করে। দেশে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বাড়লে চিকিৎসাসেবা যেন ব্যাহত না হয় সেজন্য এর বাইরে বেক্সিমকো, স্কয়ার ফার্মাসহ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান এ দুটি ওষুধ উৎপাদনের প্রস্তুতি নিয়েছে।

(ঢাকাটাইমস/২৫ মার্চ/আরজেড/এজেড)