করোনায় বেশি মারা যাচ্ছেন বয়স্করাই!
বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়া প্রাণঘাতী নতুন করোনাভাইরাস কোভিড-১৯ এর প্রাদুর্ভাবে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকির মধ্যে রয়েছেন প্রবীণরা। করোনা-যুদ্ধে সবচেয়ে বেশি বিপর্যস্ত হচ্ছে ইটালি। কারণ ইটালিতে জনসংখ্যার দিক থেকে বয়স্কদের সংখ্যা অনেক বেশি।
করোনায় মৃত্যুতে এখন সব চেয়ে এগিয়ে ইটালিই। মৃতের সংখ্যা সাড়ে ১১ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। ইটালিয়ান অ্যাসোসিয়েশন অব ডক্টর্স-এর মতে, অন্য দেশের তুলনায় ইটালিতে ৬১ জন চিকিৎসকের মৃত্যু হয়েছে যা চিন্তার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাদের মধ্যে ৪০ জন কাজ করছিলেন লম্বার্ডিতে। আক্রান্ত ৮ হাজারেরও বেশি স্বাস্থ্যকর্মী। মোট আক্রান্ত এখন এক লাখ পেরিয়ে গিয়েছে।
এর পরেই রয়েছে স্পেন। সেখানে করোনায় মৃতের সংখ্যা ৭৩৪০। তবে দৈনিক মৃত্যুর হার সামান্য কমেছে। ২৪ ঘণ্টায় এ দেশে মৃত্যু হয়েছে ৫৩৭ জনের। আক্রান্ত ৮৫ হাজারের উপরে।
ইউরোপে বাকি দেশগুলোর করোনায় মৃত্যু সব মিলিয়ে এখন ২৫ হাজার ছাড়িয়ে গিয়েছে বলে একটি সূত্রে দাবি। নেদারল্যান্ডসে গত ২৪ ঘণ্টায় ৯৩ জন মারা গিয়েছেন করোনার প্রকোপে। সেখানে মৃতের সংখ্যা ৮৬৪।
লক ডাউনের মেয়াদ আরও ৬ মাস বাড়াতে পারে ব্রিটেন। রোববার এক সাংবাদিক বৈঠকে এমনই ইঙ্গিত দিয়েছেন ইংল্যান্ডের ডেপুটি চিফ মেডিক্যাল অফিসার জেনি হ্যারিস।
তিনি জানিয়েছেন, তাড়াহুড়া করে লকডাউন তুলে নিলে দেশ জুড়ে ফের করোনা-প্রকোপ আছড়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। এ দিকে, সাত দিন আলাদা থাকার পরে আপাতত সুস্থ ব্রিটেনের যুবরাজ চার্লস।
গত সপ্তাহে করোনাভাইরাসের উপসর্গ ধরা পড়েছিল তার। স্কটল্যান্ডে নিজের বাড়িতে রয়েছেন। তবে তার স্ত্রী, ডাচেস অব কর্নওয়াল এখনও আলাদা থাকছেন। আলাদা থাকছেন প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের শীর্ষ উপদেষ্টা ডমিনিক কামিংসও। তারও করোনা-উপসর্গ দেখা গিয়েছে বলে জানানো হয়েছে ১০ ডাউনিং স্ট্রিট সূত্রে।
আমেরিকায় নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন আরও ১৩৩২৭ জন। মোট আক্রান্ত ১ লাখ ৫৬ হাজারের উপরে। মৃতের মোট সংখ্যা ২৮৭১। আক্রান্তের দিক থেকে দিন দুয়েক আগেই ইটালি ও স্পেনকে অতিক্রম করে গিয়েছে আমেরিকা। নিউইয়র্কে রোববারই মারা যায় ৯৮ জন। শহরে মৃতের মোট সংখ্যা এখন ৮০০-র কাছাকাছি। অতিরিক্ত রোগীদের ঠাঁই দিতে নিউ ইয়র্কের সেন্ট্রাল পার্কে তৈরি হচ্ছে ৬৮ শয্যার হাসপাতাল।
প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, করোনার প্রকোপ কমলেই এ শহর দ্রুত ঠিক হয়ে যাবে। সামাজিক দূরত্ব বহাল রাখার সময়সীমা বাড়িয়ে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত করার কথা বলেছেন তিনি। ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব অ্যালার্জি অ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজিজ-এর ডিরেক্টর অ্যান্টনি ফসির মতে, কোভিড-১৯-এ এ দেশে মৃত্যু ১ লাখ ছুঁলে তিনি আশ্চর্য হবেন না।
চীনে ফের নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ৩১ জন। এর মধ্যে ৩০ জন বাইরে থেকে কোভিড-১৯-এর উপসর্গ নিয়ে এসেছেন বলে জানিয়েছে দেশের জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশন। স্থানীয়ভাবে আক্রান্তের এক জন খোঁজ মিলেছে গানসু প্রদেশ থেকে। চিনে ভাইরাসের ভরকেন্দ্র হুবেই প্রদেশ থেকে আজ ৪ জনের মৃত্যুর খবরও মিলেছে। চিনে সব মিলিয়ে আক্রান্তের সংখ্যা এখন ৮১ হাজার পেরিয়ে গিয়েছে।
উল্লেখ্য, প্রবীণরা বেশি ঝুঁকির মধ্যে রয়েছেন। কারণ বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তাদের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল হয়।
বিশেষজ্ঞদের মতে, বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল ও ফুসফুসও সহজে সংক্রমণের ঝুঁকিতে থাকে। এছাড়া যাদের বিভিন্ন রোগ রয়েছে যেমন- ডায়াবিটিস, হৃদরোগ, উচ্চ-রক্তচাপ, ফুসফুসের সমস্যা, কিডনির জটিলতা, তাদের ক্ষেত্রে এই ভাইরাস প্রাণঘাতী হতে পারে।
(ঢাকাটাইমস/৩১ মার্চ/আরজেড/এজেড)