ঘরে বসে পিপিই বানাচ্ছেন বুয়েট অধ্যাপক হেলালী

প্রকাশ | ২৯ মার্চ ২০২০, ১৫:১৯

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

করোনার প্রকোপের মধ্যে পারসোনাল প্রোটেক্টিভ ইকুইপমেন্ট (পিপিই) নিয়ে বেশ আলোচনা-সমালোচনা চলছে দেশজুড়ে। বিশেষ করে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসায় নিয়োজিত চিকিৎসক ও নার্সদের সব থেকে বেশি প্রয়োজন হলেও এখনো সবার হাতে পিপিই পৌঁছেনি বলে অভিযোগ আছে।  পিপিই সংকটে অন্যান্য পেশাজীবীরাও। তবে অনেকে ব্যক্তিগতভাবেও পিপিই দ্বারা নিজেকে ও পরিবারকে সুরক্ষিত রাখার চেষ্টা করছেন।

এমনই একজন বুয়েটের মেকানিক্যাল ডিপার্টমেন্টের অধ্যাপক ড. মাকসুদ হেলালী। তিনি পরিবারের সদস্যদের সুরক্ষার জন্য নিজেই সেলাই মেশিনে বসে পিপিই তৈরি করছেন এই অধ্যাপক। ইতিমধ্যে করোনা রোগী শনাক্ত হওয়ায় বুয়েটের একটি আবাসিক এলাকা লকডাউন করা হয়েছে।  হেলালীও বুয়েটের আবাসিক এলাকার বাসিন্দা।

প্রয়োজন হলে আশপাশের বাসিন্দাদের জন্যও পিপিই তৈরি করে দেয়ার চিন্তা আছে বলে জানিয়েছেন বুয়েটের এই শিক্ষক। তার এই উদ্যোগকে অনেকেই স্বাগত জানিয়েছেন।

রবিবার প্রবীণ শিক্ষক মাকসুদ হেলালীর নিজ হাতে পিপিই তৈরি ছবি বুয়েট শিক্ষার্থীদের ‘বুয়েটিয়ান’ নামের ফেসবুক গ্রুপে পোস্ট দেন একজন।  মুহূর্তেই তা ভাইরাল হয়ে যায়।

পোস্টে লেখা রয়েছে, নিচের ছবিতে যাকে দর্জির মতো পিপিই সেলাই করতে দেখছেন, তিনি আসলে দর্জি না, বুয়েটের মেকানিক্যাল ডিপার্টমেন্টের শ্রদ্ধেয় প্রফেসর ড. মাকসুদ হেলালী স্যার।  ছবিটা দেখেই স্যারের জন্য শ্রদ্ধা ও গর্বে বুকটা ভরে উঠলো।  আল্লাহ পাক উনাকে আরও নেক হায়াত দান করুন।

পোস্টের নিচে বুয়েটের বর্তমান ও সাবেক শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা শেয়ার ও কমেন্ট করছেন। অনেকে এই শিক্ষককে ধন্যবাদ জানিয়েছেন।  নানাভাবে প্রশংসা করেছেন তার।

বুয়েটের শিক্ষক মাকসুদ হেলালী গণমাধ্যমকে বলেন, পুরো পৃথিবীজুড়ে করোনার প্রদুর্ভাব ছড়িয়ে পড়েছে।  বাংলাদেশেও এটি ছড়িয়ে পড়ছে। বুয়েট পরিবারের কয়েকজন এই ভাইরাসের দ্বারা আক্রান্ত হয়েছেন। বর্তমানে তারা চিকিৎসাধীন।

তিনি বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে দিনরাত ঘরের মধ্যে থাকতে বলা হলেও বিভিন্ন প্রয়োজনে বাইরে যেতে হচ্ছে। এতে করে করোনাভাইরাসের আক্তান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

এ কারণে নিরাপদে থাকতে বাজার থেকে কাপড় এনে তিনি নিজের জন্য পরিবারের সদস্যদের জন্য পাঁচটি পিপিই তৈরি করেছেন।  জরুরি প্রয়োজনে ঘরের বাইরে গেলে পিপিই পড়ে তারা বাইরে যাচ্ছেন বলেও জানান তিনি।

তিনি বলেন, নিজেদের চাহিদা পূরণ হলে প্রয়োজনে প্রতিবেশীদেরও বানিয়ে দেব।

আসিফ নামে একজন তার এমন কাজের প্রশংসা করে লিখেছেন, দেখেই ভালো লাগল, এই সব মানুষ সাদা মনের-খুব সহজ সরল হয়।

কাজী আবিদ লতিফ লিখেছেন, নিরংহকারী কর্মবীর এবং বৈজ্ঞানিক গড়ার কারিগর।

অন্তরের অন্তঃস্থল থেকে বিনম্র শ্রদ্ধা!!!

রিজন আবু সাহাদাত লিখেছেন, কোনো ধরনের ক্যামেরা লাইট অ্যাকশন ছাড়াও যারা অবদান রাখার চেষ্টা করে যাচ্ছেন, তাদের জন্য শুভেচ্ছা...সুস্থ থাকুন, অন্যদের অনুপ্রাণিত করুন আপন কাজের দ্বারা।

নাসিমা বেগম নামে একজন পোস্টের নীচে মন্তব্য করেছেন, আদর্শ শিক্ষককে ভরে যাক আমাদের এই সুন্দর দেশটা। অন্যদিকে আমাদের সম্মানিত অগ্রজেরদের কাছে অনেক শিখবার আছে। দোয়া করি বেঁচে থাকুন শতবছর।

(ঢাকাটাইমস/২৯মার্চ/বিইউ/ইএস)