মৃত্যুপুরী ইতালিতে মৃতের সংখ্যা ১২ হাজার ছাড়াল

প্রকাশ | ৩১ মার্চ ২০২০, ২৩:০৪

কমরেড খোন্দকার, ইউরোপ ব্যুরো

করোনাভাইরাসে মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়েছে ইউরোপের দেশ ইতালি। মৃত্যুর সংখ্যা যেমন দিনদিন বাড়ছে, তেমনি বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। করোনা আতঙ্কে  হতাশায় দিন কাটাচ্ছে ইতালির ছয় কোটি মানুষ।

মঙ্গলবার একদিনে ৮৩৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। আগের দিন সোমবার এ সংখ্যা ছিল ৮১২ জন। এ পর্যন্ত মোট মৃত্যুর সংখ্যা ১২ হাজার ৪২৮ জন।

একদিনে নতুন আক্রান্ত চার হাজার ৫৩ জন। দেশটিতে গুরুতর অসুস্থ রোগীর সংখ্যা চার হাজার ২৩ জন। চিকিৎসা শেষে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ১৫ হাজার ৭২৯ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ১১০৯ জন। চিকিৎসাধীন রোগীর সংখ্যা ৭৭ হাজার ৬৩৫ জন।

এ নিয়ে দেশটিতে মোট আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা এক লাখ পাঁচ হাজার ৭৯২ জনে দাঁড়িয়েছে বলে জানিয়েছেন নাগরিক সুরক্ষা সংস্থার প্রধান অ্যাঞ্জেলো বোরেল্লি।

এদিকে আজ করোনাভাইরাসে নিহতদের স্মরণে সারাদেশে জাতীয় পতাকা অর্ধনিমিত রাখাসহ এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয় এবং ইতালির বেসরকারি টেলিভিশন মিডিয়াসেট তাদের সম্প্রচার স্থানীয় সময় দুপুর (১২:০০ থেকে ১২:০১ ) এক মিনিট বন্ধ রাখে।

প্রধানমন্ত্রী জোসেপ্পে কন্তে জনগণের সচেতনতা বৃদ্ধি করতে, মনে সাহস জোগাতে প্রায় প্রতিদিনই সান্ত্বনা দিয়ে টেলিভিশনে ভাষণ দিচ্ছেন। কারো যেন মনোবল এখনই দুর্বল হয়ে না যায়। করোনা মোকাবিলায় জনগণের জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ অব্যাহত রেখেছেন প্রধানমন্ত্রী। জোসেপ্পে  কন্তে দেশজুড়ে ‘জরুরি নয়’ এমন সব ধরনের ব্যবসা বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। এছাড়া বাড়ির বাইরে সবধরনের খেলাধুলা ও ব্যায়াম নিষিদ্ধ করা হয়েছে। পাশাপাশি ভেন্ডিং মেশিনের ব্যবহারও নিষিদ্ধ করা হয়েছে। সুপার মার্কেট, ফার্মেসি, পোস্ট অফিস ও ব্যাংক খোলা থাকবে এবং গণপরিবহনও সচল থাকবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

তিনি আরও বলেন, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ইতালি বর্তমানে কঠিন সময় পার করছে। তবে দেশের এই কঠিনতম সময় সহসাই কাটিয়ে উঠার আশ্বাস দেন তিনি। এদিকে লকডাউন ১২ এপ্রিল পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে।

ইতালির ২১ অঞ্চলের মধ্যে লোম্বারদিয়ায় করোনার সবচেয়ে বেশি  আক্রান্ত (মিলান, বেরগামো, ব্রেসিয়া, ক্রেমনাসহ) ১১টি প্রদেশ। আজ এ অঞ্চলে মারা গেছে ৩৮১ জন। শুধু এ অঞ্চলেই মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে সাত হাজার  ১৯৯ দাঁড়িয়েছে। এ  অঞ্চলে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৪৩ হাজার ২০৮ জন।

লোম্বারদিয়ার প্রসিডেন্ট আত্তিলিয়ো ফোনতানা বলেন, মাত্র ১৪ দিনের মধ্যে আমরা ফেয়ারা মিলানো সিটিকে একটি আপদকালীন অস্থায়ী হাসপাতাল তৈরি করতে পেরেছি। এ হাসপাতাল তৈরি করতে মোট ২১ মিলিয়ন ইউরো ব্যায় হয়েছে। যার পুরোটাই এক হাজার ২০০ লোকের সহযোগিতায়। তিনি হাসপাতাল তৈরিতে সহযোগিতার হাত বাড়িতে দেয়ার জন্য সকলকে ধন্যবাদ জানান এবং দিন-রাত পরিশ্রম করে যে ৫০০ শ্রমিক এই হাসপাতালটি নির্মাণ করেছে, তাদের ধন্যবাদ জানান।

তিনি আরও বলেন, হাসপাতালটি পলি ক্লিনিকের তত্ত্বাবধানে থাকবে। এখানে ২০০ ডাক্তার এবং ৫০০ সেবিকা নিয়মিত কাজ করবে।

ইতালিতে করোনায় আক্রান্তদের সহযোগিতায় আলবেনিয়া, চীন, কিউবা  এবং রাশিয়া থেকে আগত মেডিকেল টিম ইতালির বিভিন্ন অঞ্চলে  সেবা দিয়ে যাচ্ছে।

(ঢাকাটাইমস/৩১মার্চ/এলএ/জেবি)