ইতালিতে আরও ৭২৭ জনের মৃত্যু

প্রকাশ | ০১ এপ্রিল ২০২০, ২৩:২০

কমরেড খোন্দকার, ইউরোপ ব্যুরো

করোনাভাইরাসে ইতালিতে মৃত্যুর মিছিল অব্যাহত আছে। বুধবার প্রাণহানি হয়েছে মোট ৭২৭ জন। মঙ্গলবার এ সংখ্যা ছিল ৮৩৭ জন। এ পর্যন্ত মোট মৃত্যুর সংখ্যা ১৩ হাজার ১৫৫ জন। একদিনে নতুন আক্রান্ত চার হাজার ৭৪২ জন। দেশটিতে গুরুতর অসুস্থ রোগীর সংখ্যা চার হাজার ৩৫ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছে এক হাজার ১১৮ জন। চিকিৎসাধীন ৮০ হাজার ৫৭২ জন। এ নিয়ে দেশটিতে মোট আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা এক লাখ ১০ হাজার ৫৭৪ জন। নাগরিক সুরক্ষা সংস্থার প্রধান অ্যাঞ্জেলো বোরেল্লি এসব তথ্য জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, জনগণকে সুরক্ষা দিতে সরকার করোনা মোকাবিলায় সর্বোচ্চ চেষ্টা চালাচ্ছে। ফলে এ পর্যন্ত চিকিৎসা শেষে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছে ১৬ হাজার ৮৪৭ জন।

ইতালির ২১ অঞ্চলের মধ্যে লোম্বারদিয়ায় করোনার সবচেয়ে বেশি  আক্রান্ত (মিলান, বেরগামো, ব্রেসিয়া, ক্রেমনাসহ) ১১টি প্রদেশ। আজ এ অঞ্চলে মারা গেছে ৩৯৪ জন। শুধু এ অঞ্চলেই মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে সাত হাজার ৫৯৫ জনে দাঁড়িয়েছে। মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৪৪ হাজার ৭৭৩ জন। আজ  মোট আক্রান্তের সংখ্যা এক হাজার ৫৬৫ জন। সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছে ১১ হাজার ৯২৭ জন।

এদিকে বেরগামোতে মোট কতজন করোনাভাইরাসে প্রানহাণি হয়েছে তার মোট সংখ্যা নিয়ে সন্দেহ দেখা দিয়েছে। টিজিকম২৪ এর এক খবরে বলা হয়েছে, ‘সরকার থেকে বলা হচ্ছে- এ প্রভেন্সিতে প্রাণহানি হয়েছে মোট ২০৬০ জন, কিন্তু বেরগামোর স্থানীয় প্রশাসন বলছে- তাদের নথিপত্রে দেখা যাচ্ছে যে মৃত্যুর সংখ্যা দ্বিগুণ (৪৫০০ জন)। বেরগামোর হাসপাতালগুলোর মর্গে লাশ রাখার জায়গা নেই। এমনকি জায়গা নেই কবরস্থানগুলোতেও। সেনাবাহিনী লাশগুলো অন্য শহরে নিয়ে দাফন করছে।

করোনাভাইরাস নিয়ে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের মধ্যে চলছে টানাপেড়েন। ইতালিসহ কয়েকটি দেশ এই দুর্যোগকালে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নভুক্ত কয়েকটি দেশের কাছে সহযোগিতা চেয়ে পায়নি। এছাড়াও এই দুর্যোগকালে ‘করোনাবন্ড’ নামে একটি আর্থিক ফান্ড গঠনের প্রস্তাব দিলে নেদারল্যান্ড, জার্মান সরাসরি বিরোধিতা করে। এ ঘটনায় ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের ভবিষ্যত নিয়েও সন্দেহ রয়েছে।

এছাড়াও ইতালির সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী লেগা নর্দ দলের নেতা করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন থেকে বেরিয়ে যাওয়ার হুমকি দিয়েছেন।

লোম্বারদিয়ার প্রেসিডেন্ট আত্তিলিয়ো ফোনতানা বুধবার সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, বেরগামো ফেয়ারাকে নতুন হাসপাতাল হিসেবে গড়ে তোলা হয়েছে। কয়েকদিনের মধ্যে হাসপাতাল উদ্বোধন করা হবে। দিনরাত পরিশ্রম করে যেসব শ্রমিক এ হাসপাতাল নির্মাণে সহযোগিতা করেছে তিনি সবাইকে ধন্যবাদ জানান।

এছাড়া পূর্বঘোষিত পদক্ষেপে ‘জরুরি’ সরবরাহ ব্যবস্থা ছাড়া ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোকে সব ধরনের কার্যক্রম বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। হাসপাতাল, সড়ক ও রেলপথ বাদে সব ধরনের নির্মাণ কাজও বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে। বাড়ির বাইরে সব ধরনের খেলাধুলা ও ব্যায়াম নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

এদিকে প্রধানমন্ত্রী জোসেপ্পে কন্তের আহবানে সাড়া দিয়ে দেশের এই দুর্দিনে ৭ হাজার ২২০ জন অবসরপ্রাপ্ত ডাক্তার, নার্স ও অ্যাম্বুলেন্স কর্মী স্বাস্থ্যসেবা দিতে করোনা আক্রান্তদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন।

করোনাভাইরাসে গত ২৪ ঘন্টায় ইউরোপের অন্যান্য দেশে প্রাণ হারানোর সংখ্যা: স্পেন ৫৮৯ জন, জার্মান ৪৬  জন, ইংল্যান্ড ৫৬৩ জন, সুইজারল্যান্ড ২৮ জন, বেলজিয়াম ১২৩ জন, হল্যান্ড ১৩৪ জন, অস্ট্রিয়া ১৮ জন, পর্তুগাল ২৭ জন, নরওয়ে চারজন, সুইডেন ৫৯ জন, ডেনমার্ক ১৪ জন, পোল্যান্ড তিনজন, রোমানিয়া চারজন, গ্রিস একজন।

(ঢাকাটাইমস/১এপ্রিল/এলএ)