লোকলজ্জায় নিশ্চুপ অভাবীদের জন্য এসপি জেরিনের অনন‌্য উদ্যোগ

আলাউদ্দিন আলিফ, বান্দরবান থে‌কে
 | প্রকাশিত : ০৩ এপ্রিল ২০২০, ০৯:২৬

করোনার প্রাদুর্ভাবে জনজীবন থমকে আছে। অর্থনীতির চাকার অবস্থাও নাজুক। যতদিন যাচ্ছে তত যেন অভাব মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে। সেতুবন্ধন হচ্ছে দাতা এবং গ্রহীতাদের মধ্যে। খাদ্যসামগ্রী বিতরণে দাতাদের প্রশংসার কথাও যেমন শোনা যাচ্ছে তেমনি রয়েছে লোক দেখানো দানের অভিযোগ। তবুও মানুষ মানুষের পাশে দাঁড়াচ্ছে এটাই বড় কথা। এ না হয় যারা দিচ্ছে এবং যারা চাচ্ছে তাদের হিসাব। কিন্তু যাদের নেই আবার লোকলজ্জার ভয়ে হাত পাততেও পারছে না তাদের কি হবে?

পার্বত্য জেলা বান্দরবানে পুলিশ সুপার জেরিন নিয়েছেন এক প্রশংসনীয় উদ্যোগ।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ‘এসপি বান্দরবান’ নামের আইডি থেকে এমন মানুষদের গোপনে সহযোগিতার হাত বাড়িয়েছেন তিনি।

বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টায় এই পোস্ট দেয়া হয়। ইতোমধ্যে জেলার সাত উপজেলার তিন উপজেলা লামা, আলীকদম ও নাইক্ষ্যংছড়ি লকডাউন ষোষণা করেছে জেলা প্রশাসন। ঘরে বন্দি এমন প্রতিকূল পরিস্থিতিতে লোকলজ্জা কিংবা আত্মসম্মানহানির ভয়ে যারা লাইনে দাঁড়িয়ে কিংবা অন্য কোন উপায়ে প্রশাসন কিংবা জনপ্রতিনিধিদের কাছ থেকে সাহায্য গ্রহণ করতে পারছেন না তাদের জন্য গোপনে খাবার তুলে দিতে চাচ্ছেন বান্দরবানের পুলিশ সুপার জেরিন আক্তার।

‘এসপি বান্দরবান’ থেকে ফেসবুকে দেয়া পোস্টটিতে বলা হয়, চলমান পরিস্থিতিতে যাদের ঘরে খাবার নেই, লোকলজ্জা কিংবা ছবিতে ফ্রেম বন্দি হওয়ার ভয়ে সামনে আসছেন না, চেয়ে নিতে ও পারছেন না, ডাউন পরিস্থিতিতে আয় রোজগার করতে পারছেন না, জনপ্রতিনিধি বা দানশীল ব্যক্তির নিকট থেকে সহযোগিতা গ্রহণ করতে পারছেন না - এ রকম কেউ থাকলে নিম্ন লিখিত হটলাইন নাম্বার সমূহে যোগাযোগ করার জন্য অনুরোধ করছি।

প্রিয় বান্দরবানবাসী বলে পোস্টটিতে সম্বোধন করা হয়। সহযোগিতা নেয়ার জন্য এই পোস্টে ৮টি যোগাযোগের নম্বর দেয়া হয়েছে। বান্দরবান সদর, রোয়াংছড়ি, আলীকদম, নাইক্ষ্যংছড়ি, লামা, রুমা, থানচি থানা্সহ পুলিশ কন্ট্রোল রুমের যোগাযোগের নাম্বার এই পোস্টে উল্লেখ আছে।

এই পোস্টে আরো বলা হয়, কথা দিচ্ছি ছবিতো দুরের কথা আপনার পরিবারও জানবে না। যে সকল ব্যাগে বর্তমান খাদ্যসামগ্রী বিতরণ হচ্ছে সে রকম ব্যাগেও দিবো না। আপনার পরিবার মনে করবে বাজার করে আসলেন। ঘরে থাকুন, সুস্থ থাকুন।

এ প্রসঙ্গে পুলিশ সুপার জেরিন জেরিন আখতার ঢাকা টাইমসকে বলেন, যে সকল মানুষ লোকলজ্জার ভয়ে সরকারি কিংবা অন্যান্য ত্রাণ নিতে পারছেন না, তারা নির্ভয়ে আমাদের হটলাইনে যোগাযোগ করুক। আমরা তাদের সহযোগিতা ঘরে পৌঁছে দিব। প্রতিটি দুর্যোগে এই শ্রেণীর মানুষ সীমাহীন কষ্টে ভোগেন। তাদের কষ্ট লাঘব করার জন্য সাহায্যের হাত প্রসারিত করাও কঠিন। কারণ তাদের সহজে শণাক্ত করা যায় না। তাদের কষ্ট লাঘব করতে আমাদের এই ক্ষুদ্র প্রচেষ্টা।

তিনি আরো বলেন, আমরা নিজস্ব অর্থায়নে এই কাজ শুরু করেছি। আমাদের এই প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে। কোন সহৃদয়বান ব্যক্তি যদি আমাদের সাথে শরীক হতে চান, আমাদের দরজা তার জন্যও উন্মুক্ত। দাতা চাইলে তার পরিচয় আমরা গোপন রাখবো।

প্রসঙ্গত, খাদ্যসামগ্রী পৌঁছে দিতে ২৪ ঘণ্টা এই হটলাইন নাম্বারগুলো চালু থাকবে।

(ঢাকাটাইমস/৩এপ্রিল/এ‌জেড)

সংবাদটি শেয়ার করুন

ফিচার বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :