রেহানার রক্ত মাখা জামা ও আমাদের ঋণ

জাহরা জাহান পারলিয়া
 | প্রকাশিত : ০১ এপ্রিল ২০২০, ০৯:০৩

মহান মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানিরা কতনা নির্মম অত্যাচার করেছে। আমরা নতুন প্রজন্ম সেসব স্বচক্ষে দেখিনি। শুধুমাত্র পড়াশোনা করে ও কিছু জাদুঘরে রক্ষিত স্মৃতিচিহ্ন দেখে অনুধাবন করার চেষ্টা করি। মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে যারা আত্মত্যাগ করেছিলেন এখনও তাদের সঠিক মূল্যায়ন করতে পারিনি। এখনও অবহেলা আর অবজ্ঞায় রয়েছে অনেক কিছুই।

জাহরা জাহান পারলিয়া নামে একজন লিখেছেন- আমরা এক ছোট বাচ্চার কথা জানি, মুক্তিযুদ্ধের সময় পাক হানাদার বাহিনী যাকে পায়ে পিষে মেরে ফেলে। বাচ্চাটার সেই রক্তমাখা জামাটা মুক্তিযুদ্ধ যাদুঘরে রয়েছে। তার নাম রেহানা। রেহানার বাবা আবদুস সালাম জামাটি মুক্তিযুদ্ধ যাদুঘরে প্রদর্শনীর জন্য দিয়েছিলেন।

আবদুস সালাম একজন মুক্তিযোদ্ধা। স্ত্রী আর চার মাস বয়সী মেয়েকে রেখে সশস্ত্র যুদ্ধে অংশ নিতে চলে যান। পরে রাজাকার ও পাকিস্তানী বাহিনী আবদুস সালামের খোঁজে গিয়ে তাঁকে না পেয়ে রেহানাকে মেরে ফেলে। যখন আমি ক্লাস থ্রি অথবা ফোর এ পড়ি, বড় মামা নিয়ে গিয়েছিলেন মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে ঘুরতে। সেই প্রথম আমার 'রেহানার জামা' দেখা।

গতবছর খুলনার দিঘলিয়া গিয়েছিলাম ঘুরতে। প্রথমে পালপাড়া হয়ে কবি কৃষ্ণচন্দ্রের বাড়ি (যা ভেঙ্গে এখন আধুনিক বাড়ি নির্মাণ করা হচ্ছে) দেখে যখন জাদুঘরে যাব, সরু রাস্তার ধারে একটা সাইনবোর্ডে চোখ আটকে গেল।

তাতে লেখা ছিল- 'শহীর শিশু রেহানার স্মৃতি কুটির' হ্যাঁ, ছবিতে যেমন দেখা যাচ্ছে, এমনই অবহেলায় এবং যেকোনো সময় দখল হয়ে যাওয়ার জন্য পড়ে আছে আমাদের এই ছোট্ট মুক্তিযোদ্ধার বাড়িটা।

ছোট্ট শিশু রেহানার রক্তের কাছে আমরা চিরঋণী। তার রক্তে ভেজা জামা আমাদের ধিক্কার দিচ্ছে। ধিক্কার দিচ্ছে আমাদের বিবেককে। আসুন রেহানার রক্তে ভেজা জামার যথার্ত সম্মান করি। এভাবে অসম্মান আর অবহেলায় ফেলে না রাখি। মহান স্বাধীনতাকে অবমূল্যায়ন না করি।

[ফেসবুক থেকে নেওয়া]

সংবাদটি শেয়ার করুন

ফেসবুক কর্নার বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :