লকডাউনে যেভা‌বে ঘর-অ‌ফিস সামলা‌বেন

ফিচার ডেস্ক, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ০৩ এপ্রিল ২০২০, ১৫:২২ | প্রকাশিত : ০৩ এপ্রিল ২০২০, ১৫:০৭

প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের ভয়ে লকডাউনে সারা বিশ্বের মানুষ আজ গৃহবন্দি জীবনযাপন করছে। সারা বিশ্ব বিচ্ছিন্ন। কোলাহলমুখর শহরগুলো কেবলই শূন্যতা। জনমাবনহীন ঠাঁয় দাঁড়িয়ে আছে শহরগুলো। চারিদিকে শুধু নীরব নিস্তব্ধতার নিনাদ। কর্মমুখর মানুষগুলোর জীবনযাপন বদলে গেছে। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া লকডাউনে তৈরি হয়েছে নতুন বিধি-নিষেধ। নিরবতা। ভোর হতেই যে রাজধানী জেগে উঠে কোলাহলে, সেই রাজধানী এখন কোলাহলমুক্ত। নেই মানুষের সমাগম। পুরো রাজধানী নিরব-নিস্তব্ধ। এই চিত্র শুধু রাজধানী নয়, গোটা বাংলাদেশ। এ যেন লকডাউন।

লকডাউনের সময় তারাও সময় ম্যানেজ করতে হিমশিম খাচ্ছেন। এই সময় গৃহকাজের সহায়কও গৃহবন্দি। তাই বাড়ির কাজ থেকে ‘ওয়ার্ক ফ্রম হোম’ করতে গিয়ে নাজেহাল হতে হচ্ছে নানা ভাবে। কীভাবে ঘর সামলে নিজের জন্যও কিছুটা সময় বের করতে পারেন।

প্রথম কাজ বাড়ির সকলকে কাজ ভাগ করে দেওয়া। পরিবারের ক্ষুদ্রতম সদস্য থেকে বয়স্ক সদস্য— প্রত্যেককে তাঁদের সামর্থ অনুযায়ী কাজ দিন।

সকালে চা তৈরির আগে একবার বারান্দা বা ছাদে গাছপালা-পাখি দেখে এলে মন ভাল থাকবে।

চা পানের আগে গরম পানিতে লেবু মিশিয়ে পান করুন। কিংবা বাড়িতে থাকলে আমলকি, হরতকি, বহেড়া অর্থাৎ ত্রিফলা ভিজিয়ে খালি পেটে খান। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়বে। না থাকলে শুধু গরম জলেই কাজ চালান। এই অজুহাতে বাইরে বেরনোর দরকার নেই।

চা বসিয়ে একটু স্ট্রেচিং এক্সারসাইজ করে নিন। চেষ্টা করুন বাড়ির সবাই একসঙ্গে বসে চা পান করার। সময় ও গ্যাস দুইই বাঁচবে, একসঙ্গে আড্ডা দেওয়াও হবে।

চা পানের শেষে সঙ্গে সঙ্গে চায়ের বাসন ধুয়ে নিলে ভাল হয়।

চা পান শেষে খবরের কাগজে বা কোনও খবরের ওয়েবসাইটে চোখ বুলিয়ে ঘর পরিষ্কার করে নিন। ফিনাইল দিয়ে পানি বদলে ঘর মুছে নেওয়া দরকার। দিনে অন্তত বার দুয়েক ঘর মুছতে হবে।

নাশতা ও চা বানানোর আগে এক বার হাত ধুয়ে নিন। এমন নাশতা বানান যা চটজলদি হবে আবার পুষ্টিকরও। চিড়ে, মুড়ি, ওটস, পাউরুটি, সুজি দিয়ে নাশতা সারুন। সঙ্গে কলা বা আপেল— যে কোনও একটা ফল থাকা দরকার। ফল না পেলে দুধ বা ছানা খেতে হবে।

