সরকারি জায়গায় বাড়ি পাচ্ছেন রাজশাহীর সেই বৃদ্ধ

প্রকাশ | ২৮ মার্চ ২০২০, ১৯:৩৮

ব্যুরো প্রধান, রাজশাহী

নিষেধাজ্ঞার মধ্যেও পেটের দায়ে ঘর থেকে বের হয়ে রাজশাহীর জেলা প্রশাসকের (ডিসি) দৃষ্টিতে পড়া বৃদ্ধ আতাবুর রহমানকে (৬০) সরকারিভাবে বাড়ি করে দেয়া হবে। খাস জমিতে তার বাড়ি করে দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন তানোর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুশান্ত কুমার মাহাতো।

ডিসি হামিদুল হকের নির্দেশে বৃদ্ধ আতাবুর রহমানকে খুঁজে বের করেন ইউএনও। এরপর শনিবার বিকালে তার কার্যালয়ের সামনে আতাবুরের হাতে নতুন জামা-কাপড় ও চাল-ডালসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় কিছু সামগ্রী তুলে দেন ইউএনও।

তখনই ইউএনও জানান, করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার পর খাস জমিতে বাড়ি হবে আতাবুরের। বিষয়টি নিয়ে ডিসি হামিদুল হক তার সঙ্গে কথা বলেছেন।

আতাবুরের বাড়ি তানোর পৌরসভার বড়কুঠি এলাকায়। শুক্রবার বিকালে উপজেলা সদরে কাগজ কুড়াচ্ছিলেন তিনি। এ সময় তার দিকে এগিয়ে যায় পুলিশ। সঙ্গে ছিলেন জেলা প্রশাসক হামিদুল হকও। ভীতসন্ত্রস্ত আতাবুর ডিসিকে দেখেই বাইরে বের হওয়ার জন্য করজোড় করে ক্ষমা চান। আবেগ আপ্লুত হয়ে ডিসি তখন চাল-ডাল কেনার টাকা দিয়ে ওই বৃদ্ধকে বাড়ি পাঠান। পরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে একটি ছবি পোস্ট করে বিষয়টির বিবরণ দিয়েছেন ডিসি হামিদুল হক নিজেই।

তিনি লেখেন, হঠাৎ ষাটোর্ধ্ব একজন বৃদ্ধ মানুষকে রাস্তার ধারে কিছু পুরনো, ছেঁড়া কাগজ নাড়াচাড়া করতে দেখে কাছে যাই। আমরা কাছে যেতেই এবং সাথে পুলিশ দেখে তিনি কিছুটা ভয় পেয়ে হাতজোড় করে দাঁড়িয়ে বলেন, ‘বাবা আমার যদি কোনও ভুল হয়, মাফ করে দাও, আমি আর বাজারে আসব না।’

আমি সাথে সাথে বৃদ্ধকে বললাম কোনও ভুল না। ভীষণ মায়া লাগলো বৃদ্ধকে দেখে...। বৃদ্ধকে সামান্য আর্থিক সহায়তা দিয়ে বললাম, আপনি কিছু চাল-ডাল কিনে বাড়ি চলে যান। কিছুদিন আর বাজারে আসবেন না। তিনি বললেন, বাবা আর আসব না...। ভালো থেকো বৃদ্ধ বাবা। আমি তোমার খবর রাখব নিশ্চয়।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুশান্ত কুমার মাহাতো বলেন, জেলা প্রশাসক তার পরিচয় জানার নির্দেশ দিয়েছিলেন। আমরা তার পরিচয় উদ্ধার করি। তিনি খুব অসহায়। কখনও কাগজ কুড়িয়ে, আবার কখনও ভিক্ষা করে তিনি সংসার চালান। বিষয়গুলো জানার পর ডিসি স্যারকে অবহিত করি। স্যারের নির্দেশমতো তাকে নতুন জামা-কাপড় ও চাল-ডালসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় বেশকিছু বাজার করে দেয়া হয়েছে। পর্যায়ক্রমে তাকে সরকারি সহায়তায় নগদ অর্থ এবং খাস জায়গায় বাড়ি নির্মাণও করে দেয়া হবে।

(ঢাকাটাইমস/২৮মার্চ/এলএ)