আতঙ্ক নয়, নিয়ম মেনে ঘরে থাকুন

প্রকাশ | ২৮ মার্চ ২০২০, ১৪:৫৮ | আপডেট: ২৮ মার্চ ২০২০, ১৭:৩৪

অধ্যাপক ডা. এইচ আই লুতফর রহমান খান

বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাসের কারণে সবকিছু স্থবির হয়ে পড়েছে। বাংলাদেশে এই ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। তাই সবার উদ্বেগও বাড়ছে। এরইমধ্যে সরকারের পক্ষ থেকে দেশব্যাপী সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। সংক্রমণ এড়াতে সবাইকে ঘরে থাকার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। তবে এরমধ্যও অনেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নানা বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়াচ্ছেন। নিয়ম না মেনে বাইরে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। যা বড় ধরণের ঝুঁকি বাড়াচ্ছে। তাই আসুন সবাই ঘরে থাকি। সম্মিলিত প্রচেষ্টায় করোনা মোকাবেলা করি।

সকল আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধব, সহকর্মী, রোগী, ঘনিষ্ঠজন, পরিচিত জন ও দেশবাসী সবার কাছে আমার কিছু অনুরোধ ও পরামর্শ থাকবে।

# কোন প্রকার আতঙ্ক নয়, নিয়ম মেনে চলুন ও জরুরি প্রয়োজন না হলে ঘরে থাকুন।

# দেখা যাচ্ছে অনেকে না বুঝে ফেসবুক, ম্যাসেঞ্জারে যা যেখানে দেখছেন বিজ্ঞানভিত্তিক না হলেও অহেতুক পোস্ট দিয়ে বিভ্রান্তির সৃষ্টি করছেন। সাধারণ মানুষদের অযথা আতঙ্কিত করে তুলছেন। দয়া করে এসব থেকে বিরত থাকুন।

# সময় না কাটলে, এবাদত করুন, প্রার্থনা করুন, উপাসনা করুন, আল্লাহ্‌কে/সৃষ্টিকর্তাকে স্মরণ করুন। টিভি দেখুন, বই পড়ুন, পরিবারের সবাই মিলে গল্প করুন। অতীত স্মৃতি নিয়ে কথা বলুন। টেলিফোনে সবার সঙ্গে কথা বলুন, সবার খোঁজ খবর নিন।

# বিশ্বাস রাখুন নিশ্চয়ই আল্লাহ (সু: তা:) অতি শিঘ্রই এ বিপদ থেকে আমাদের দেশকে ও সমগ্র বিশ্ববাসীকে রক্ষা করবেন।

# দেখা যাচ্ছে অনেকে আবার ধর্মে বিশ্বাসী ও অবিশ্বাসীদের মাঝে দ্বন্দ্ব তৈরির অপচেষ্টা চালাচ্ছেন। সবাইকে অনুরোধ করছি এ সময় সামাজিক, রাজনৈতিক, ধর্মীয় ও সকল প্রকার বিশ্বাস অবিশ্বাসের বিভেদ ভুলে গিয়ে আসুন আমরা একসঙ্গে এ দুর্যোগের মোকাবেলা করি।

# এ সময় কারও সমালোচনা নয়, ভুল যদি কিছু হয়ে থাকে তা নিয়ে তর্ক-বিতর্কের সময় এখন নয়। আসুন কিভাবে আমরা এই মহামারীর বিরুদ্ধে সম্মিলিত প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারি সে প্রচেষ্টা চালাই।

# দেরিতে হলেও সঠিক পদক্ষেপ নেয়ার জন্য সরকারকে আন্তরিক ধন্যবাদ। তবে জনস্বার্থে লকডাউনের সময় ৪ থেকে ১৪ এপ্রিল (পহেলা বৈশাখ) পর্যন্ত বর্ধিত করার জন্য অনুরোধ করছি।

সবশেষে বলছি:

# বিশেষ করে হৃদরোগ বিষয়ক কোন জরুরি কারণে আমার উপদেশ/পরামর্শের প্রয়োজন হলে কোন দ্বিধা বা সংকোচ না করে যে কোন সময় আমার সঙ্গে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।

# কখনো কোন কারণে ফোন ধরতে ব্যর্থ হলে আপনার পরিচয় দিয়ে এসএমএস করুন। আমি যথাসময়ে আপনাকে কলব্যাক করার চেষ্টা করবো।

# কোন প্রকার জরুরি হলে যে কোন হাসপাতালের হৃদরোগ বিভাগে যোগাযোগ করুন। সবাই পরিবার-পরিজন নিয়ে ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন, শান্তিতে থাকুন।

লেখক: অধ্যাপক কার্ডওলজি সাবেক বিভাগীয় প্রধান,

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, ঢাকা।