শত শত মৃত্যু দেখে মানসিক ভারসাম্য হারাচ্ছেন ডাক্তার-নার্স

প্রকাশ | ৩০ মার্চ ২০২০, ১৬:০৯ | আপডেট: ৩০ মার্চ ২০২০, ১৬:৪৩

মিলি সুলতানা

কোভিড -১৯ এর তান্ডবে আমেরিকা এখন বিধ্বস্ত। মনের শক্তি সাহস সব হারিয়ে ফেলেছি। প্রতিদিন মৃত্যু আর মৃত্যু! সাহসের কি সেই দু:সাহস আছে মনে অবস্থান করবার? নিউইয়র্কে বিভিন্ন হাসপাতালের ডাক্তার নার্সরা চোখের সামনে শত শত করুণ মৃত্যু দেখে মানসিক রোগী হয়ে পড়ছেন। অনেক ডাক্তার নার্স বাসায় ফিরে অসংলগ্ন আচরণ করছেন।

ফ্লোরে লুটিয়ে পড়ে গলা ফাটিয়ে কাঁদছেন। তাঁদের পরিবারের সদস্যরা কোনভাবেই তাঁদেরকে সান্ত্বনা দিতে পারছেন না। মানবতার মহান এই পেশায় নিয়োজিতরা আজ নিয়তির কাছে অসহায় ও জিম্মি হয়ে পড়েছেন।

কেলভিন নামের একজন ডাক্তারের মা বলেছেন, "আমার ছেলে যখন হসপিটাল থেকে যখন বাসায় ফেরে গাড়ি ড্রাইভ ওয়েতে রেখে বাসায় ঢোকেনা। সে অনেকক্ষণ বাইরে দাঁড়িয়ে হুহু করে কান্নাকাটি করে। আমি জানালায় চোখ রেখে আমার সন্তানের মর্মান্তিক মানসিক অবস্থা দেখি আর চোখের পানি ফেলি। আমার ছেলে এভাবে মানসিক রোগী হয়ে যাচ্ছে।"

জ্যানেট নামের একজন নার্সের স্বামী বলেছেন, "আমার স্ত্রীর নাইটমেয়ার (Nightmare) হচ্ছে। সে ঘুমায়না। চোখ বন্ধ করলেই প্রাণহীন লাশের সারি দেখতে পায়। ঘুমের মধ্যে চিৎকার করে জেগে যায়। তার মেন্টাল ইমব্যালান্স আমি কিভাবে সমাধান করব? গত এক সপ্তাহ থেকে তাকে এন্টি-ডিপ্রেশন পিল নিতে হচ্ছে। আমার একবছর বয়সী শিশুকন্যার কি হবে?

মার্কিন বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, ঘাতক করোনার সুনামিতে আমাদের কয়েক হাজার চিকিৎসক এবং চিকিৎসাকর্মী মানসিক রোগীতে পরিণত হচ্ছেন। কিভাবে এর ক্ষতিপূরণ হবে? ডাক্তার নার্সরা দিশেহারা। প্রতিদিন তাঁরা দেখছেন তাঁদের হাতের উপর দিয়ে ঝরাপাতার মত মানুষের প্রাণ ঝরছে। রোগীদেরকে তাঁরা বাঁচাতে পারছেন না। মৃত্যুর শেষ মুহূর্তেও রোগীর করুণ চাহনি, বাঁচার শেষ আকুতির অভিব্যক্তি অনেক ডাক্তার নার্স ভুলতেই পারছেন না।

কোনো কোনো হাসপাতালে পনেরো বিশ মিনিটের জন্য ডাক্তার নার্সদেরকে শর্টব্রেকে পাঠানো হয় একটা কক্ষে। সেখানে তাঁরা জড়ো হয়ে নিজেদের মত করে কাঁদেন। কেঁদে বুক হালকা করার জন্য এমনটি করা হচ্ছে।

ম্যানহাটনের একটি হাসপাতালের ডাক্তার রবিস হেরাল্ড বললেন, "আমরা গিভ আপের দিকে এগুচ্ছি। চোখের সামনে প্রলয় দেখছি। দেখছি মৃত্যুর হাতছানি। জানিনা কতদিন এভাবে শ্বাসপ্রশ্বাস নিতে পাররো। এভাবে কষ্ট নিয়ে বাঁচার চেয়ে সুইসাইড করা ভালো।"

সব হাসপাতালে রোগী জ্যাম হয়ে আছে। এলমহার্স্ট হাসপাতালের সামনে ফ্রিজার ট্রাক স্ট্যান্ডবাই রাখা আছে। লাশ বের হলে বেড খালি হয়। চারদিকে অ্যাম্বুলেন্সের ভীতিকর ও লোমহর্ষক সাইরেন বেজে চলেছে

[ফেসবুক থেকে নেওয়া]

ঢাকাটাইমস/৩০মার্চ/এসকেএস