নাশতা সেরেও ভাল করে সাবান দিয়ে হাত ধোয়ার কথা ভুললে চলবে না।

নাশতার শেষে বাচ্চাকে পড়তে বসিয়ে ঘরদোর গুছিয়ে নিন। তবে একা হাতে সব সামলানো সম্ভব নয়, বাড়ির অন্যদেরও দায়িত্ব নিতে অনুরোধ করুন।

অফিস বা স্কুলের তাড়া নেই, তাই কাজের ফাঁকে ১০–১৫ মিনিট আসন ও ব্যায়াম করে নিতে পারলে ভাল হয়।

জানালা খোলা রাখবেন, ঘরে যেন পর্যাপ্ত পরিমাণে আলো-বাতাস আসে সে বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে।

পরিচ্ছন্নতার ব্যাপারেও নজর রাখতে হবে। বাড়িতে বাচ্চা বা বয়স্ক মানুষ থাকলে তাঁদের পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখতে সাহায্য করুন। তাঁরাও যেন ব্যায়াম বা শরীরচর্চা করেন।

দুপুরের রান্নাও সংক্ষেপে সারতে হবে। ডাল, সব্জি, মাছ বা ডিম যা আছে, তাই দিয়ে রান্না সারুন।

প্রতি দিন বাজার না গিয়ে চেষ্টা করুন সপ্তাহে দু’দিন বাজার যাওয়ার। সব্জি সবই গরম জলে ডুবিয়ে নেওয়া দরকার। ভাইরাসের হাত থেকে বাঁচার এটাই একমাত্র উপায়।

ফ্রিজ, টেব্ল, চেয়ার ও অন্যান্য আসবাব ঝাড়পোঁছ করার ভার দিন বাচ্চাকে। ওরা বেশ দায়িত্ব নিয়েই কাজ করবে।

বয়ঃজ্যেষ্ঠ মানুষ থাকলে তাকে বলুন বাচ্চাকে গল্প বলতে, সব্জি কেটেও সাহায্য করতে পারেন।

গৃহকাজেও হাত লাগান সমান তালে।

আঁচ কমিয়ে রান্না বসিয়ে বা রান্না শুরুর আগে অফিসের কিছু কাজ সেরে রাখুন।

সকলে একসঙ্গে দুপুরের খাওয়া সারুন।

বাচ্চাকে দুপুরে গল্পের বই পড়তে বা ছবি আঁকতে উৎসাহ দিন। ওর যে কাজ ভাল লাগে তার চর্চাই করুক এখন।

এরই মধ্যে নিজের অফিসের কাজ সেরে নিন।

এর মধ্যে দুপুরের খাবারের বাসন মাজতে হবে, দু’জনে মিলে হাতে হাতে কাজ করে নিলে সুবিধে হয়। বরং অফিসের কাজ সেরে সন্ধের দিকে মেজে নিন এগুলো।

বাসন মেজে নিজেকে একটু সময় দিন। পছন্দের বই পড়ুন বা গান শুনুন। অল্প রূপচর্চাও সেরে নিতে পারেন। টিভিতে পছন্দের কোনও শো থাকলে বাড়ির সকলকে নিয়ে তা দেখুন। সন্তানের পড়াশোনার মাঝেও একটু বিরতিও হবে, তা তা মিটলেই তাকে ফের পড়তে বসান।

এ বার নিজেও রাতের রান্নার আয়োজন করুন বা আয়োজনে সাহায্য করুন। রান্না শেষ হতে হতে সন্তানের পড়াশোনাও শেষ করান ও ওকে নিয়ে সবাই মিলে একটু গল্পগাছা করুন।

একসঙ্গে রাতের খাবার খান ও ঘুমোতে যান।

লকডাউনে ঘরের থাকার ব্যবস্থাই প্রাণঘাতী এই ভাইরাসের সংক্রমণ কমানো এবং পরবর্তীতে যাতে এটি আবার না ছড়াতে পারে- তার সবচেয়ে ভালো উপায়।

(ঢাকাটাইমস/৩এপ্রিল/আরজেড/এজেড)

সংবাদটি শেয়ার করুন

ফিচার বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :