করোনার প্রভাব

১৫ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন রেমিট্যান্স এসেছে মার্চে

প্রকাশ | ০২ এপ্রিল ২০২০, ১৮:৫১

অর্থনৈতিক প্রতিবেদক, ঢাকা টাইমস
ফাইল ছবি

সদ্য সমাপ্ত মার্চ মাসে প্রবাসী শ্রমিকদের পাঠানো আয় (রেমিট্যান্স)  এসেছে ১২৮ কোটি ৬০ লাখ ডলার বা ১১ হাজার ৫৯ কোটি ৬০ লাখ টাকা (১ ডলার সমান ৮৬ টাকা ধরে)। এটি গত ফেব্রুয়ারি মাসেও এসেছিল ১৪৫ কোটি ২২ লাখ ডলার বা ১২ হাজার ৪৮৮ কোটি ৯২ লাখ টাকা। অর্থাৎ এক মাসের ব্যবধানে রেমিট্যান্স কমেছে ১৬ কোটি ৬২ লাখ ডলার বা ১ হাজার ৪২৯ কোটি ৩২ লাখ টাকা। যা গত ১৫ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন।

অর্থনীতি সংশ্লিষ্ট্রদের ধারণা, বিশ্বব্যাপী করোনার প্রভাবে প্রবাসী আয় কমে এসেছে এবং আগামীতে আরও কমতে পারে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৯ সালের মার্চ মাসে ১৪৫ কোটি ৮৫ লাখ ডলারের সমপরিমাণ অর্থ দেশে পাঠান প্রবাসীরা। চলতি বছরের মার্চ শেষে এসেছে ১২৮ কোটি ৬০ লাখ  ডলার।

সংশ্নিষ্টরা জানান, বিশ্বব্যাপী করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ায় অনেক দেশে লকডাউন চলছে। বিশেষ করে বাংলাদেশে রেমিট্যান্স আহরণে শীর্ষে থাকা সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, যুক্তরাষ্ট্র, কুয়েত, মালয়েশিয়া, যুক্তরাজ্য, ওমান, কাতার, ইতালি, বাহরাইনসহ অধিকাংশ দেশে অচলাবস্থা বিরাজ করছে। বেশিরভাগ দেশে চলাচলে নিষেধাজ্ঞা থাকায় হাতে টাকা থাকলেও অনেকে পাঠাতে পারছেন না। আবার অনেকে ভবিষ্যৎ সংকট মোকাবিলার জন্য সঞ্চয় করছেন।

বিদেশে যারা অ্যাপভিত্তিক ভাড়া গাড়ি বা ট্যাক্সি চালিয়ে জীবন নির্বাহ করেন, অস্থায়ীভাবে দৈনিক মজুরিভিত্তিতে হোটেল, রেস্তোরাঁসহ বিভিন্ন কাজ করেন, তারা নিজেরা অনিশ্চয়তায় জীবন পার করছেন। এর বাইরে করোনা আতঙ্কে অনেক প্রবাসী এরই মধ্যে দেশে ফিরেছেন। অনেকেই পরিস্থিতির উন্নতি হলে দেশে ফেরার অপেক্ষায় রয়েছেন। করোনা পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ার পরও অনেকে যে কর্মহীন হয়ে পড়বেন, সে আভাস মিলছে বিভিন্ন সংস্থার প্রতিবেদনে। ফলে আগামীতে রেমিট্যান্স আরও কমার আশঙ্কা করা হচ্ছে।

সংশ্নিষ্টরা জানান, দেশ স্বাধীনের পর থেকে সাধারণত কখনও রেমিট্যান্সে ধারাবাহিকভাবে পতন দেখা যায়নি। তবে ২০১৫ সাল থেকে টানা তিন বছর রেমিট্যান্স কমে। বিশেষ করে বিদেশ থেকে হুন্ডির মাধ্যমে পাঠানো অর্থ মোবাইল ব্যাংকিং ব্যবহার করে সহজে সুবিধাভোগীর কাছে পৌঁছে দেওয়ার সুযোগের ফলে অনেকেই এ পথ বেছে নিচ্ছিলেন। এ নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও সরকার। তখন মোবাইল ব্যাংকিংয়ে লেনদেন কমানোসহ নিয়ন্ত্রণমূলক নানা উদ্যোগের ফলে বাড়তে শুরু করে। রেমিট্যান্সে আরও গতি এনে দেয় ২ শতাংশ হারে প্রণোদনার ঘোষণা।

গত বছরের জুলাই থেকে রেমিট্যান্সের ওপর ২ শতাংশ হারে প্রণোদনা দিচ্ছে সরকার। প্রণোদনার অর্থ পরিশোধের জন্য চলতি অর্থবছরের বাজেটে তিন হাজার ৬০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। ফলে আগে অন্য উপায়ে অর্থ পাঠাতেন এ রকম অনেকেই ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স পাঠাচ্ছিলেন। ফলে বৈদেশিক আয়ের অন্যতম আরেক খাত রপ্তানি কমলেও রেমিট্যান্স বাড়ছিল।

ঢাকা টাইমস/ ০২ এপ্রিল/ আরএ