যেভাবে তহবিলের টাকা পাবে পোশাক শিল্প
করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় রপ্তানিমুখী শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য পাঁচ হাজার কোটি টাকার যে প্যাকেজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষণা করেছেন সেটা কীভাবে পাবে সে বিষয়ে জানিয়েছেন তৈরি পোশাক প্রস্তুত ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সভাপতি ড. রুবানা হক।
বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, ‘এই তহবিল ব্যাংকের মাধ্যমে শ্রমিকদের বেতন দেয়ার জন্য ঋণ হিসেবে দেয়া হবে। যেখানে আমাদের দুই শতাংশ সার্ভিস চার্জ দিতে হবে। কারখানার স্যালারি সিট দেখে মাসিক হিসাব করে এ টাকা দেয়া হবে, বেশিও দেয়া হবে না কমও না।’
মার্চমাসের শ্রমিকদের বেতন নিজ নিজ প্রতিষ্ঠান দিতে হবে জানিয়ে রুবানা হক বলেন, এটা শুধু, এপ্রিল , মে ও জুন মাসের বেতন দেয়ার জন্য।
বৃহস্পতিবার রাতে গণমাধ্যমকে এসব তথ্য জানান বিজিএমই সভাপতি রুবানা হক।
করোনাভাইরাস সংক্রমণের ফলে উদ্ভুত পরিস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ২৫ মার্চ জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে রপ্তানিমুখী শিল্পের জন্য পাঁচ হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেন। এদিকে এ তহবিলের টাকা কিভাবে দেয়া হবে তার নীতিমালা ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগ এ সংক্রান্ত এক সার্কুলার জারি করেছে। সেখানে বলা হয়েছে, ঋণের সর্বশেষ কিস্তি নেওয়ার পর অর্থাৎ জুন ২০২০ মাসের বেতন/ভাতার বিপরীতে গৃহীত ঋণের পর ছয় মাস গ্রেস পিরিয়ডসহ মোট দুই বছরে ১৮টি সমান কিস্তিতে ব্যাংককে সার্ভিস চার্জসহ সমুদয় ঋণ পরিশোধ করতে হবে। কোনো ঋণ গ্রহিতার ঋণের কিস্তি যথাসময়ে পরিশোধিত না হলে প্রচলিত নিয়মে ওই ঋণ শ্রেণিকরণ করতে হবে এবং ঋণ গ্রহিতা খেলাপি হিসেবে বিবেচিত হবে। এক্ষেত্রে বকেয়া কিস্তির ওপর ২ শতাংশ হারে দণ্ড সুদ আরোপ করা যাবে। ছয় মাসের গ্রেস পিরিয়ডসহ আর্থিক প্রণোদনা তহবিল হতে দেওয়া ঋণের সময়কাল হবে দুই বছর। গ্রেস পিরিয়ড অতিবাহিত হওয়ার পর সমান ১৮টি মাসিক কিস্তিতে ঋণের অর্থ ব্যাংকে পরিশোধ করতে হবে। যেসব কারখানা শ্রমিকদের বেতন-ভাতা নিয়মিত পরিশোধ করছেন, তারাই এই তহবিলের অর্থ পাওয়ার জন্য বিবেচিত হবে।
‘যেসব শিল্পপ্রতিষ্ঠান মোট উৎপাদনের ন্যূনতম ৮০ শতাংশ রপ্তানি করে তাদের এ টাকা দেয়া হবে বলা নীতিমালায় বলা হয়েছে। আর রপ্তানিমুখী শিল্পপ্রতিষ্ঠান প্রমাণের জন্য বাণিজ্য সংগঠনের প্রত্যয়নপত্র লাগবে।’
‘বেতনের অর্থ শ্রমিক-কর্মচারীর ব্যাংক হিসাবে লেনদেন করতে হবে। কোনো প্রকার নগদ লেনদেন করা যাবে না। যেসব প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের ব্যাংক হিসাব নেই তাদের মালিক নিজ উদ্যোগে ব্যাংক হিসাব খুলে দেবেন। এসব হিসাবে কোনো চার্জ আরোপ করতে পারবে না।’
প্রসঙ্গত, করোনাভাইরাসের কারণে সারা বিশ্ব স্থবির হয়ে পড়েছে। প্রাণঘাতী এই ভাইরাসের প্রভাব পড়েছে বাংলাদেশের পোশাক খাতেও। একের পর এক ক্রয়াদেশ বাতিল হওয়ায় এ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ পোশাক উৎপাদন ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সভাপতি রুবানা হক। তিনি জানান, করোনার কারণে পোশাক খাতে ভয়াবহ বিপর্যয় নেমে এসেছে। বায়ারা অর্ডার ক্যানসেল করে দিচ্ছে।
(ঢাকাটাইমস/০২এপ্রিল/জেআর/জেবি)