বিপাকে পরিবহন শ্রমিকরা

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ২৬ মার্চ ২০২০, ১৬:৩৬ | প্রকাশিত : ২৬ মার্চ ২০২০, ১৫:৩৫

ছয় মাস আগে ভোলার ব্যাঙ্কের হাট থেকে ঢাকায় আসেন রাসেল। কাজ নেন লেগুনা চালকের সহকারী হিসেবে। শ্যামলি থেকে মোহাম্মদপুর ঢাকা উদ্যান রুটে চলাচলকারী উড়াল পাখি পরিবহনে কাজ করে প্রতিদিন তিন থেকে পাঁচ শ টাকা পর্যন্ত আয় হতো তার। কিন্তু এখন সে আয় বন্ধ।

রাসেল জানান, তিন থেক চার দিনের বাজার খরচ তার কাছে আছে। এরপর কি করবেন তা তার জানা নেই।

বলেন, ‘কি করোনা আইছে! এখন গাড়ি বন্ধ। আমরা চলুম কেমনে? কেউ কি আমগো আইসা দুই দিনের বাজারে খরচ দিছে? ঘর ভাড়া দিমু কই থিকা?’

করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) সংক্রমণ রোধে সরকার ঘোষিত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ২৬ মার্চ থেকে ৪ এপ্রিল পর্যন্ত ১০ দিনের জন্য পরিবহন বন্ধ রাখা হয়েছে। বিনা প্রয়োজনে বাসা থেকে বের হতে বারণ করা হয়েছে নাগরিকদের। আর প্রয়োজনের ক্ষেত্রেও একাধিক ব্যক্তি একত্রে চলাচল করতে পারবেন না।

সিদ্ধান্ত মানতে গিয়ে অনেকটাই বিপাকে রাজধানীতে চলাচলকারী গণপরিবহনের শ্রমিকরা। দিনমজুর শ্রেণির এই মানুষগুলোর জীবিকা আসে প্রতিদিনের কাজের ওপর ভিত্তি করে। কিন্তু সে আয়ের পথ এখন বন্ধ।

গাবতলী থেকে সদরঘাট বাবুবাজার রুটে চলাচলকারী ভোরের আলো পরিবহনের চালক বশির হোসেন ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘গাড়ি বন্ধ করছে ঠিক আছে। কেউ অসুস্থ হউক এইডা আমিও চাই না। আমি নিজেও অসুস্থ হইতে চাই না। কিন্তু সরকারের উচিত ছিল আমাগো কথাটা একটু ভাবা। আমরা কেমনে চলমু এইডা একটু ভাবতে পারত। আমরা যে টাকা ইনকাম (আয়) করি, তা তো আমাগো খরচই হইয়া যায়, জমানোর তো সুযোগ নাই। জমানো টাকা থাকলে তা হয়, পনের দিন, এক মাস বইসা খাইতাম।‘

শ্রমিকরা জানান, খাবারের চিন্তার চাইতে মাথার উপর বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে বাসা ভাড়া। মাসের প্রথম সপ্তাহে বাসা ভাড়া দিতে হবে। যে টাকার যোগান নেই অধিকাংশ পরিবহন শ্রমিকের কাছে।

গণপরিবহন শ্রমিকদের উপর পরিবহন বন্ধের প্রভাব পড়লেও ভারমুক্ত প্রাইভেটকার চালকরা। এসব চালকদের মতে, তারা মাসিক বেতনে চাকরি করেন। ফলে বন্ধ থাকলেও তাতে তাদের কোনো সমস্যা নেই।

মোহাম্মদ ইউসুফ নামের এক প্রাইভেটকার চালক ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘আমরা তো বেতনে চাকরি করি। সরকার গাড়ি বন্ধ করছে, এইখানে তো কারো কিছু করার নাই। মাস শেষে আমরা বেতন তো পামু। প্রাইভেট বা কোম্পানির ড্রাইভারগো কোনো সমস্যা নাই। সমস্যা লেগুনাওয়ালা, বাসওয়ালাগো। ওগো তো দৈনিক আয়! ওগো চলতে সমস্যা হইব।‘

এদিকে রাজধানীর বাসস্ট্যান্ড, লেগুনাস্ট্যান্ডগুলো ঘুরে দেখা যায় সুনসান নিরবতা। সেই ভিড়, গাড়ির শব্দ, পরিবহণ শ্রমিকদের তোড়জোড়, আড্ডা, স্ট্যান্ডে সারি সারি গাড়ি দাঁড়িয়ে থাকার চিত্র আজ নেই। সড়ক-স্ট্যান্ড সব জায়গা এখন ফাঁকা।

ঢাকাটাইমস/২৬মার্চ/কারই/ইএস

সংবাদটি শেয়ার করুন

জাতীয় বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :