করোনার দিনপঞ্জি: চামামার সঙ্গে আলাপ।পর্ব-৭

প্রকাশ | ০১ এপ্রিল ২০২০, ১৯:১৯ | আপডেট: ০১ এপ্রিল ২০২০, ১৯:২১

সালাহ্ উদ্দীন পল্লব

চামামা কোয়ারেন্টাইন ডে-০৭

: হ্যালু মামু? আসসালামুআলাইকু!

: ওয়ালাইকুম সালাম চামামা! এই সময়ে কল দিলে?

: কল না দিয়া কি করুম! আম্নের ঘটনা শুইন্যা আবেগ হইতেছে আমার!

: আমার আবার কি ঘটনা?

: ক্যান! আম্নে নাকি বাসা থিকা চা বানাইয়া কাপে কইরা চা নিয়া আমার বন্ধ দুকানের সাম্নে খাড়ায় খাড়ায় খাইয়া আইছেন? পাশের মুদি মুন্সি আর আস্তর খসা বাড়ির বজ্জাত দারোয়ান দুইজনেই আমারে খবর দিলো! চাইরদিক নাড়া দিয়া ফালাইছেন মিয়া!

: আর বলো না.... তোমার দোকানে বসে চা খাওয়া মিস করছিলাম, তাই এই কান্ডটা করেছি!

: আল্লাহ আমাগো সবতেরে ভালো রাখলে দুকান খুইল্যা সেকেন্ড চা ডা আমি আম্নেরেই খাওয়ামু কতা দিলাম!

: সেকেন্ড চা মানে? প্রথমটা কার?

: শেখের বেটির জইন্য ওইডা ইস্পিশাল গো মামু! আইজ এর থেইকা আর কুনো আবেগ নাই!

: কেনো কেনো!

: ঘরে বইয়া মামীর জামা ভাজ কইরা আর পুলার লগে কার্টুন দেইখা দিন পার করলে বুঝবেন কি! আম্নের মতো দ্যাশের বেশিরভাগ দায়িত্ব ওলা লুকগুলা এই কামই করতাছে! আরে মিয়া শেখের বেটি আইজকা নিজে বইসা কইছে, কেউ যেন না খাইয়া থাকে এমুন ব্যাবস্থা লইতে, কুনো চুরিদারি হইলে তিনি কাওরে ছাইড়া দিবেন না! চেহারা দেখাইয়া দেখাইয়া রিলিফ দেওন বন্ধ! পাব্লিক ঘরের থিকা নিজেরা বাইর হইয়া ভুট দিয়া এম্পি-উম্পি বানাইছে, তাগো ঘরে গিয়া সাহাইয্য করনের সময় অখন! তিনি এইডাও কইছে মশা নাকি তিনারে ঘরে ঢুইকা ঘুমানির সুমায় গান শুনাইছে! দেহেন দেহি মশার সাহস! এতো এতো পাহারার পরেও ঢুইকা গেলো!

: আহা! কিসের মধ্যে কি! মশা কি আর পাহারা বোঝে?

: আম্নে মিয়া ফেলাইন্যা চা পাতা থিকাও আকাইম্মা! আরে এইডা দিয়া মেয়র সাহেবগো বুঝাইছেন তিনি। এই পাহারার দায়িত্বে তো উনারাই আছেন! কত সুন্দর কইরা তাগো কাম মনে করায় দিলো সরকার নেতা!

: হুম, তা তো ঠিক বলেছো। কিন্তু...

: চুপ করেন মিয়া, আম্নের কিন্তুকের কুনো যুক্তি নাই। সমস্যা আমাগো। আমরাই নিজেগো ফলাইতে গিয়া এমন লিডারটারে কই কই নামাইয়া আনি তার দিক বেদিক নাই। যেই কাম গুলা বড় বড় মুন্ত্রী সচিব নিজেরাই বুদ্ধি পরামর্শ কইরা সাইরা ফালাইতে পারতো, সেইডার জইন্য উনারে যদি সয়ং বইসা অর্ডার করতে হয় তাইলে বুঝতে হইবো উনার চাইর পাশে কেমুন সব লুক আছে! এই উছিলায় এইসব লুক সিদা হইয়া যাক এইডাই চাই।

: বাজে বকবক করো না তো! উনার চার পাশে সবাই কোয়ালিফাইড মানুষজন আছে...

: চুউপ মিয়া! আবার কতা কন? আম্নেগো এই বিজনিস ভাষার ব্যাখ্যা দিলে বছর পার হইয়া যাইবো! আমি যেইডা কইছি এইডাই ঠিক! তয় এই সবের পাশাপাশি শেখের বেটি যেন আরেকটা বিষয় খেয়াল করে এইডাই চাই। কেউ কেউ হাজার খানেক মাইনষের লাইগা কুরনা হাস্পাতাল বানাইতেছে। হেরা নিশ্চই ভবিষ্যতের ব্যাবসা মাথায় লইয়াই নামছে! এইডা যেনো খালি ব্যাবসা আর বড়লুকেগো হাস্পাতাল না হয়। সবাই যেন যাইতে পারে আর সবাই যেন অল্প টেকায় উপকার পায়! এই এক দ্যাশে আর কত লুট হইবো!

: হুম তা তুমি ঠিক বলেছো চামামা!

: আমারে তেল দিয়া লাভ নাই, দুকান খুল্লে আমার পরথম চা শেখের বেটির! তিনার জইন্য আমি নুতন কাপ প্রিচ কিনুম! আর আম্নে আইজ যে কাপ লইয়া নামছিলেন ওইডাই লইয়া আইসেন। রাখলাম ফুন!