চিকিৎসকদের বিনামূল্যে পিপিই দেবে বিজিএমইএ

প্রকাশ | ৩০ মার্চ ২০২০, ০৮:৫৩ | আপডেট: ৩০ মার্চ ২০২০, ০৯:৩২

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

করোনভাইরাস মহামারিতে চিকিৎসকদের জন্য ব্যক্তিগত সুরক্ষা সামগ্রী (পিপিই) তৈরি করছে বাংলাদেশ গার্মেন্টস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিজিএমইএ)। তবে এগুলো বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার দেয়া নির্ধারিত মানের নয়। শুধুমাত্র শতভাগ পানি প্রতিরোধী। পেশাজীবীরা যে ধরনের পিপিই ব্যবহার করেন এর নকশা তার কাছাকাছি । এগুলো তৈরি করা হচ্ছে সেইসব ডাক্তার ও স্বাস্থকর্মীদের জন্য যারা আতঙ্কিত হয়ে কাজে যেতে ভয় পাচ্ছেন।

রবিবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে  এ তথ্য জানানো হয়। এতে বলা হয় ২০ হাজার পিপিই বিনামূলে দিবে বিজিএমইএ।

করোনা রোগীদের চিকিৎসা দেয়ার মতো উপযোগী ‘সনদ প্রাপ্ত’ পিপিই তৈরিতে আরো ছয় থেকে এক বছর সময় লাগবে জানিয়ে বিজিএমইএর সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়,   এই পিপিই পোশাক সেইসব ডাক্তার ও স্বাস্থকর্মীদের জন্য তৈরি করা হচ্ছে , যারা কাজে যেত ভয় পাচ্ছেন আতঙ্কিত হয়ে । এই ডাক্তার ও স্বাস্থ্যকর্মীরা আশা করছেন , শুধুমাত্র যে করোনা উপসর্গধারী রোগীদের  চিকিৎসাকালে পিপিই ব্যবহার হবে তা নয়, বরং তারা পেশাগত সকল কর্মকান্ডে সুরক্ষা পাবে।’

করোনাভাইরাস এর প্রাদুর্ভাব মোকাবেলায় বিজিএমইএ এগিয়ে এসেছে জানিয়ে বিজিএমই বলেছে,   পোশাক শিল্পের উদ্যোক্তারা স্বপ্রণোদিত হয়ে যে পিপিই তৈরি করছেন , যেহেতু সম্মুখ প্রথম সারীর স্বাস্থ্যকর্মীদের কোন  ধরনের  সুরক্ষা নেই , তাই বিজিএমইএ নিজেদের সম্পদ দিয়ে তাদের সহযোগীতা করার উদ্যোগ নিয়েছে।

এ পিপিইগুলো অনুদান হিসেবে দেয়া হবে ডাক্তার , নার্স ও হাসপাতল কর্মীসহ বিভিন্ন স্বাস্থ্যসেবা কর্মীদের কর্মীদের।

উল্লেখ্য , বর্তমানে বিভিন্ন আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যগণ এবং বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানও বিজিএমইএকে পিপিই সরবরহে অনুরোধ করেছে । ‘

এদিকে বিজিএমইএ’র সভাপতি ড. রুবানা হক রবিবার এক বার্তায় গণমাধ্যমকে বলেন, এই পিপিইগুলো স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এরই মধ্যে অনুমোদন দিয়েছে। তারা এগুলোকে প্রথম স্তরের পিপিই হিসাবে প্রত্যয়নপত্র দিয়েছে। বিজিএমইএ এখন  অনুদান হিসেবে দেওয়ার জন্য কমপক্ষে ২০ হাজার পিপিই তৈরি  উদ্যোগ নিয়েছে। যেগুলো প্রথম স্তরের পিপিই।

সাধারণত বিজিএমইএ পিপিই তৈরি করে না জানিয়ে বলা হয়, এই পিপিই তৈরিতে বর্তমানে বিজিএমইএর অনেক সদস্য কাপড় দিয়ে সহযোগিতা করছেন।  কিছু কাপড় কেনার জন্য তহবিল গঠনের পরিকল্পনাও করা হয়েছে।  অনেক সদস্য কম দামে ফেব্রিক দিচ্ছেন। করোনার রোগীদের চিকিৎসা দেয়া চিকিৎসক এবং কর্মীদের জন্য প্রয়োজন সাধারণত ৩/৪ স্তর বিশিষ্ট পিপিই এ কথা জানিয়ে বিজিএমইএর সভাপতি বলেন, তার এমন পিপিই তৈরির জন্য কাজ করছে।  এবং সেটা দেশীয় চাহিদা পূরণ করে রপ্তানি করতে চায় তারা।

বিজিএমইএ’র সভাপতি ড. রুবানা হক বলেন, ‘আমাদের চূড়ান্ত লক্ষ্য বিশ্বের অন্যান্য অঞ্চলে পিপিই রপ্তানি করা এবং আমরা এটি খুব দ্রুত করতে চাই। আমরা ইতো মধ্যেই  এ বিষয়ে আইএলও, ডব্লিউএইচও, ডব্লিউএফপি, ইউনিসেফ এবং অন্যান্য সংস্থার একটি জোটের সাথে আলোচনা করেছি। তারা  প্রযুক্তিগত জ্ঞান শেয়ার করতে সহায়তা করবে।’

বিজিএমইএ আশা করছে স্ট্যান্ডার্ড পিপিই ৬ মাস থেকে এক বছরের মধ্যে তারা তৈরি করতে পারবে।

বিজিএমইএ বলছে, পিপিই স্যুটগুলো স্থানীয়ভাবে সাধারণত দেশের পোশাক উৎপাদনকারীরা তৈরি করে না। কারণ এগুলো তৈরির জন্য চিকিৎসা গ্রেড এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মান অনুযায়ী স্ট্যান্ডার্ড ফেব্রিক আমদানি করতে হয়। যা প্রধানত চীন থেকে আমদানি করতে হয়।

এছাড়া চিকিৎসায় ব্যবহারের জন্য পিপিই স্যুট তৈরি করতে কারখানাগুলোতে কিছু বিশেষায়িত যন্ত্রপাতিসহ সিল সিলিং মেশিন দিয়ে পুনরায় প্রস্তুত করতে হবে। কারখানার পরিবেশও জীবাণুমুক্ত রাখতে হবে। প্রয়োজনীয় প্রশংসাপত্র এবং প্রশিক্ষণ নিতে হবে। বাংলাদেশের কারখানাগুলোর এসব প্রস্তুতি সম্পন্ন করতে কমপক্ষে ৬ থেকে এক বছর সময় লাগবে।

(ঢাকাটাইমস/৩০মার্চ/জেআর/এজেড)