অনলাইনে জমজমাট করোনা সুরক্ষা পণ্যের ব্যবসা

প্রকাশ | ০৩ এপ্রিল ২০২০, ১৮:২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

করোনাভাইরাসের প্রকোপের মধ্যে এর থেকে সুরক্ষা পণ্যের চাহিদা বেড়েছে কয়েক গুণ। সাধারণ ছুটিতে পুরো দেশ প্রায় অচল থাকায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও ই-কমার্স সাইটগুলোতে জমে উঠেছে মাস্ক, হ্যান্ড হ্যানিটাইজার এবং পার্সোনাল প্রটেশকন ইকুইপমেন্টের (পিপিই) ব্যবসা। বিভিন্ন দামে বিক্রি হচ্ছে এসব পণ্য। এসবের মান নিয়ে প্রশ্ন থাকলেও প্রয়োজন এবং বাস্তবতার কারণে অনেকেই অনলাইন কেনাকাটায় নির্ভরশীল হয়ে পড়েছেন।

করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) এখনো পর্যন্ত কোনো চিকিৎসা আবিষ্কার না হওয়ায় সতর্কতাকেই সবচেয়ে বেশি প্রাধান্য দেয়া হচ্ছে। আর রক্ষাকবচ হিসেবে ধরা হচ্ছে মাস্ক-হ্যান্ড স্যানিটাইজারকে। রোগীর কাছে যারা থাকবেন তাদের জন্য পিপিই।

গত মাসের শুরুতে দেশে যখন করোনো শনাক্ত হয় তখন আকাশচুম্বী দামে বিক্রি হয়েছে এসব পণ্য। ২০ টাকার মাস্ক বিক্রি হতে দেখা গেছে ২০০ টাকা পর্যন্ত। হ্যান্ড স্যানিটাইজার এবং হ্যাক্সিসলও বিক্রি হয়েছে তিন থেকে চারগুণ দামে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযান এবং সম্প্রতি বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান এসব পণ্যের উৎপাদন শুরু করায় কমে এসেছে দাম।

কিছুদিন আগেও বাজারে পিপিইর দেখা মেলেনি। দেশের ৯০ হাজার চিকিৎসক, নার্স এবং হাসপাতাল সংশ্লিষ্টদের জন্য অত্যাবশ্যকীয় এই পোশাকটি আমদানি করা হয় চীন থেকে। যদিও এখনো রয়েছে সংকট। এমন অবস্থায় দেশে শুরু হয়েছে উৎপাদন। এখন চাইলেও কেউ পিপিই কিনতে পারছে।

চিকিৎসক, নার্স ও হাসপাতাল সংশ্লিষ্টদের ছাড়া অন্যান্য পেশাজীবীরাও অনেকেই এখন পিপিই ব্যবহার করছেন। এমনকি করোনাভাইরাস আতঙ্কে পিপিই ব্যবহার করতে দেখা গেছে সাধারণ মানুষকেও। আর এই চাহিদার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে দেশের বেশ কিছু ছোট-মাঝারি গার্মেন্টস পিপিই তৈরি শুরু করেছে। সাধারণ ছুটির কারণে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় তা বিক্রি করা হচ্ছে অনলাইনে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে চোখে পড়ছে মাস্ক, হ্যান্ড স্যানিটাইজার ও পিপির পসরা। কোনো কোনো প্রতিষ্ঠান একাই এই পণ্যগুলো বিক্রি করছে। কেউবা একটি আইটেম বিক্রি করছে। এমন বেশ কিছু প্রতিষ্ঠানের ফেসবুক পেইজ ঘুরে দেখা যায়, দেশে তৈরি অতি নিম্নমানের মাস্ক বিক্রি হচ্ছে ২০ থেকে ৫০ টাকা পর্যন্ত। একটু উন্নত মানের মাস্ক নিতে ক্রেতাদের গুণতে হচ্ছে দেড় থেকে দু’শ টাকা। সঙ্গে রয়েছে ডেলিভারি চার্জ। হ্যান্ড স্যানিটাইজারের ক্ষেত্রে ৫০ মিলিলিটারের প্রতি বোতল বিক্রি হচ্ছে একশ থেকে ১২০ টাকায়। একত্রে চার থেকে পাঁচটি নিলে দাম পড়ছে প্রতিবোতল ৮০ টাকায়।

পিপিইর একটি নির্দিষ্ট মান রয়েছে। তবে সেটি অনুসরণ না করেই কেবল পানি প্রতিরোধক বিভিন্ন কাপড় দিয়ে তৈরি করা হচ্ছে পিপিই। ‘রবি শপ’ নামের একটি ফেসবুক পেইজে দেখা যায়, ৮০ জিএসএম’র পানি প্রতিরোধক কাপড় দিয়ে ফ্রি সাইজে তৈরিকৃত পিপিই বিক্রি করা হচ্ছে। যার দাম নেয়া হচ্ছে এক হাজার টাকা। প্রতিষ্ঠানটির বিক্রি করা পিপিই করোনাভাইরাস প্রতিরোধ কি না রবি শপের ফেসবুকে পেইজে এমন প্রশ্ন করা হলে উত্তরে তারা বলেন, ‘হ্যাঁ, পানি ঢুকবে না, ভাইরাস ঢুকবে না, ময়লা ঢুকবে না, বারবার ওয়াশ করে পরতে পারবেন।‘

৬০ জিএসএম এর কাপড় দিয়ে পিপিই তৈরি করে বিক্রি করছে রুমে ফ্যাশন নামের একটি গার্মেন্টস। দাম নেয়া হচ্ছে ৭৫০ থেকে এক হাজার ২৫০ টাকা। ৪০ জিএসএম এর কাপড়ে তৈরি পিপিই বিক্রি করতে দেখা গেছে সেফটেক নামের অপর একটি প্রতিষ্ঠানকে। একটি পিপিই, গ্লোভস, সার্জিক্যাল মাস্ক ও সু কভারসহ বিক্রি করছে ৭৫০ থেকে এক হাজার ২৫০ টাকায়।

(ঢাকাটাইমস/০৩এপ্রিল/কারই/জেবি)