খালেদার আইনজীবী সানাউল্লাহ মিয়া আর নেই

প্রকাশ | ২৭ মার্চ ২০২০, ২১:৩৬ | আপডেট: ২৭ মার্চ ২০২০, ২২:৩৬

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার অন্যতম আইনজীবী এবং দলটির আইন বিষয়ক সম্পাদক সানাউল্লাহ মিয়া ইন্তেকাল করেছেন। (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজেউন)।

শুক্রবার রাত ৮টা ৫৫ মিনিটে ধানমন্ডির একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। তার জুনিয়র আইনজীবী পলাশ এবং বিএনপি চেয়ারপারসনের প্রেস উইং সদস্য শায়রুল কবির খান সাংবাদিকদের এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

সানাউল্লাহ মিয়ার বয়স হয়েছিল ৬০ বছর। তিনি স্ত্রী, দুই ছেলে, এক মেয়েসহ অগণিত আত্মীয়-স্বজন ও শুভাকাঙ্ক্ষী রেখে গেছেন। তার মৃত্যুতে বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। খবর পেয়ে অনেকে হাসপাতালে ছুটে যান। 

শায়রুল কবির জানান জানান, সানাউল্লাহ মিয়ার মরদেহ শ্যামলীর আল মারকাজুল ইসলামীতে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। সেখানে গোসল করানোর পর রাতেই নিয়ে যাওয়া হবে নরসিংদীর শিবপুরে। আগামীকাল সকালে সেখানে জানাজার পর পারিবারিক কবরস্থানে তাকে চিরনিদ্রায় শায়িত করা হবে।

জানা যায়, বৃহস্পতিবার প্রবীণ এই আইনজীবীকে রাজধানীর ধানমন্ডির গণস্বাস্থ্য হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ওইদিন সিসিইউতে থাকা অবস্থায় তার প্রচণ্ড খিঁচুনি উঠলে অক্সিজেন দিয়ে রাখা হয়। কিন্তু আজ চিকিৎসকরা জানান, তিনি নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন।

সানাউল্লাহ মিয়া দীর্ঘদিন ধরে কিডনিজনিত সমস্যায় ভুগছিলেন। এর মধ্যেই গত বছরের ৩ জানুয়ারি তিনি মস্তিষ্কের রক্তক্ষরণজনিত সমস্যায় (স্ট্রোক) আক্রান্ত হন। ওই সময় তাকে রাজধানীর নিউরোসায়েন্স হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশেও নিয়ে যাওয়া হয়। সেই থেকে তার মুখের বাঁ পাশ বেঁকে যায়।

প্রায় তিনযুগ ধরে আইনপেশার পাশাপাশি বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত সানাউল্লাহ মিয়া। ১৯৭৯ সালে ঢাকা সিটি কলেজে ল’ পড়ার সময়ে শাখা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন তিনি। এরপর ঢাকা মহানগর ছাত্রদলের যুগ্ম সম্পাদক, ১৯৮০ সালে কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক কমিটির সদস্য হন। ১৯৮২ সালে ঢাকা মহানগর ছাত্রদলের যুগ্ম সম্পাদকের দায়িত্ব দেওয়া হয়। ১৯৮৩ সালে তাকে ঢাকা মহানগর বিএনপির সদস্য করা হয়। ১৯৮৫ সালের ৩ মার্চ আইনজীবী হওয়ার পর ১৯৮৯ সাল পর্যন্ত ঢাকা মহানগরের সহ-আইন সম্পাদক ছিলেন তিনি।

১৯৯৩ সালে মহানগরের আইন সম্পাদকের দায়িত্ব দেওয়া হয়। ১৯৯১ সালে তিন মাসের জন্য ঢাকা জজকোর্টে বিশেষ পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) করা হয় তাকে। তখন তার দায়িত্ব ছিল সাবেক রাষ্ট্রপতি এইচ এম এরশাদের বিরুদ্ধে মামলা পরিচালনা করা।

দলের জন্য আইন অঙ্গনে ও রাজপথে সক্রিয় সানাউল্লাহ মিয়া নিজ এলাকা নরসিংদী-৩ আসন থেকে নির্বাচন করার জন্যও প্রস্তুতি নিয়েছিলেন। ১৯৯১ সালের নির্বাচনের সময় থেকে মনোনয়ন নেয়ার চেষ্টা করলেও শেষ পর্যন্ত মনোনয়নের দেখা পাননি। একাদশ সংসদ নির্বাচনে দল থেকে মনোনয়ন পাবেন এটা অনেকটা নিশ্চিত ছিলেন সানাউল্লাহ মিয়া এবং তার অনুসারীরা। কিন্তু শেষ পর্যন্ত মনোনয়ন বঞ্চিত হন তিনি। গুঞ্জন আছে, দলের এই সিদ্ধান্তে বেশ আহত হন তিনি। এর কিছুদিন পরেই তিনি হৃদরোগে আক্রান্ত হন।

এদিকে সানাউল্লাহ মিয়ার মৃত্যুতে গভীর শোক জানিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তারা মরহুমের আত্মার শান্তি কামনা করেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।

(ঢাকাটাইমস/২৭মার্চ/এসএস/বিইউ/জেবি)