‘করোনাজয়ীরা সবাই এখন সুস্থ-স্বাভাবিক জীবনে’

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ০৩ এপ্রিল ২০২০, ১৬:১৮

দেশে এখন পর্যন্ত যারা করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন তাদের মধ্যে ২৬ জন সুস্থ হয়েছেন। তারা সবাই এখন সুস্থ-স্বাভাবিক জীবনযাপন করছেন বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ। করোনার কারণে আক্রান্তদের শরীরে কোনো প্রভাব পড়েনি বলেও জানান তিনি।

শুক্রবার দুপুরে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে করোনা পরিস্থিতি নিয়ে অনলাইন সংবাদ ব্রিফিংয়ে তিনি এসব কথা বলেন।

করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পর যারা সুস্থ হয়ে ফিরে যাচ্ছেন তারা কি পুরোপুরি সুস্থ হয়ে ফিরে যাচ্ছেন নাকি তাদের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ নষ্ট হচ্ছে?— এমন প্রশ্নের জবাবে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বলেন, ‘এখন পর্যন্ত আমাদের যে জ্ঞান, শুধু আমাদের না, সারা পৃথিবীর যে জ্ঞান (কোভিড-১৯ সংক্রান্ত) সেই জ্ঞান অনুযায়ী তিনি সম্পূর্ণ সুস্থ। তিনি স্বাভাবিক মানুষ।’

ডা.আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা পরামর্শ দিয়েছিল যাতে পরীক্ষার সংখ্যা বাড়িয়ে দেওয়া হয়। যাদের পরীক্ষা প্রয়োজন, তাদের যেন দ্রুততম সময়ে আমরা পরীক্ষা করতে পারি। সারা বাংলাদেশে বিভিন্ন স্থানেই আমরা আমাদের ল্যাবরেটরি সম্প্রসারণ করছি এবং এই সম্প্রসারণ প্রক্রিয়া অব্যাহত রয়েছে। ঢাকার মধ্যে নয়টি পিসিআর ল্যাবরেটরি, তারা পরীক্ষার জন্য সম্পন্ন প্রস্তুত এবং পরীক্ষার কাজ শুরু করেছে। ঢাকার বাইরে আরও পাঁচটি ল্যাবেরেটরি ইতিমধ্যে পরীক্ষার কাজ শুরু করেছে। আমরা এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে প্রত্যেকটি বিভাগে পিসিআর মেশিন বসানো এবং সেগুলো দিয়ে পরীক্ষার কাজ শুরু করবো। ক্রমান্বয়ে আমরা মনে করি, এপ্রিলের মধ্যে অথবা তারও আগেই অন্তত ২৮টি প্রতিষ্ঠানে পিসিআর ল্যাবরেটরি স্থাপন করা হবে। মানে সর্বমোট ২৮টি প্রতিষ্ঠানে পিসিআর ল্যাব স্থাপন করা হবে এবং সেগুলোতে পরীক্ষার কাজ শুরু করা হবে।’

স্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বলেন, ‘আমরা সাধারণত আপনাদের যে সর্বশেষ পরিস্থিতি জানাতে চাই, সেটা আমরা চেষ্টা করছি প্রথম দিন সকাল ৮টা থেকে পরদিন সকাল ৮টার মধ্যে (পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে)। কাজেই আমরা বাংলাদেশের সব জেলা থেকে তথ্য এখন পর্যন্ত সংগ্রহ করতে পারি নাই। এখন পর্যন্ত ২০-২২টি জেলার তথ্য আমাদের হাতে নাই। আমরা যে জেলাগুলোর তথ্য পেয়েছি, ৫১৩টি নমুনা সংগ্রহের তথ্য আমাদের কাছে এসেছে। ৫১৩টি নমুনার মধ্যে ১২৬টি আইইসিডিআর করেছে। বাকি জেলাগুলোতে অন্যান্য প্রতিষ্ঠান, উপজেলা-জেলা থেকে অথবা অন্যান্য হাসপাতাল থেকে ৩৮৭টি নমুনা সগ্রহের তথ্য আমরা পেয়েছি। সকাল ৮টার পর আরও কিছু ফোন আমাদের কাছে এসেছে। এগুলো হালনাগাদ হলে এ সংখ্যাটা আরও বেড়ে যাবে।’

মহাপরিচালক বলেন,‘আপনারা জানেন এখন পর্যন্ত আমাদের এখানে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত, মানে যাদের মধ্যে ভাইরাস পাওয়া গেছে, তাদের সংখ্যা ৬১। গত ২৪ ঘণ্টায় এর মধ্যে যুক্ত হয়েছে পাঁচটি। আইডিসিআরের বাইরে যে ল্যাবরেটরিগুলো সেগুলো থেকে আমরা তিনটি পজিটিভ পেয়েছি। সেগুলোকে পজিটিভ মনে করে যে সাবধানতা অবলম্বন করা দরকার, তাদের আইসোলেশন, তাদের কন্টাক্ট ট্রেসিং, এ কাজগুলো আমরা শুরু করেছি। কিন্তু, যেহেতু নতুন ল্যাবরেটরি, সেগুলো হয়তো আমরা আরও একটু যাচাই-বাছাই করবো।’

স্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বলেন, ‘এখন আমাদের পর্যবেক্ষণে অথবা চিকিৎসাধীন রয়েছেন ২৯ জন। তাদের মধ্যে হাসপাতালে আছেন ২২ জন এবং নিজেদের বাড়িতে পূর্ণ পর্যবেক্ষণের মধ্যে আছেন সাতজন। আমরা এখন পর্যন্ত চার লাখ ২৮ হজার ৬০টি পিপিই সংগ্রহ করেছি। এর মধ্যে তিন লাখ ৬৬ হাজার ৬৫০টি পিপিই দেশের বিভিন্ন স্বাস্থ্যপ্রতিষ্ঠানে আমরা বিতরণ করেছি। আমাদের কাছে এই মুহূর্তে মজুদ আছে ৬৫ হাজার ৪১০টি পিপিই। আমরা আগের মতোই যেখানে যখন পিপিই প্রয়োজন বিতরণ এবং পিপিই সংগ্রহ ব্যবস্থা অব্যাহত রেখেছি।’

তিনি আরও বলেন,‘আপনাদের ইতিমধ্যে বলেছি, ঢাকায় নয়টি প্রতিষ্ঠানে এবং ঢাকার বাইরে পাঁচটি প্রতিষ্ঠানে এখন পরীক্ষার কাজ শুরু হয়েছে। প্রত্যেকটি প্রতিষ্ঠান যেখানে পরীক্ষার কাজ শুরু হয়েছে সেখানে পিসিআর কিট সরবরাহ করেনি। এ মুহূর্তে আমাদের হাতে ৭১ হাজার কিট মজুদ রয়েছে। নতুন আরও পিসিআর কিট আসছে। আমরা মনে করছি, অব্যাহতভাবে পিসিআর পরীক্ষা সংখ্যা বাড়াবো। অতিরিক্ত পিসিআর পরীক্ষার জন্য যে কিট প্রয়োজন হবে, সেগুলো সরবরাহে কোনো অসুবিধা হবে না বলে আমরা নিশ্চিত রয়েছি।'

(ঢাকাটাইমস/০৩এপ্রিল/টিএটি/জেবি)

সংবাদটি শেয়ার করুন

জাতীয় বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :