করোনার দিনে যেমন হবে ‘হোম অফিস’

ফিচার প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ৩০ মার্চ ২০২০, ০৮:৩৮

প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের থাবায় পুরো পৃথিবী মৃত্যুপুরিতে রূপ নিচ্ছে। ভয়ে যেন কেউ ঘরের বাইরে পা রাখার সাহস পাচ্ছে না। ঘরে বসে থাকা এবং সামাজিক দূরত্বই করোনাভাইরাস থেকে বাঁচার একমাত্র পন্থা। বিশ্বের অনেক দেশ এই ভাইরাস থেকে বাঁচতে লকডাউনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে বড় বড় প্রতিষ্ঠানগুলোও বাধ্য হয়ে অনির্দিষ্টকালের জন্য অফিস বন্ধ করে দিতে বাধ্য হচ্ছে। আবার কিছু কিছু প্রতিষ্ঠান কর্মীদের বাসায় বসে কাজ করার কথা বলছে।

গুগল, মাইক্রোসফট, টুইটার, হিটাচি, অ্যাপল, আমাজন, শেভরন, সেলসফোর্স, স্পটিফাইয়ের মতো বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান কর্মীদেরও বাড়ি থেকে কাজ করতে বলেছে।

যুক্তরাষ্ট্র থেকে যুক্তরাজ্য, জাপান থেকে দক্ষিণ কোরিয়ার বড় বড় প্রতিষ্ঠানের কর্মীরা কয়েক দিন ধরেই বাড়িতে বসে কাজ করছেন। আমাদের দেশের টেলিকম থেকে শুরু করে অনলাইনভিত্তিক বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানগুলোও ইতিমধ্যে এ পথে হেঁটে চলেছে। এর বাইরেও বেশ কয়েকটি ছোট-বড় প্রতিষ্ঠান কর্মীদের বাড়ি থেকে কাজ করতে বলেছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কিছুদিন আগে করোনাভাইরাসকে আনুষ্ঠানিকভাবে মহামারি বলায় ‘বাড়ি বসে অফিস’ ধারণাটি অনেকের জন্য স্বাভাবিক নতুন ধারণা হয়ে দাঁড়িয়েছে। অনেকেই প্রথমবারের মতো এ ধরনের অভিজ্ঞতার মুখে পড়বেন বললেও ভুল হবে না। বাড়িতে বসে কাজ করে কীভাবে উৎপাদনশীলতা ধরে রাখা যায় সেই বিষয়টি এখন খেয়াল রাখা জরুরি। এ কাজের জন্য বাড়িতেই তৈরি করতে হবে কাজের উপযুক্ত পরিবেশ। করোনাভাইরাসের কারণে কর্মীকে কতক্ষণ বাড়িতে থাকতে হবে, তা পরিষ্কার নয় বলে বাড়তি সমস্যা সৃষ্টি করছে। অফিসের পরিবেশ থেকে হঠাৎ ভিন্ন পরিবেশে কিছু নিয়ম মেনে বাড়িতে বসে অফিসের কাজ শুরু করতে পারেন।

বাড়িতে স্মল অফিসের জন্য আলাদা জায়গা থাকলে তো ভালোই, তবে তা যদি সম্ভব না হয় সে ক্ষেত্রে খাবার ঘরের একদিকে অথবা বারান্দার মাঝে করা যেতে এই হোম অফিসের আয়োজন।

হোম অফিসের অন্দরসজ্জায় যে জিনিসটি অপরিহার্য তা হলো টেবিল। তবে টেবিলটির আকার কেমন হবে তা সম্পূর্ণ নির্ভর করবে কাজের ধরনের ওপর। সাধারণত টেবিলের আকৃতিটা অন্তত দুই বাই তিন ফুট হওয়া ভালো।

টেবিলে রাখতে পারেন ইনডোর প্লান্ট। যে ঘর কাজের জন্য বেছে নিচ্ছেন, সেখানে যেন বড় জানালা থাকে। কাজ করতে যাতে ভালো লাগে, বাড়ির নির্দিষ্ট কোনও ঘরকে সেভাবেই বানানো উচিত।

প্রয়োজনীয় কাগজপত্র রাখতে টেবিলের একদিকে বানাতে পারেন ওয়াল কেবিনেট বুকশেলফ। চাইলে টেবিলের ওপরের দেয়ালকেও কাজে লাগাতে পারেন। নান্দনিক নকশার ফলস কেবিনেট বা কাঠের তাক কাজে লাগাতে পারেন। এ ধরনের কেবিনেটেও রাখতে পারেন প্রয়োজনীয় জিনিস।

কাজের টেবিলটির এক কোণে রাখতে পারেন টেবিল ল্যাম্প। এ ছাড়াও কাজের প্রয়োজনে পরিবারের কেউ আসলে বসার জন্য ছোট সোফার ব্যবহার করা যেতে পারে।

যেহেতু অফিসটা ঘরের ভেতর তাই আসবাব থেকে শুরু করে সবকিছুতেই একটু উজ্জ্বল রঙের পরশ থাকা ভালো, যেন ঘরের ভেতর অফিস হওয়ার কারণে ঘরের নান্দনিক ছন্দটা না হারিয়ে যায়।

অফিসের রিভলভিং চেয়ারের বদলে বাড়িতে কাঠের চেয়ারে বসুন। আপনার কোমরের পক্ষে ভালো।

টেবিলে ল্যাপটপ বা ডেস্কটেপ কম্পিউটার রেখেই কাজ করুন। অর্থাৎ ওই চেয়ার টেবিলে বসলেই আপনার মধ্যে যেন কাজ করার মানসিকতা চলে আসে।

আপনার অফিসের বস এবং যাদের সঙ্গে কাজ করেন সেরকম যোগাযোগ রাখার জন্য কাজের পরিবেশ তৈরি করতে হবে। যেন বাড়িতে বসে কাজের ক্ষেত্রেও তেমনটা হয় সেটা খেয়াল রাখতে হবে।

ল্যাপটপ, কম্পিউটার, প্যাড, মোবাইল, ইন্টারনেট সংযোগ সব সময় একটিভ রাখুন। যাতে আপনার সহকর্মীদের সাথে যোগাযোগ অফিসের মতোই থাকে। ইমেইল, ফেসবুক, মেসেঞ্জার, হোয়াটসঅ্যাপ, স্কাইপ সবসময় চেক করবেন গুরুত্বপূর্ণ কিছু ইনফরমেশন যেন মিস না হয়ে যায়।

বাড়িতে কাজ করার সময় এক ঘণ্টা অন্তর ছোট বিরতি নিয়ে পরিবারকে সময় দিন। অল্প হাঁটাহাঁটি করুন।

কাজের প্রয়োজনে অনেক সময় পরিবারের লোক আসার দরকার হতে পারে, তাই শোবার ঘরে হোম অফিসের আয়োজন না করাই ভালো।

বাসায় আছেন বলে যে শুয়ে বসে বা পরিবারের সঙ্গে সময় দিয়ে কাজ করবেন তা কিন্তু ভুলেও করবেন না।

বাড়িতে বসে কাজের দ্বিতীয় বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে একাকিত্ব। কর্মী একাকী বোধ করলে তখন তার উৎসাহ কমে যায় এবং ঠিকমতো কাজ করতে পারে না।

আপনার বাড়ির মধ্যে এমন সীমানা তৈরি করুন, যা আপনার পরিবারের সদস্যরা বুঝতে পারে। যখন দরজা বন্ধ করে দেবেন মনে করুন, আপনি সেখানে নেই। অফিসে বসেই কাজ করছেন।

বাড়িতে বসে কাজের ক্ষেত্রেও ২০ মিনিটের জন্য সকালে কফি খাওয়ার জন্য বা বিকেলে কিছুক্ষণ ব্যায়ামের জন্য কাজের বাইরে থাকতে পারেন।

পরিশেষে বলা যায়, বাসায় বসে কাজ করার যেমন সুবিধা রয়েছে তেমনি চ্যালেঞ্জও রয়েছে। সুবিধা হলো আপনি বাসায় বসে স্বাচ্ছন্দ্যে কাজ করছেন। আবার চ্যালেঞ্জ হলো পরিবারের সাথে থেকে তাদের সাথে যোগাযোগ বজায় রেখে কাজ করাটাও কিন্তু কঠিন। তবে এই সংকটময় মুহূর্তে সকল চিন্তা ভাবনা দূরে রেখে অফিসের কথা চিন্তা করে কাজ করার মনোভাব নিয়ে বাসায় গড়ে তুলুন আপনার কাজের পরিবেশ।

(ঢাকাটাইমস/৩০ মার্চ/আরজেড/এজেড)

সংবাদটি শেয়ার করুন

ফিচার বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

ফিচার এর সর্বশেষ

কিডনি রোগ বাড়ছে শিশুদেরও! যেসব লক্ষণ দেখলেই সতর্কতা জরুরি

সস্তার পেয়ারার গুণে বশে থাকে ডায়াবেটিস-উচ্চ রক্তচাপসহ নানা জটিল রোগ

যে পাঁচ সমস্যায় আক্রান্তরা গুড় খাওয়ার আগে একবার ভাবুন, নইলে...

সাজেদুর রহমান শাফায়েতের স্বপ্ন পৃথিবী ঘুরে দেখা

খাওয়ার পরপরই চা পান উপকার না ক্ষতি? কী বলছেন বিশেষজ্ঞরা

জ্বরের মধ্যে যে পাঁচ খাবার খেলেই বিপদ! জানুন, সাবধান হোন

গরমে হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ে ডায়াবেটিস রোগীদের! সুস্থ থাকবেন যেভাবে

মুখে দুর্গন্ধের কারণে হা করতেও অস্বস্তি লাগে? সমাধান কী জানুন

লিভার ভালো রাখে লাউ! ওজন এবং উচ্চ রক্তচাপও থাকে নিয়ন্ত্রণে

কিডনি ভালো রাখে আমের পাতা! উচ্চ রক্তচাপও থাকে নিয়ন্ত্রণে

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :