ময়মনসিংহে মৃতরা করোনাভাইরাস আক্রান্ত ছিলেন না

প্রকাশ | ০২ এপ্রিল ২০২০, ২২:০৫

ব্যুরো প্রধান, ময়মনসিংহ

ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে ২৬ মার্চ থেকে বুধবার পর্যন্ত উপজেলার সর্দি-জ্বরে আক্রান্ত হয়ে মৃতরা করোনাভাইরাস আক্রান্ত ছিলেন না। এ মৃত ব্যক্তিদের নিয়ে স্থানীয়দের মাঝে আতঙ্কের সৃষ্টি হয়। এই উপজেলায় মৃত চারজনের মধ্যে কেউ  করোনা আক্রান্ত ছিলেন না বলে জানিয়েছেন ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. নুরুল হুদা খান।

অপরদিকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজের প্রিন্সিপাল চিত্তরঞ্জন দেবনাথ জানিয়েছেন, ঈশ্বরগঞ্জের ওই ব্যক্তিদের করোনাভাইরাস শনাক্ত পরীক্ষায় নমুনা নেগেটিভ পাওয়া গেছে। বৃহস্পতিবারও চারজনের নমুনা সংগ্রহ করে রাজধানীর আইইডিসিআরে পাঠানো হয়েছে।

জানা যায়, গত ২৬ মার্চ ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার মাইজবাগ ইউনিয়নের কবীর ভুলসোমা গ্রামের নেওয়াজ আলীর কন্যা নাজমা (২৫), ২৭ মার্চ তার চাচা আব্দুর রাজ্জাক (৬০), ৩১ মার্চ ঈশ্বরগঞ্জে গোল্লা জয়পুর গ্রামের বোনের বাড়ি বেড়াতে এসে জেলার কেন্দুয়া উপজেলার জল্লি গ্রামের হোসেন আলী (২০) ও মধুপুর বাজারের আব্দুল বারেক (৬০) সর্দি-জ্বরে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। মৃত ব্যক্তিদের কোন পরীক্ষা ছাড়াই দাফন করা হয়।

ডা. নুরুল হুদা খান জানান, মাঠ পর্যায়ে মেডিকেল টিম তথ্যানুসন্ধান করে জানতে পারেন মৃত ব্যক্তিরা সর্দি-জ্বর ছাড়াও বিভিন্ন উপসর্গে ভুগছিলেন। মৃত ব্যক্তিদের পারিবারিক বর্ণনা মতে, তারা কেউই করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ছিলেন না। মৃত হোসেন আলীর বোন ইতি বেগম (২০) সর্দি-জ্বরে আক্রান্ত হওয়ার পর গত বুধবার ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে পরীক্ষা করা হয়। পরীক্ষায় তার শরীরে করোনাভাইরাসের কোন অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি।

কাকনহাটি গ্রামের লাল মিয়ার পুত্র সুমন মিয়া (৩০) সর্দি-জ্বরে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে বলে এলাকায় সংবাদ ছড়িয়ে পড়ে।

ঘটনার প্রেক্ষিতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানান, সুমন শ্বাসকষ্ট ও কিডনি রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। করোনার সাথে তার মৃত্যুর কোন সংশ্লিষ্টতা নেই।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের হাসপাতালের করোনা কন্ট্রোল রুম সূত্র জানায়, চারজনের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে এলাকায় যে করোনা গুজব ছড়িয়েছে তাতে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। সরকারি নির্দেশনা মেনে চললে করোনা প্রতিরোধ করা সম্ভব।

এদিকে বৃহস্পতিবার উপজেলার চরহোসেনপুর গ্রামে শিমুল তলায় জিয়াউর রহমান (৩৫) নামে এক করোনা রোগী এসেছে বলে শহরে গুজব ছড়িয়ে পড়ে। পরে ঈশ্বরগঞ্জ হাসপাতাল থেকে মেডিকেল টিম ঘটনাস্থলে গিয়ে তাকে উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পরীক্ষার জন্য পাঠায়।

চিত্তরঞ্জন দেবনাথ জানান, বুধবার নগরীরর এসকে হাসপাতালের আইসোলেশন ইউনিট থেকে তিনজন ও টাঙ্গাইলের মধুপুর থেকে একজনের নমুনা সংগ্রহ করে আইইডিসিআরে পাঠানো হয়। বৃহস্পতিবার সেখান থেকে নমুনার ফলাফল সকলেরই নেগেটিভ আসে। করোনা সন্দেহে আজও  এসকে হাসপাতাল থেকে চারজনের নমুনা আইইডিসিআরে পাঠানো হয়েছে।

(ঢাকাটাইমস/২এপ্রিল/এলএ)