স্বামী হত্যার বিচারের আশায় পাঠাও চালক জুয়েলের স্ত্রী

আশিক আহমেদ, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ০১ এপ্রিল ২০২০, ১৫:২৪
মো. জুয়েল।

রাজধানীর আদাবরে পাঠাও চালক মোহাম্মদ জুয়েল হত্যা মামলার কোনো কুলকিনারা করে উঠতে পারেনি পুলিশ। আলোচিত এই মামলার আসামিরা জামিনে বেরিয়ে এসে ঘুরে বেড়াচ্ছে বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে।

এদিকে আট মাসেও মামলাটির কোনো অগ্রগতি না হওয়ায় ক্ষোভ ও হতাশার মধ্যে দিন কাটছে নিহত জুয়েলের স্ত্রী আরজিনার। দুই শিশুসন্তানকে নিয়ে স্বামী হত্যার বিচারের আশায় প্রহর কাটছে তার।

মাদক কারবার, এলাকার আধিপত্য নিয়ে বিরোধের জেরেই রাজধানীর আদাবর এলাকায় খুন হন রাইড শেয়ারিং কম্পানি পাঠাও চালক মোহাম্মদ জুয়েল। গত বছরের ১১ জুলাই দিবাগত রাতে তাকে কুপিয়ে খুন করা হয়। এ ঘটনায় নিহত জুয়েলের স্ত্রী আরজিনা খাতুন বাদি হয়ে পরের দিন ১৮ জনের নামে আদাবর থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। মামলাটির তদন্ত করছেন আদাবর থানার উপপরিদর্শক (এআই) রফিকুল ইসলাম।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এলাকায় যুবলীগকর্মী পরিচয়ধারী মিজান ও খোকনসহ বেশ কয়েকজনের সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের প্রতিবাদ করায় হত্যার শিকার হওয়ার প্রায় তিন মাস আগে জুয়েলের ওপর সন্ত্রাসীরা হামলা চালায়।

ওই ঘটনায় জুয়েল আদাবর থানায় একটি মামলা করেন। মামলায় খোকন ও মিজানকে আসামি করায় তারা নানাভাবে জুয়েলকে হুমকি দিয়ে আসছিল। ওই মামলায় পুলিশ খোকনকে গ্রেপ্তার করলে তারা আরো ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। এর জের ধরেই জুয়েল হত্যার শিকার হন বলে জানা যায়।

মামলার এজাহারে জুয়েলের স্ত্রী আরজিনা বলেছেন, তার স্বামী পাঠাও অ্যাপস ব্যবহার করে মোটরসাইকেল চালাতেন। ১১ জুলাই সকালে মোটরসাইকেল নিয়ে বাসা থেকে বের হন। রাত ১০টার দিকে ফোন করে জুয়েল জানান, আদাবর লোহার সেতুর ওপর তাকে মারার জন্য মিজান, খোকন ও মনিরসহ তাদের লোকজন খুঁজছে। এর এক ঘণ্টা পরেই জুয়েলকে কুপিয়ে ওই এলাকার বালুর মাঠে ফেলে রাখা হয়।

পুলিশের একটি সূত্র জানায়, লিটন ও জাকির এই মামলার এজাহারভুক্ত আসামি। জাহিদুল তাদের সহযোগী। জুয়েলকে কুপিয়ে হত্যার সময় জাহিদুলও এলাকায় উপস্থিত ছিল। এরা সবাই মিলে পরিকল্পিতভাবে জুয়েলকে হত্যা করে। তদন্তে এ হত্যাকান্ডের আরো অনেক কারণ পাওয়া গেছে। হত্যাকান্ডে জড়িতরা সন্ত্রাসী কর্মকান্ডেও জড়িত। এলাকায় আধিপত্যের বিরোধে তারা জুয়েলকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে।

জুয়েল রাইড শেয়ারিং কম্পানি পাঠাওয়ের মোটরসাইকেল চালাতেন। তার বাড়ি কুড়িগ্রাম জেলার সদর থানার খামারভোলোখানা গ্রামে। তিনি স্ত্রী সন্তান নিয়ে রাজধানীর আদাবর ১০ নম্বর সড়কের একটি বাড়িতে ভাড়া থাকতেন।

মামলার বাদি আরজিনা খাতুন ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘আটমাস হতে চলল এখনও পর্যন্ত কোনো মামলার অগ্রগতির খোঁজখবর নেই। পুলিশ মাঝেমধ্যে আমার সঙ্গে যোগাযোগ করে থাকে। শুনেছি সব আসামি জামিনে বেরিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে।’

তিনি বলেন, ‘সাত বছরের একটি ছেলে ও তিন বছরের একটি মেয়েকে নিয়ে কোনো রকম জীবনযাপন করছি। একটি পোশাক কারখানায় কাজ করার চেষ্টা করছি। কিন্তু তাও পাচ্ছি না।’

এই মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উপপরিদর্শক (এসআই) রফিকুল ইসলাম ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘আরজিনা খাতুন ১৮ জনের নাম উল্লেখ করে আর কয়েকজনকে অজ্ঞাত আসামি হিসেবে মামলা করেন। এই মামলায় মারুফ, আরিফ বয়াতি, লিটন, জাকির, সোহাগ এবং ভাঙ্গারি সুমনকে আমরা গ্রেপ্তার করেছি। বাকী আসামিরা হাইকোর্ট থেকে জামিন নিয়েছিল। শুনেছি তারা পরে নিম্ন আদালতে আত্মসর্ম্পন করলে তাদেরকে কারাগারে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।’

এখন কতজন আসামি কারাগারে আছেন আর কতজন জামিন আছেন জানতে চাইলে এসআই রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘কতজন আসামি কারাগারে আছেন সেটা আমি এখন সঠিক বলতে পারব না’।

কী কারণে এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছিল এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আদাবর এলাকায় চোরাই লাইনের সংযোগ ও জুয়েলকে আসামি লিটন মারধোর করেছিল। সেই ঘটনায় জুয়েল একটি মামলা করেছিল ওই মামলা উঠিয়ে না নেওয়ার কারণেই জুয়েল খুন হয়।’

(ঢাকাটাইমস/০১এপ্রিল/এএ/ডিএম)

সংবাদটি শেয়ার করুন

রাজধানী বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

রাজধানী এর সর্বশেষ

পাঁচ বছরেও শেষ হয়নি বনানীর এফআর টাওয়ারে অগ্নিকাণ্ডের বিচার

এক হাতে ইফতারের পানির বোতল, আরেক হাতে যান চলাচলের ইশারা ডিসির

এলিফ্যান্ট রোডে বাসা থেকে শিক্ষার্থীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার

ঢাকাস্থ কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা কল্যাণ সমিতির ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত

অসুস্থতার যন্ত্রণা সইতে না পেরে ছুরিকাঘাতে রিকশাচালকের আত্মহত্যা

রাজধানীর ধোলাইপাড়ে পুলিশ কনস্টেবলের স্ত্রীর ‘আত্মহত্যা’

বুধবার থেকে এক ঘণ্টা বাড়ছে মেট্রোরেল চলাচলের সময়

ঈদকে সামনে রেখে ডিবি-সাংবাদিক পরিচয়ে অপহরণের ফাঁদ

ভবিষ্যৎ নগর উন্নয়নে জাইকা ও ইঞ্জিনিয়ার ইনস্টিটিউটের সঙ্গে রাজউকের সভা

২৭ মার্চ থেকে রাত ৯টার পরও চলবে মেট্রোরেল

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :