চাঁদপুরে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে জেলে কার্ডে টাকা নেয়ার অভিযোগ

প্রকাশ | ৩১ মার্চ ২০২০, ১৮:০১ | আপডেট: ৩১ মার্চ ২০২০, ১৮:১১

চাঁদপুর প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস

চাঁদপুরের হাইমচর উপজেলার নীল কমল ইউনিয়নে জাটকা রক্ষা কর্মসূচির বিপরীতে জেলেদের বিজিএফের খাদ্য সহায়তার কার্ড প্রতি ২০০ টাকা করে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে চেয়ারম্যান সালাউদ্দিন সর্দারের বিরুদ্ধে। চাল বিতরণ করার আগেই তিনি তার অনুগত ইউপি সদস্যদের দিয়ে বরাদ্দ পাওয়া জেলেদের প্রত্যেকের কাছ থেকে ২০০ টাকা করে নিয়েছেন। প্রতিবছর চেয়ারম্যান নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে জেলেদের কাছ থেকে অর্থ নেয়ার বিষয়টি সচেতন অনেকে জানলেও তার প্রভাব এবং ভয়ে মুখ খুলছে না। জেলেদের জন্য বছরের দুটি বরাদ্দ এলে টাকা হাতিয়ে নেন চেয়ারম্যান ও তার অনুগত ইউপি সদস্যরা।

এলাকাবাসী ও ভুক্তভোগী জেলেরা জানান, এ বছর মার্চ-এপ্রিল দুই মাস জাটকা রক্ষা কর্মসূচির চাল এখনও বিতরণ হয়নি। কিন্তু চেয়ারম্যান আগ থেকেই জেলেদের কাছ থেকে ২০০ টাকা করে নিয়ে গেছেন। এর আগে ২০১৯ সালে ১০০ টাকা করে নিলেও এ বছর তা বাড়িয়ে ২০০ টাকা করেছেন। তার এই ধরনের কর্মকাণ্ডের বিষয়ে গণমাধ্যমে এর আগে বেশ কয়েকবার সংবাদ প্রকাশ হয়। নিজের ইচ্ছেমত চেয়ারম্যান পরিষদ পরিচালনা করার কারণে বেশ ক’জন ইউপি সদস্য তার বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেন প্রশাসনের নিকট। কিন্তু চেয়ারম্যান বিভিন্নভাবে চেষ্টা তদবির চালিয়ে রক্ষা পায়।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, নীল কমল ইউনিয়নে নিবন্ধিত জেলে সংখ্যা তিন হাজার ৪৯৫জন। এর মধ্যে এ বছর সরকারিভাবে সব জেলের জন্য বরাদ্দ আসেনি। সংখ্যানুসারে কোনো কোনো ওয়ার্ডে প্রায় ৭০ জন করে জেলে খাদ্য সহায়তার বরাদ্দ থেকে বাদ পড়েছেন। আনুপাতিক হারে পাঁচ থেকে ৬০০ জেলের বরাদ্দ না এলেও তিন হাজার জেলের কাছ থেকে আনুমানিক পাঁচ-ছয় লাখ টাকা উত্তোলন হয়েছে। এভাবে যতবার খাদ্য সহায়তা দেয়া হয়। চেয়ারম্যান প্রত্যেক জেলের কাছ থেকে টাকা নিচ্ছেন। এছাড়াও চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে চাঁদপুর সিএসডি গোডাউনে বিএজএফসহ অন্যান্য বরাদ্দের চাল বিক্রির অভিযোগ দীর্ঘদিনের।

নীল কমল ইউনিয়নের নিবন্ধিত জেলেদের মধ্যে ৩ নম্বর ওয়ার্ডের রহিম বাদশা, নুর মো. বেপারী, মরন আলী, সফিক গাজী, সফিক বহর, শাহজাহান সর্দার, আলাউদ্দিন লস্কর, জালাল সর্দার ছোবহান খালাসী ২০০ টাকা করে দিয়েছে বলে গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন। এভাবে প্রত্যেক ওয়ার্ডের বরাদ্দ পাওয়া জেলেদের কাছ থেকে ২০০ টাকা করে নেয়া হয়েছে। কোনো জেলে টাকা না দিলে তাকে চাল দেয়া হয় না। বরং চেয়ারম্যান তাদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করেন।

এই বিষয়ে ইউপি চেয়ারম্যান সালাউদ্দিন সর্দার বলেন, একটি কুচক্রি মহল আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে। আমি জেলেদের থেকে টাকা নিয়েছি, প্রমাণ করতে পারলে আমার বিচার হবে। আর নহে যে বা যারা আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ দিয়েছে তাদের বিচার হবে।

তিনি বলেন, আমার ইউনিয়নে নিবন্ধিত জেলে সংখ্যা তিন হাজার ৪৯৫ জন। কিন্তু ৮০০ কার্ড কম এসেছে। বিষয়টি আমি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে জানিয়েছে। এ ছাড়াও আড়াইশ টন চাল টলারে আনতে ভাড়া দিতে হয়। ভাড়াতো আর আমি দেবো না।

জেলা প্রশাসক মাজেদুর রহমান খান জানান, নিবন্ধিত জেলেদের চার কেজি করে চাল দেয়ার নিয়ম রয়েছে। প্রত্যেক জেলেকে সে পরিমান চাল বিতরণ করতে হবে। জেলেদের নিকট থেকে টাকা নেয়ার এমন অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে। কাউকে ছাড় দেয়া হবে না।

(ঢাকাটাইমস/৩১মার্চ/কেএম)