বিপাকে পাড়া মহল্লার ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা

প্রকাশ | ২৭ মার্চ ২০২০, ১০:১৪ | আপডেট: ২৭ মার্চ ২০২০, ১০:১৫

সৈয়দ ঋয়াদ, ঢাকাটাইমস
ফাইল ছবি

‘আগে সকাল থেইকা বারোডার আগেই দশ হাজার টাকা বেচতাম। এহন দিন শেষ হইয়া যাইতেছে হাজার টাকাও বেচতে পারিনাই। আর সন্ধ্যার পরেতো কাস্টমারই থাকবো না।’

ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী শরীফ মুন্সি বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার দিকে এভাবেই বিক্রি কমে যাওয়ার কথা বলছিলেন। মানিকনগরে তার এই মুদি দোকান থেকেই উঠে আসে চার ছেলেমেয়েসহ ছয়জনের সংসারের যাবতীয় খরচ।

গতকাল শরীফ মুন্সির সঙ্গে এই প্রতিবেদক কথা বলার সময় ওই এলাকার আর সব দোকানপাটই বন্ধ ছিল। শুধু শরীফের মুদি দোকান ছিল খোলা। তবে সেখানে প্রায় ঘণ্টাখানেক দাঁড়ানো অবস্থায় এই প্রতিবেদক কোনো ক্রেতার দেখা পাননি।

শরীফ বলেন, ‘এই দোকানের উপরে পুরাডা সংসার। ১৫ হাজার টাকা বাসা ভাড়া, দোকান ভাড়া, কাজের পোলাডার বেতন, পুলা মাইয়াদের লেখা পড়া, সংসারের খরচ। এই অবস্থা হইলে ঢাকায় থাকতে পারুম না। সংসার চালানোর টাকাইতো আইবো না।’

‘বেচাকেনা হউক বা না হউক, দোকানের ভাড়া, বাড়ি ভাড়াতো কেউ মাফ করবো না। কিন্তু বেচাকেনা যেই অবস্থা তাতে চোখোমুখে পথ দেখতেছি না। আর এই অবস্থা কতো দিন চলে কে জানে!’

শরীফের মতোই অভিব্যক্তি মুগদার ইলেকট্রিক দোকানি মূসা মিয়ার। গতকাল ছুটি শুরু হওয়ার পরপরই সকালে পুলিশ তার ইলেকট্রিকের ছোট দোকানটি বন্ধ করে দেয়। কি করবেন কিছু বুঝতে না পেরে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত দোকানের সামনে দাড়িয়েই পার দিন পার করছেন এই ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী।

মূসা ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘এই দোকানটি দিয়ে নিজের পরিবার ও বাবা মায়ের ভরণপোষণ করি। এখন এটা না খুলতে পারলে পথে বসতে হবে। আর আগামী দশদিন কি করবো, সেটাওতো বুঝতে পারতেছি না।'

করোনাভাইরাসের কারনে শরীফ মুন্সী, মূসাদের মতো রাজধানীর লাখ লাখ ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ও দোকানি জীবন ও জীবিকা নিয়ে বিপাকে পড়েছেন। পরিবার পরিজন নিয়ে শঙ্কায় আছেন এসব নিম্ন আয়ের মানুষ।

নোভেল করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের মধ্যে গতকাল থেকে ৪ এপ্রিল পর্যন্ত দেশের জরুরি সেবা ছাড়া সরকারি বেসরকারি সব প্রতিষ্ঠানই বন্ধ থাকার ঘোষণা দিয়েছে সরকার। পরিস্থিতির উন্নতি না হলে বন্ধের এই সময়সীমা আরও বাড়তে পারে বলেও আশঙ্কা রয়েছে।

(ঢাকাটাইমস/২৭মার্চ/এসআর/ডিএম)