ভারতে শ্রমিকদের ওপর স্প্রে, সমালোচনার ঝড়

প্রকাশ | ৩০ মার্চ ২০২০, ১৯:১৯

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

করোনাভাইরাসের বিস্তার মোকাবেলায় হঠাৎ পুরো ভারতে লকডাউন ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ফলে বিপাকে পড়েন অভিবাসী শ্রমিকরা। লাখ লাখ অভিবাসী শ্রমিক নিজেদের রাজ্যে ফিরে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। এরই মধ্যে একদল অভিবাসী শ্রমিকের ওপর রীতিমতো বৃষ্টির মতো করে জীবাণুনাশক স্প্রে করা হয়েছে।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি জানায়, সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নির্বাচনী রাজ্য উত্তরপ্রদেশের বলেলি জেলায় এ ঘটনা ঘটেছে।

সামাজিক মাধ্যমে ওই ঘটনার ভিডিও ছড়িয়ে পড়তেই সমালোচনার ঝড় ওঠেছে।

ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, সুরক্ষা পোশাক পরিহিত একদল লোক অভিবাসী শ্রমিকদের ওপর জীবাণুনাশক স্প্রে করছে। এই শ্রমিকদের মধ্যে নারী ও শিশুরাও রয়েছে। রাস্তায় বসে থাকা অবস্থায় এভাবে তাদের ওপর স্প্রে করা হয়।

গত শনিবার অভিবাসী শ্রমিকরা দিল্লি, হরিয়ানা নয়ডা থেকে উত্তরপ্রদেশ নিয়ে আসার ব্যবস্থা হয়। উত্তরপ্রদেশে হতদরিদ্র এই মানুষদের ওপর এভাবে স্প্রে করার সময় ঘটনাস্থলে হাজির ছিল পুলিশ সদস্যরা। তবে তারা ছিল দর্শকের ভূমিকায়।

সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে এক ব্যক্তিকে বলতে শোনা যায়, ‘নিজেদের চোখ বন্ধ করুন। শিশুদের চোখ বন্ধ করে দিন।’

টুইটারে দেওয়া পোস্টে এ ঘটনার সমালোচনা করেছেন কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়াঙ্কা গান্ধী। তিনি লিখেছেন,‘উত্তরপ্রদেশ সরকারের কাছে আর্জি জানাচ্ছি, আমরা সবাই একসঙ্গে এই সংকটের মোকাবিলা করছি। দয়া করে এমন অমানবিক কাজ করবেন না। এই শ্রমিকরা ইতোমধ্যেই অত্যন্ত ভোগান্তির মধ্যে দিয়ে গিয়েছেন। তাদের ওপর এভঅবে রাসায়নিক স্প্রে করবেন না। এটা ওদের রক্ষা করবে না। বরং তাদের স্বাস্থ্যের ক্ষতি হবে।’

তবে শ্রমিকদের ওপর রাসায়নিক স্প্রে’র অভিযোগ অস্বীকার করেছে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ

উত্তরপ্রদেশের একজন সরকারি কর্মীর মতে, এতে তারা অমানবিকতার কিছু দেখছেন না। তিনি বলেন, আমরা অমানবিক হতে চাই না। সবাইকে স্যানিটাইজ করাটা অত্যন্ত জরুরি। ওখানে ভিড় ছিল। সুতরাং যেটা ঠিক হয়েছে আমরা সেটাই করেছি।

তার দাবি, অভিবাসী শ্রমিকদের ওপর ক্লোরিন ও পানি মিশিয়ে স্প্রে করা হয়েছে। এটি কোনও রাসায়নিক দ্রবণ নয়। তারপরও শ্রমিকদের চোখ বন্ধ করে নিতে বলা হয়েছিল।

আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল ভারতের অভিবাসী শ্রমিকদের এই চরম দুর্দশায় ফেলার জন্য সরকারের তীব্র সমালোচনা করেছে।

কিন্তু প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি রবিবারও তার মাসিক রেডিও ভাষণ ‘মন কি বাতে’ অনুষ্ঠানে পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছেন, ‘‘ভারতের স্বার্থেই এই ‘লকডাউন’ কঠোরভাবে প্রয়োগ করতে হবে। অন্যথায় বহু দেশের মতো আমাদেরও করোনাভাইরাসের জন্য চরম মূল্য দিতে হবে।’

(ঢাকা টাইমস/৩০মার্চ/আরআর)